SIR বিতর্কে কমিশনের সাফাই কারণ ছাড়া ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা হবে না

SIR বিতর্কে কমিশনের সাফাই কারণ ছাড়া ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা হবে না

সুপ্রিম কোর্টে কমিশনের হলফনামা

বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) নিয়ে তীব্র বিতর্কের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দাখিল করেছে। কমিশন জানিয়েছে— কোনও যোগ্য ভোটারের নাম নোটিশ, শুনানি ও যুক্তিসঙ্গত আদেশ ছাড়া তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে না। চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় সমস্ত যোগ্য ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ভুলভাবে নাম মুছে ফেলা রোধে কড়া নির্দেশ

কমিশনের দাবি, SIR প্রক্রিয়ার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে ভোটারের নাম কেটে দেওয়া রোধে ইতিমধ্যেই ‘কঠোর নির্দেশ’ জারি হয়েছে। প্রতিটি পদক্ষেপে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারি চলছে।

ADR-এর অভিযোগে নড়েচড়ে বসল কমিশন

এই মামলার আবেদনকারী অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR) অভিযোগ করেছে— বিহারে প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম ভুলভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং সেই তালিকা স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এর প্রেক্ষিতে ৬ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দেয়। আগামী ১৩ অগাস্ট এই মামলার শুনানি হবে।

প্রথম ধাপ সম্পন্ন, খসড়া তালিকা প্রকাশ

কমিশন জানিয়েছে, SIR-এর প্রথম ধাপ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। ১ অগাস্ট ২০২৫ তারিখে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বুথ স্তরের আধিকারিকরা (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারের তথ্য যাচাই ও ফর্ম সংগ্রহের পর এই ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। মোট ৭.৮৯ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭.২৪ কোটি মানুষ নথি জমা দিয়ে নিজেদের নাম নিশ্চিত করেছেন।বৃহৎ প্রশাসনিক কাঠামো কাজেএই প্রক্রিয়ায় ৩৮ জন জেলা নির্বাচন আধিকারিক, ২৪৩ জন নির্বাচন রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা, ৭৭,৮৯৫ জন BLO, ২.৪৫ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক এবং ১.৬০ লক্ষ বুথ স্তরের এজেন্ট সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। নিয়মিত রাজনৈতিক দলগুলিকে বাদ পড়া ভোটারদের তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে, যাতে আপত্তি জানানো সম্ভব হয়।

পরিযায়ী শ্রমিক থেকে প্রবীণ— সবার জন্য উদ্যোগ

ভোটার যাচাই প্রক্রিয়ায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ২৪৬টি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। অনলাইন-অফলাইন উভয় ফর্ম জমা দেওয়ার সুবিধা রাখা হয়েছে। শহরাঞ্চলের ভোটারদের জন্য বিশেষ শিবির, যুব ভোটারদের জন্য অগ্রিম রেজিস্ট্রেশন এবং প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ২.৫ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করছেন।দাবি ও আপত্তি জানানোর সময়সীমাকমিশন স্পষ্ট করেছে— কোনও ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার আগে নোটিশ, শুনানি ও যুক্তিসঙ্গত আদেশ বাধ্যতামূলক। দাবি ও আপত্তি ১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে সেগুলি নিষ্পত্তি করা হবে।

দুই ধাপের আপিলের সুযোগ

যে ভোটাররা কমিশনের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হবেন, তারা প্রথমে সংশ্লিষ্ট ERO-এর কাছে এবং পরে প্রধান নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে আপিল করতে পারবেন। প্রতিদিনের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনগণকে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে।চূড়ান্ত তালিকার অপেক্ষায় বিহারএখন সব নজর ১৩ অগাস্টের সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে। কমিশনের দেওয়া আশ্বাস ভোটারদের আস্থা কতটা ফিরিয়ে আনতে পারে, তা দেখা বাকি। বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ পেলে তবেই জানা যাবে, SIR বিতর্ক কতটা মিটল।

Leave a comment