মানুষের মিনি ব্রেন এখন কম্পিউটার চালাবে: বায়ো-কম্পিউটিংয়ে যুগান্তকারী আবিষ্কার

মানুষের মিনি ব্রেন এখন কম্পিউটার চালাবে: বায়ো-কম্পিউটিংয়ে যুগান্তকারী আবিষ্কার

বিজ্ঞানীরা বায়ো-কম্পিউটিংয়ে একটি নতুন পরীক্ষা করেছেন, যেখানে মানব স্টেম সেল থেকে তৈরি মিনি ব্রেন অর্গ্যানয়েডগুলিকে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে AI-এর মতো শিখতে পারা জীবন্ত কম্পিউটার তৈরি করা হচ্ছে। প্রাথমিক পরীক্ষায়, অর্গ্যানয়েডগুলি কম শক্তি ব্যবহার করে কাজ করতে পারে এবং ভবিষ্যতে কম্পিউটিংয়ের জগতকে বদলে দিতে পারে।

বায়ো-কম্পিউটিং প্রযুক্তি: সুইজারল্যান্ডের ফাইনালস্পার্ক ল্যাবের বিজ্ঞানীরা মানব স্টেম সেল থেকে মিনি ব্রেন অর্গ্যানয়েড তৈরি করে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করেছেন, যা AI-এর মতো শিখতে সক্ষম। এই পরীক্ষাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এর উদ্দেশ্য হলো শক্তি-সাশ্রয়ী জীবন্ত কম্পিউটার তৈরি করা। ডঃ ফ্রেড জর্ডান এবং তাঁর দল বলছেন যে এই প্রযুক্তি ডেটা সেন্টার এবং AI সিস্টেমের সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে পারে। অর্গ্যানয়েডগুলি বৈদ্যুতিক উদ্দীপনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে এবং নিউরো-সায়েন্স ও কম্পিউটিংয়ে নতুন পরীক্ষার পথ খুলে দেবে।

মস্তিষ্ক দিয়ে কম্পিউটার চালানো এখন বাস্তবতা

বিজ্ঞানীরা বায়ো-কম্পিউটিং (Biocomputing) এর দিকে একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। সুইজারল্যান্ডের ফাইনালস্পার্ক ল্যাবের দল মানব স্টেম সেল থেকে মিনি ব্রেন অর্গ্যানয়েড তৈরি করছে, যেগুলিকে ইলেকট্রোডের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রযুক্তির লক্ষ্য হলো এমন মেশিন তৈরি করা, যা AI-এর মতো শিখতে পারবে, কিন্তু ঐতিহ্যবাহী কম্পিউটারের তুলনায় কম শক্তি ব্যবহার করে কাজ করবে।

ডঃ ফ্রেড জর্ডান এবং তাঁর দল বলছেন যে এটি একটি প্রাথমিক পরীক্ষা, তবে ভবিষ্যতে এটি ডেটা সেন্টার এবং AI সিস্টেমের সম্পূর্ণ সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে পারে।

ওয়েটওয়্যার প্রযুক্তি এবং মিনি ব্রেন

ওয়েটওয়্যার (Wetware) নামক এই প্রক্রিয়ায় মানুষের ত্বক থেকে স্টেম সেল নিয়ে নিউরন তৈরি করা হয়। এই নিউরনগুলিকে অর্গ্যানয়েডগুলিতে জন্মানো হয় এবং পরে ইলেকট্রোডের সাথে সংযুক্ত করা হয়, যাতে তারা মিনি কম্পিউটারের মতো কাজ করতে পারে। ডঃ ফ্লোরা ব্রোজি জানান যে এই ছোট নিউরন ক্লাস্টারগুলি সম্পূর্ণ জীবন্ত এবং সাধারণ কম্পিউটার কমান্ডে সাড়া দিতে পারে।

অর্গ্যানয়েডগুলিতে বৈদ্যুতিক উদ্দীপনার মাধ্যমে দেখা হয় যে তারা শেখার এবং প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতা বিকাশ করতে পারে কিনা। ডঃ জর্ডানের মতে, এই নিউরনগুলিকে বিড়ালের ছবি দেখিয়ে চিনতে শেখার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

বৈজ্ঞানিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ

যদিও এই প্রযুক্তি উত্তেজনাপূর্ণ, তবে এতে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অধ্যাপক সাইমন শুলৎজের মতে, মানব মস্তিষ্কে রক্তনালীগুলির মাধ্যমে পুষ্টি পৌঁছায়, কিন্তু অর্গ্যানয়েডগুলিতে এই ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে ফাইনালস্পার্কের মিনি ব্রেনগুলি চার মাস পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে, এবং মারা যাওয়ার ঠিক আগে সেগুলিতে হঠাৎ তীব্র বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ দেখা যায়।

বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি AI এবং নিউরো-সায়েন্সের ক্ষেত্রে নতুন পরীক্ষার পথ খুলে দেবে।

Leave a comment