আইএমএফ পাকিস্তানকে ১.২ বিলিয়ন ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছে। ইএফএফ এবং আরএসএফ-এর অধীনে এই তহবিল অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আর্থিক সংস্কারের জন্য দেওয়া হবে। বোর্ডের চূড়ান্ত অনুমোদনের পরেই এই অর্থ প্রকাশ করা হবে।
ওয়ার্ল্ড আপডেট: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং পাকিস্তানের মধ্যে ১.২ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে। বুধবার কর্মীদের স্তরে এই চুক্তিটি হয়, যেখানে আইএমএফের কর্মকর্তা এবং পাকিস্তান সরকার উভয়ই এই ঋণে সম্মত হয়। তবে, এই চুক্তিকে চূড়ান্ত রূপ দিতে আইএমএফের কার্যনির্বাহী বোর্ডের অনুমোদন বাকি আছে। অনুমোদন পাওয়ার পরই পাকিস্তান এই অর্থ পাবে।
ঋণের কাঠামো
আইএমএফ তার প্রসারিত তহবিল সুবিধা (Extended Fund Facility – EFF) এর অধীনে পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলার এবং তার স্থিতিস্থাপকতা ও স্থায়িত্ব সুবিধা (Resilience and Sustainability Facility – RSF) এর অধীনে ২০০ মিলিয়ন ডলার দেবে। বোর্ডের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরেই এই তহবিল পাকিস্তানকে প্রদান করা হবে। আইএমএফ এই তহবিলের উদ্দেশ্য হিসেবে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা জোরদার করা এবং বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনাকে উল্লেখ করেছে।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উন্নতি
আইএমএফ কর্মকর্তারা বলেছেন যে, পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন ধীরে ধীরে উন্নতির পথে। ২০২৫ অর্থবছরের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত ১৪ বছরে প্রথমবারের মতো ঘটেছে। রাজস্ব প্রাথমিক ভারসাম্যের কর্মসূচির লক্ষ্যগুলি পূরণ হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং বাহ্যিক বাফারগুলি শক্তিশালী হয়েছে। এছাড়াও, সার্বভৌম স্প্রেডে উল্লেখযোগ্য হ্রাস ঘটেছে, যা পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থার উন্নতি নির্দেশ করে।
বন্যা কৃষি খাতকে প্রভাবিত করেছে
তবে, পাকিস্তান সম্প্রতি বন্যার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা বিশেষত কৃষি খাতের উৎপাদনশীলতা এবং ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করেছে। আইএমএফ অনুমান করেছে যে, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য পাকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রায় ৩.২৫-৩.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে পাকিস্তানকে এখনও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হতে পারে।
পাকিস্তানের নীতিগত প্রতিশ্রুতি
আইএমএফ কর্মকর্তারা পাকিস্তানের নীতিগত অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। কর্মকর্তারা ইএফএফ এবং আরএসএফ-সমর্থিত কর্মসূচির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি এবং কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। পাকিস্তান শক্তিশালী এবং বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এইভাবে এই চুক্তি পাকিস্তানের অর্থনৈতিক নীতি ও সংস্কারকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ
পাকিস্তানের অর্থনীতি দীর্ঘকাল ধরে সংকটে রয়েছে। দেশটির ওপর বৈদেশিক ঋণের বিশাল বোঝা রয়েছে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ কম। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক চাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এমন সময়ে, আইএমএফ থেকে ১.২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পাকিস্তানের জন্য একটি স্বস্তির মতো কাজ করবে। এই তহবিল থেকে পাকিস্তান তার আর্থিক চাহিদা পূরণ করতে পারবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারবে।