হাওড়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রের অকাল মৃত্যু এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। শুক্রবার বিকেলে পুলের কাছে উদ্ধার হয় ওই যুবকের দেহ, মাথায় রক্তের ছোপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছে। কলেজ পড়ুয়ার আচরণগত কোনো পরিবর্তন বা সমস্যা ছিল কিনা, সেই দিকেও খোঁজ চলছে। পরিবার ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে তারা চেষ্টা করছে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে।
কলেজে পড়ার চলছিল স্বাভাবিক
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত ছাত্রের পড়াশোনা এবং কলেজ জীবন বেশ স্বাভাবিক ছিল। তার কোনও শ্লেষ বা বিবাদ চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশ্ববর্তী ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, সে মিতভাষী এবং নিয়মিত ক্লাসে আসত। সুতরাং হঠাৎ এমন মৃত্যু এলাকায় নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। পুলের কাছে দেহ উদ্ধারের জায়গা ও সময়কে কেন্দ্র করে ঘটনার প্রকৃত চিত্র পরিষ্কার করতে পুলিশের তৎপরতা চলছে।
মৃতদেহ উদ্ধারের সময়পথ ও পরিস্থিতি
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার দিকে পুলের পাশে দাঁড়িয়ে কিছু যুবকের আনাগোনা দেখতে পাওয়া গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেহ উদ্ধার করা হয়, মাথার অংশ থেকে রক্ত ঝরছে। পাশের পুল এলাকায় নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এগুলো পর্যালোচনা করে ঘটনার সূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলের কাছাকাছি কোনও ঝগড়া বা ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পরিবারের স্তব্ধতা ও শোকের ছায়া
পরিবারের সদস্যরা এখনও শোকগ্রস্ত ও স্তম্ভিত। বাবা-মা জানান, ছেলে পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল এবং কখনো তাদের কাছে এমন কোনো অসুস্থতা বা সমস্যা জানায়নি। দুর্ঘটনার কারণ বুঝতে না পারায় তারা খুবই উদ্বিগ্ন। প্রতিবেশীরা বলছেন, মৃত ছাত্রকে এলাকার সবার ভালোবাসা ছিল। এখন তারা বিচারের আশায় অপেক্ষায়। পরিবার পুলিশের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছে যাতে সত্য উদঘাটন হয়।
পুলিশের তদন্তের ব্যাপ্তি বাড়ছে
পুলিশ ঘটনার গভীরে যাওয়ার জন্য কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ, ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ফোন চেক করছে। আশপাশের লোকজনের থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, ধীরে ধীরে সব তথ্য হাতের কাছে আসছে, দ্রুত রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এখন কলেজ পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী তা জানা।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও ছাত্রজীবনের প্রশ্ন
এমন অকাল মৃত্যু নিয়ে স্থানীয় যুব সমাজ ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও শোক এবং উদ্বেগ বিরাজ করছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন জায়গায় প্রশ্ন তুলছেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে? স্কুল-কলেজে শিক্ষার পাশাপাশি মানসিক সমর্থন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন বলেও মনে করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
তদন্ত শেষে আসবে প্রকৃত সত্য
পরবর্তী কয়েকদিনে পুলিশ তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আরও তথ্য প্রকাশ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনও এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষও প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে এবং পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যে কোনওভাবে, এই মর্মান্তিক মৃত্যু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মানসিক সুস্থতার প্রয়োজনীয়তা আবারও সকলের সামনে তুলে ধরেছে।