বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক, সুরকার এবং অভিনেতা হিমেশ রেশমিয়া আজ তাঁর ৫২তম জন্মদিন পালন করছেন। তাঁর স্বতন্ত্র গান গাওয়ার ধরণ, সুপারহিট গান এবং স্টাইলিশ লুকের জন্য হিমেশ ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের একটি আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন।
Himesh Reshammiya Controversies: বলিউডের বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সুরকার, গায়ক এবং অভিনেতা হিমেশ রেশমিয়া (Himesh Reshammiya) আজ, ২০২৩ সালের ২৩শে জুলাই তাঁর ৫২তম জন্মদিন পালন করছেন। হিমেশ তাঁর কর্মজীবনে যেখানে অনেক সুপারহিট গান দিয়েছেন, তেমনই কিছু বিতর্কেরও তিনি অংশ ছিলেন।
তাঁর বিশেষ গায়কী শৈলী এবং অনবদ্য সঙ্গীত পরিচালনা তাঁকে ইন্ডাস্ট্রিতে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে, তবে সমালোচনা এবং ট্রোলিং তাঁর পিছু ছাড়েনি। এই বিশেষ দিনে আসুন জেনে নেওয়া যাক হিমেশ রেশমিয়ার কর্মজীবনের সেই বড় বাঁকগুলি সম্পর্কে, যা তাঁকে আলোচনার কেন্দ্রে রেখেছিল।
‘আশিক বানায়া আপনে’ থেকে পরিচিতি, বিতর্কের কারণও
২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘আশিক বানায়া আপনে’-র টাইটেল ট্র্যাক হিমেশ রেশমিয়ার কর্মজীবনের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট ছিল। এই গানটি শুধুমাত্র একটি চার্টবাস্টার হিট ছিল না, বরং এটি হিমেশকে একজন গায়ক হিসেবে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিল। গানের হাই-পিচ এবং 'নাক দিয়ে গান গাওয়ার' শৈলী তাঁকে মানুষের মুখে মুখে পরিচিত করে তোলে।
যদিও, তাঁর এই অনন্য গান গাওয়ার শৈলী সোশ্যাল মিডিয়াতে মজা এবং মিমের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সমালোচক এবং সঙ্গীতপ্রেমীরা তাঁর গান গাওয়ার ধরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কিন্তু হিমেশ পিছপা হননি। তিনি একের পর এক ‘ঝলক দিখলা যা’, ‘তেরা সুরুর’, ‘তানহাইয়াঁ’, ‘নাম হ্যায় তেরা’-এর মতো অনেক সুপারহিট গান উপহার দেন এবং তাঁর ফ্যানবেসকে আরও শক্তিশালী করেন।
আশা ভোঁসলের সঙ্গে বিতর্ক: যখন একটি মন্তব্যে ঝড় উঠেছিল
হিমেশ রেশমিয়ার সবচেয়ে বড় বিতর্ক তখন সামনে আসে, যখন তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে আর.ডি. বর্মনও নাক দিয়ে গান গাইতেন, কিন্তু তাঁর সমালোচনা হয়নি। এই মন্তব্য প্রখ্যাত গায়িকা আশা ভোঁসলেকে ক্ষুব্ধ করে। তিনি মিডিয়ার কাছে বলেন, যদি কেউ বলে যে পঞ্চমরা (আর.ডি. বর্মন) নাক দিয়ে গান গাইতেন, তাহলে তাকে চড় মারা উচিত।
এই মন্তব্য সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে। হিমেশ সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বলেন যে তিনি আশা জি এবং পঞ্চম দা-কে সবসময় সম্মান করেন এবং তাঁর বক্তব্য ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়েছে। এই বিতর্কের পর হিমেশ কিছুদিনের জন্য মিডিয়া থেকে দূরে সরে যান, কিন্তু তারপর আরও একটি হিট অ্যালবাম নিয়ে ফিরে আসেন।
সঙ্গীত পরিচালনায় শুরু এবং সুপারহিট অ্যালবাম
হিমেশ ১৯৯৮ সালে সালমান খানের চলচ্চিত্র 'প্যায়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া' দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি সালমানের সঙ্গে 'তেরে নাম', 'বডিগার্ড', 'ম্যায়নে পেয়ার কিউ কিয়া', 'কহিঁ প্যায়ার না হো যায়ে'-এর মতো অনেক হিট ছবিতে কাজ করেন। তাঁর সঙ্গীতের মধ্যে সুরের সঙ্গে কষ্টের একটি বিশেষ ছোঁয়া থাকত, যা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করত।
তিনি এক সময়ে একটানা ৩৬টি ব্যাক-টু-ব্যাক হিট গান দিয়েছিলেন, যা নিজেই একটি রেকর্ড। তাঁর অ্যালবাম 'আপ কা সুরুর'-ও খুব সফল হয়েছিল, যা তাঁকে গায়ক হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করে।
সিনেমায় আত্মপ্রকাশ, কিন্তু অভিনয়ে কামাল দেখাতে পারেননি
২০০৭ সালে হিমেশ 'আপ কা সুরুর' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয়ের জগতে পা রাখেন। এই চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে মোটামুটি ব্যবসা করলেও তাঁর ভক্তদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। এরপর তিনি 'কর্ज़', 'খিলাড়ি ৭৮৬', 'তেরা সুরুর'-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, কিন্তু অভিনয়ে তিনি সঙ্গীতের মতো সাফল্য পাননি।
হিমেশ রেশমিয়া সম্প্রতি তাঁর চলচ্চিত্র 'ব্যাডএস রবিকুমার' নিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন। সিনেমার ট্রেলারে তাঁর সুপারস্টারের মতো এন্ট্রি, কনসার্টের দৃশ্য এবং পুরনো হিট গানের উল্লেখ, ভক্তদের বেশ পছন্দ হয়েছে। একটি সাক্ষাৎকারে হিমেশ তাঁর গান গাওয়ার শৈলী নিয়ে কথা বলার সময় বলেন, "আমার জন্য নাক দিয়ে গান গাওয়া নয়, বরং হাই-পিচে গান গাওয়া ছিল। এটি একজন প্রেমিকের বেদনাপূর্ণ অভিব্যক্তি ছিল।" তাঁর এই মন্তব্য প্রমাণ করে যে তিনি তাঁর শিল্পের প্রতি কতটা আবেগপ্রবণ এবং আত্মবিশ্বাসী।