আমেরিকা রাশিয়া থেকে সস্তা তেল কেনার অভিযোগে ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে, যা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য একটি বড় বিপদ। ভারত সরকার ২৫,০০০ কোটি টাকার একটি ছয় বছরের সহায়তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে, যেখানে ছোট রপ্তানিকারকদের জন্য জামানত-মুক্ত ঋণ এবং উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন বাজারে বিশেষ সহায়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মার্কিন শুল্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া থেকে সস্তা তেল কেনার অভিযোগে ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন, যার ফলে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত সরকার ২৫,০০০ কোটি টাকার একটি সহায়তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে, যা ছয় বছরে কার্যকর করা হবে। এই পরিকল্পনায় ছোট রপ্তানিকারকদের জামানত-মুক্ত ঋণ, উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন বাজারে সাহায্য এবং ক্রস-বর্ডার ফ্যাক্টরিংয়ের মতো আর্থিক উপকরণগুলির সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যাতে মার্কিন শুল্কের প্রভাব কমানো যায়।
ভারত কী প্রস্তুতি নিয়েছে?
এই চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনা করে ভারত সরকার সক্রিয় হয়েছে। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় ২৫,০০০ কোটি টাকার একটি সহায়তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে, যা আগামী ছয় বছরে কার্যকর করা হবে। এই প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং অনুমোদন পাওয়ার পরে এটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
নতুন পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হল মার্কিন শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব কমানো এবং ভারতীয় রপ্তানিকারকদের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। এই পরিকল্পনার অধীনে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারকদের জামানত-মুক্ত ঋণের সুবিধা দেওয়া হবে। এছাড়াও, উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন বাজারে রপ্তানি করা ব্যবসায়ীদের বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে।
বিকল্প আর্থিক উপকরণগুলিতে উৎসাহ
সরকার নতুন পরিকল্পনায় ক্রস-বর্ডার ফ্যাক্টরিংয়ের মতো বিকল্প আর্থিক উপকরণগুলিকে উৎসাহিত করার পরিকল্পনা করছে। এর উদ্দেশ্য হল রপ্তানিকারকরা যাতে তাদের নগদ প্রবাহকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারে এবং মার্কিন শুল্কের চাপেও রপ্তানি চালিয়ে যেতে পারে। রপ্তানিকারকরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন, কারণ এটি তাদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
অর্থনীতির উপর প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্ক জারি থাকলে ভারতের রপ্তানি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। মার্কিন শুল্কের কারণে ভারতীয় ম্যানুফ্যাকচারিং এবং রপ্তানি খাত কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে। ভারত সরকারের নতুন পরিকল্পনা এই প্রভাব কমানো এবং রপ্তানিকারকদের সহায়তা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পরিকল্পনার পরিচালনা
সরকার এই পরিকল্পনার কাঠামো তৈরি করেছে এবং এখন এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পরে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। এই পরিকল্পনার অধীনে, রপ্তানিকারকদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ বাজারে ব্যবসা করার জন্য मार्गदर्शनও দেওয়া হবে। এর উদ্দেশ্য হল মার্কিন শুল্কের কারণে ভারতের রপ্তানিতে যেন বড় ধরনের পতন না হয়।
বৈশ্বিক বাণিজ্যের উপর প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের মতো বড় অর্থনীতির জন্য এর প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। সরকারের নতুন পরিকল্পনা এই দিকে প্রথম ठोस পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভারত মার্কিন শুল্কের চাপের মধ্যে তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। রপ্তানিকারকদের জন্য এই পরিকল্পনা আর্থিক সুরক্ষা এবং ব্যবসার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে। সরকারের সক্রিয়তা এবং সমর্থনে ভারতের রপ্তানিকারকরা আশা করছেন যে তারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে এবং বিশ্ব বাণিজ্যে তাদের অবস্থান বজায় রাখবে।