ইমরান খানের অভিযোগ: জেলে মৌলিক সুবিধা বঞ্চিত এবং পাঞ্জাব সরকারের বিরুদ্ধে এফআইআর-এর দাবি

ইমরান খানের অভিযোগ: জেলে মৌলিক সুবিধা বঞ্চিত এবং পাঞ্জাব সরকারের বিরুদ্ধে এফআইআর-এর দাবি

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জেল প্রশাসন এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে জেলে মৌলিক সুবিধা না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তিনি এফআইআর করার দাবি জানিয়েছেন।

পাকিস্তান: পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান আবারও জেল প্রশাসন ও পাঞ্জাব সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। খানের দাবি, রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে তাঁকে শুধু মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে না, বরং সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন, যেখানে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ এবং ঊর্ধ্বতন জেল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

আগস্ট ২০২৩ থেকে ইমরান খান জেলে বন্দী

ইমরান খান আগস্ট ২০২৩ থেকে জেলে বন্দী রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে সাজা ভোগ করছেন। তাঁর অভিযোগ, জেল প্রশাসন তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করছে, তা কোনও বন্দীর জন্য সঠিক বলা যায় না। তিনি বলেছেন, তাঁকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত মৌলিক সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে না।

সেল-এ আলো নেই, পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞা

ইমরান খান তাঁর অভিযোগে বলেছেন, তাঁর সেলে আলো পর্যন্ত নেই। তিনি অভিযোগ করেন, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজের নির্দেশে এই সব করা হচ্ছে। খানের দাবি, তাঁকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অধিকারও দেওয়া হচ্ছে না। তিনি লিখেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে সাক্ষাতের সময় পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাঁকে বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখা যায়।

গণমাধ্যম ও তথ্যের সমস্ত উৎস বন্ধ

ইমরান খান বলেছেন, তাঁকে কোনও ধরনের তথ্য পেতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে টিভি দেখতে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি খবরের কাগজও পড়তে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর দাবি, এটা করা হচ্ছে যাতে তিনি সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ থাকেন এবং সমাজ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। খান এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।

স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গেও কঠোর আচরণ

ইমরান খান তাঁর অভিযোগে বলেছেন, তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গেও জেল প্রশাসনের আচরণ অমানবিক। সাক্ষাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং তাঁর কাছে পাঠানো বেশিরভাগ বই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গত দুই মাসে খানকে মাত্র চারটি বই পড়তে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তাঁকে তাঁর ব্যক্তিগত ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, যা তাঁর স্বাস্থ্যের অধিকারের সরাসরি লঙ্ঘন।

জেল কর্মকর্তাদের ওপরও অভিযোগ

ইমরান খান তাঁর অভিযোগে আদিয়ালা জেলের চৌকিতে तैनात দুই পুলিশ কর্মকর্তা – জয়নব এবং এজাজ – এর নামও উল্লেখ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে এই কর্মকর্তারা তাঁর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছেন এবং সাক্ষাতে বাধা দিচ্ছেন। খান দাবি করেছেন যে এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ইমরান খানের বার্তা

এর আগে ইমরান খান সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের মাধ্যমে বলেছিলেন যে তিনি জেলে एकांत कारावास-এ থেকেও পাকিস্তানের সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য লড়ছেন। তিনি লিখেছেন, যতক্ষণ না তিনি তাঁর দেশবাসীকে "দাসত্বের শৃঙ্খল" থেকে মুক্ত করতে পারেন, ততক্ষণ তাঁর লড়াই जारी থাকবে।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে বাড়তে পারে উত্তেজনা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইমরান খানের এই অভিযোগের কারণে পাকিস্তানের রাজনীতিতে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। অর্থনৈতিক সংকট এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার সঙ্গে লড়াই করা পাকিস্তানে ইমরান খানের এই অভিযোগ সরকার ও জেল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

আন্তর্জাতিক মঞ্চেও উঠতে পারে এই মামলা

ইমরান খানের समर्थकों-দের বক্তব্য, যদি তাঁকে জেলে মৌলিক সুবিধা না দেওয়া হয়, তাহলে এই मामला আন্তর্জাতিক মঞ্চেও উঠতে পারে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোরও इस দিকে নজর রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে पाकिस्तान সরকারের ভাবমূর্তির উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

Leave a comment