২২ অগস্টের মধ্যে দিতে হবে বিস্তারিত তথ্য
উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বকেয়া সংক্রান্ত মামলায় আদালত অবমাননার অভিযোগে কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে— ২২ অগস্টের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে হলফনামা জমা দিতে হবে। সেই নথিতে বর্তমান শূন্যপদের সঠিক সংখ্যা এবং ওয়েটিং লিস্টে থাকা ১,২৪১ জন প্রার্থীর নিয়োগের বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা থাকতে হবে।
মামলাকারীর আইনজীবীকে দিতে হবে নথি
আদালত শুধু তথ্য চায়নি, বরং সেই নথির কপি মামলাকারীর আইনজীবীর কাছেও পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে মামলার উভয় পক্ষই সমানভাবে তথ্যপ্রমাণ হাতে পাবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় থাকবে বলে আশা।
এসএসসি–র সাফাই, আট দফায় হয়েছে কাউন্সেলিং
স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশের পর থেকে ইতিমধ্যেই আট দফায় কাউন্সেলিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিয়োগের সুপারিশ প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে এবং তালিকাভুক্ত বহু প্রার্থী ইতিমধ্যেই নিয়োগপত্র পেয়েছেন। তবে এখনো ১,২৪১ জন প্রার্থী অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন।
৫,৪০১ শূন্যপদ থাকলেও মিলছে না যোগসূত্র
বর্তমানে মোট ৫,৪০১টি শূন্যপদ রয়েছে বলে কমিশন জানিয়েছে। কিন্তু বিষয়, মাধ্যম এবং লিঙ্গ–ভিত্তিক যোগসূত্রের অভাবে অবশিষ্ট প্রার্থীদের নিয়োগ সম্ভব হয়নি। এই সমস্যার সমাধানে শূন্যপদ রূপান্তরের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
রাজ্যের সক্রিয় ভূমিকা জরুরি— আদালতের পর্যবেক্ষণ
হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছে যে এই অচলাবস্থা দূর করতে এবং বিরোধের নিষ্পত্তি করতে রাজ্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মামলায় স্কুলশিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিব এবং স্কুলশিক্ষা কমিশনারকে পক্ষভুক্ত করা হয়েছে।
সমন্বয় রেখে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ
আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, এসএসসি এবং রাজ্য সরকারকে সমন্বয় বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। দীর্ঘসূত্রিতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে বেঞ্চের মন্তব্য।
৪ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি
এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর। আদালত আশা করছে, তার আগেই কমিশন ও রাজ্য সরকার সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করবে। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা, ফলে সময় ফুরোচ্ছে দ্রুত।
চাকরিপ্রার্থীদের দৃষ্টি এখন হাইকোর্টের দিকে
হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর অপেক্ষমাণ ১,২৪১ জন প্রার্থীর মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হলেও শঙ্কা রয়েই গেছে। কারণ প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নিয়োগপত্র হাতে পাওয়া যাবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত। ফলে তাদের চোখ এখন আদালতের পরবর্তী নির্দেশের দিকেই।