হিমাচলে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয়: ভেসে গেল সেতু, আতঙ্কে গ্রামবাসী

হিমাচলে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয়: ভেসে গেল সেতু, আতঙ্কে গ্রামবাসী

হিমাচল প্রদেশে একটানা ভারী বৃষ্টি আবারও বিপর্যয় ডেকে এনেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাহুল স্পিতি জেলার মায়াড় উপত্যকায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রবল জলের তোড়ে তিনটি সেতু ভেসে যাওয়ায় ছয়টি গ্রামে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

মানালি: হিমাচল প্রদেশে দুর্যোগপূর্ণ বৃষ্টি চলতেই রয়েছে। লাহুল-স্পিতি জেলার মায়াড় উপত্যকায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার কারণে তিনটি সেতু ভেসে গেছে এবং নালার জল বেড়ে যাওয়ায় ছয়টি গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মানুষজন ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন, তবে নালার পাশে থাকা কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে এবং খেতগুলোও জলের তোড়ে ভেসে গেছে। প্রশাসন উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। গত সন্ধ্যায় প্রায় সাতটা নাগাদ গুধর নালা, করপট নালা, চাঙ্গুট নালা, উদগোস নালা এবং টিংরেট নালায় মেঘ ভাঙে। এর ফলে করপট নালা, চাঙ্গুট নালা এবং উদগোস নালার ওপরের সেতুগুলো ভেসে যায়।

সন্ধ্যা সাতটায় বিপর্যয়

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যা প্রায় ৭টার দিকে মায়াড় উপত্যকায় অবস্থিত গুধর নালা, করপট নালা, চাঙ্গুট নালা, উদগোস নালা এবং টিংরেট নালাতে হঠাৎ করে জলস্তর বেড়ে যায়। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে এই নালাগুলোতে প্রবল স্রোত আসে, যার ফলে করপট নালা, চাঙ্গুট নালা এবং উদগোস নালার ওপর নির্মিত সেতুগুলো সম্পূর্ণরূপে ভেসে যায়। একই সাথে, মায়াড় নালার ওপর তৈরি হওয়া বড় সেতুটি বন্যার জলে ডুবে যায়, যার ফলে এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ছয়টি গ্রাম – করপট, চাঙ্গুট, উদগোস, গুধর, টিংরেট এবং আশেপাশের এলাকাগুলোতে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামবাসীরা সারারাত ঘুমাতে পারেননি এবং অনেক পরিবার নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। নালাগুলোর পাশে থাকা বাড়িগুলো আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে অনেক জায়গায় জমির মাটি সম্পূর্ণভাবে ধুয়ে গেছে।

কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি

স্থানীয় কৃষকদের মতে, ভুট্টা এবং সবজির ফসল ভেসে গেছে। অনেক জায়গায় জমির উর্বর মাটি ধুয়ে গেছে, যার ফলে ভবিষ্যতে চাষ করাও কঠিন হয়ে পড়বে। ফসল এবং পরিকাঠামোর এই ক্ষতির কারণে গ্রামবাসীদের জীবন-জীবিকার ওপর গভীর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই, উদয়পুরের মহকুমা অফিস, পূর্ত বিভাগ এবং জল শক্তি বিভাগের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। রাজস্ব বিভাগ এবং প্রশাসনিক দল করপট গ্রামে আটকে পড়া গ্রামবাসীদের কাছে খাদ্যসামগ্রী এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিয়েছে।

পাশাপাশি, সেতু ও রাস্তার ক্ষতির সমীক্ষা শুরু করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অস্থায়ী হাঁটাপথের সেতু এবং জরুরি রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছে।

Leave a comment