চীনের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: ১০০০ মিসাইল পর্যবেক্ষণে সক্ষম, আমেরিকাকে পেছনে ফেলল বেইজিং

চীনের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: ১০০০ মিসাইল পর্যবেক্ষণে সক্ষম, আমেরিকাকে পেছনে ফেলল বেইজিং
সর্বশেষ আপডেট: 6 ঘণ্টা আগে

চীন একটি গ্রহ-ব্যাপী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যা ১,০০০ ক্ষেপণাস্ত্র পর্যবেক্ষণ করতে পারে। আমেরিকার গোল্ডেন ডোম প্রকল্পটি এখনও বিকাশের অধীনে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এটি চীনকে বৈশ্বিক প্রতিরক্ষায় এগিয়ে নিয়ে যাবে।

World Update: প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে চীন একটি বড় পদক্ষেপ নিয়ে তার নিজস্ব প্রথম বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এই ব্যবস্থাটিকে "Distributed Early Warning Detection Big Data Platform" বলা হচ্ছে, যা বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম। প্রতিবেদন অনুসারে, এই ব্যবস্থাটি একই সাথে ১,০০০ ক্ষেপণাস্ত্রের উপর নজর রাখতে এবং সম্ভাব্য হুমকিগুলি দ্রুত বিশ্লেষণ করতে পারে।

চীনের এই ব্যবস্থাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'গোল্ডেন ডোম' প্রকল্পের অনুরূপ, কিন্তু এর বিকাশের প্রাথমিক ধাপেই চীন আমেরিকাকে ছাড়িয়ে গেছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের স্বপ্ন

১৯৮৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান স্নায়ুযুদ্ধের সময় "স্টার ওয়ার্স" নামে 'কৌশলগত প্রতিরক্ষা উদ্যোগ' (Strategic Defense Initiative) ঘোষণা করেছিলেন। তিনি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ও ধ্বংস করার একটি ব্যবস্থার কল্পনা করেছিলেন। রিগান বলেছিলেন যে এই ব্যবস্থা মার্কিন শহর এবং নাগরিকদের পারমাণবিক হামলা থেকে রক্ষা করবে। তবে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে এই স্বপ্ন সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়নি।

ট্রাম্প রিগানের স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন

প্রায় চার দশক পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রিগানের স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যান। মে ২০২৫ সালে ট্রাম্প 'গোল্ডেন ডোম' মিসাইল শিল্ডের প্রস্তাব দেন। এই বহুস্তরীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমেরিকা, আলাস্কা এবং হাওয়াই জুড়ে বিস্তৃত হবে এবং এতে একটি উপগ্রহ-ভিত্তিক স্তর এবং তিনটি স্থল-ভিত্তিক স্তর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আনুমানিক ব্যয় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার। এর অধীনে ১১টি স্বল্প পাল্লার ব্যাটারি এবং এআই-সক্ষম পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা আমেরিকাকে সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।

চীন তার প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে

এদিকে, চীনের বিজ্ঞানীরা তাদের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেছেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, এই ব্যবস্থাটি মহাকাশ, সমুদ্র, বায়ু এবং স্থলে বিভিন্ন সেন্সর ব্যবহার করে। এটি কেবল ক্ষেপণাস্ত্র সনাক্ত করে না, বরং তাদের উড়ানের পথ এবং সম্ভাব্য আক্রমণের বিশ্লেষণও করতে পারে।

নানজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে এই প্রোটোটাইপ সিস্টেমটি বিভিন্ন নোডে ১,০০০ পর্যন্ত ডেটা প্রক্রিয়াকরণের কাজ বিতরণকৃত সমান্তরাল সময়সূচির মাধ্যমে করতে পারে। একাধিক প্রাথমিক সতর্কতা এবং সনাক্তকরণ সিস্টেম নোডে সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। এটি চীনকে রিয়েল-টাইমে ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্লেষণ করতে এবং প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া দিতে সক্ষম করে।

মার্কিন গোল্ডেন ডোম প্রকল্পটি এখনও বিকাশের অধীনে রয়েছে

অন্যদিকে, আমেরিকার গোল্ডেন ডোম প্রকল্পটি এখনও একটি স্পষ্ট প্রযুক্তিগত কাঠামো স্থাপন করতে পারেনি। এই ব্যবস্থার উদ্দেশ্য হল ভূমি, সমুদ্র, বায়ু এবং মহাকাশে বিস্তৃত একটি সমন্বিত, এআই-সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক তৈরি করা, কিন্তু চীনের Planet-Wide Defence System প্রযুক্তিগত ও কৌশলগতভাবে আমেরিকাকে ছাড়িয়ে গেছে।

Leave a comment