রাহুল গান্ধীর বিহারে ভোটার অধিকার যাত্রা: গণতন্ত্র রক্ষার সংকল্প

রাহুল গান্ধীর বিহারে ভোটার অধিকার যাত্রা: গণতন্ত্র রক্ষার সংকল্প

রাহুল গান্ধী ১৭ই আগস্ট থেকে বিহারে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করবেন। এর উদ্দেশ্য হল ভোটারদের তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, ভোটার তালিকা সংশোধন করা এবং নির্বাচনী অনিয়মের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়া। এই যাত্রায় ২৩টি জেলা ভ্রমণ করা হবে এবং ১লা সেপ্টেম্বর পাটনায় শেষ হবে।

নয়াদিল্লি: লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ১৭ই আগস্ট থেকে বিহারে তাঁর বিশেষ ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করতে চলেছেন। এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য হল ভোটারদের তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা এবং ভোট চুরি-সহ অন্যান্য অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্তিশালী বার্তা দেওয়া। রাহুল গান্ধী এটিকে গণতন্ত্র, সংবিধান এবং 'ওয়ান ম্যান, ওয়ান ভোট' -এর নীতি রক্ষার জন্য একটি নির্ণায়ক সংগ্রাম বলে অভিহিত করেছেন।

যাত্রার উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব

রাহুল গান্ধী বলেছেন যে এই যাত্রা শুধুমাত্র একটি নির্বাচনী বিষয় নয়, বরং এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করা, সংবিধানের মূল নীতিগুলি বজায় রাখা এবং প্রতিটি নাগরিকের ভোটের সুরক্ষা নিশ্চিত করার একটি প্রচেষ্টা। তিনি X-এ পোস্ট করে লিখেছেন, '১৭ই আগস্ট থেকে ভোট অধিকার যাত্রা নিয়ে আমরা বিহারের ভূমি থেকে ভোট চুরির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই শুরু করছি। যুবক, শ্রমিক, কৃষক — প্রতিটি নাগরিক, উঠুন এবং এই জনআন্দোলনে যোগ দিন। এবার ভোট চোরদের পরাজয় — জনগণের জয়, সংবিধানের জয়।'

এই যাত্রার সময় রাহুল গান্ধী বিহারের মোট ২৩টি জেলা পরিদর্শন করবেন এবং সেখানকার জনগণকে তাঁদের ভোটাধিকার, ভোটার তালিকা সংশোধন এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংঘটিত কথিত অনিয়ম সম্পর্কে সচেতন করবেন। যাত্রাটি ১লা সেপ্টেম্বর পাটনায় শেষ হবে।

ভোটার তালিকা এবং এসআইআর প্রক্রিয়া

বর্তমানে বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ১লা আগস্ট রাজ্যের ৩৮টি জেলার জন্য প্রথম সংশোধিত ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করেছে। এই খসড়াতে সবচেয়ে বেশি ভোটারের নাম বাদ পড়েছে পাটনা জেলা থেকে, যেখানে মধুবনী এবং পূর্ব চম্পারণ যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

রাহুল গান্ধীর এই যাত্রা এই খসড়া এবং ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়াকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া, তাঁদের সচেতন করা এবং কোনও ভোটার যাতে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

যুবক এবং সাধারণ নাগরিকদের সাথে সংযোগ

রাহুল গান্ধী যাত্রার সময় বিশেষভাবে যুবক, কৃষক ও শ্রমিকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁর বার্তা হল গণতন্ত্র তখনই শক্তিশালী হবে যখন প্রতিটি নাগরিক তাদের ভোটাধিকার সঠিকভাবে ব্যবহার করবে। যাত্রার সময় ভোটার তালিকায় যে ত্রুটিগুলি রয়েছে, সেগুলি সংশোধনের জন্য জনগণকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা হবে।

এই উপলক্ষে রাহুল গান্ধী ভোটারদের কাছে আবেদন করেছেন যে তাঁরা যেন শুধু তাঁদের ভোট সঠিকভাবে ব্যবহার না করেন, বরং তাঁদের আশেপাশের লোকদেরও তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেন। তিনি এটিকে ‘গণআন্দোলন’ অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এই আন্দোলন শুধু নির্বাচন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি গণতন্ত্রের মৌলিক নীতিগুলিকে বাঁচানোর জন্য জরুরি।

নির্বাচন কমিশন এবং লোকসুরক্ষা

রাহুল গান্ধীর এই যাত্রার সময় নির্বাচন কমিশনের কথিত অনিয়মগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। তাঁর বিশ্বাস যে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী প্রক্রিয়া গণতন্ত্রের আত্মা। এই যাত্রার মাধ্যমে জনগণকে এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে যে শুধুমাত্র সচেতন ও শক্তিশালী ভোটাররাই একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করতে পারে।

যাত্রার রণনীতি এবং মিডিয়া কভারেজ

রাহুল গান্ধীর এই ভোটার অধিকার যাত্রা মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সমগ্র রাজ্য এবং দেশে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হবে। এর অধীনে জনগণের মধ্যে সভা, আলোচনা ও জনসভার মাধ্যমে ভোটার সচেতনতা অভিযান চালানো হবে। এই রণনীতির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি নাগরিককে তাঁদের ভোটাধিকার সঠিক পথে ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে উৎসাহিত করা।

Leave a comment