ভারতে শীঘ্রই রাস্তাগুলি স্মার্ট প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সেন্সর এবং ডিজিটাল টুইনস প্রযুক্তির মাধ্যমে রাস্তার দুর্বলতা এবং সম্ভাব্য ত্রুটিগুলি সময়মতো সনাক্ত করা যাবে। শহুরে এবং গ্রামীণ উভয় অঞ্চলেই ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের উন্নতি হবে, যা সড়ক দুর্ঘটনা এবং ব্যয় কমাতে সাহায্য করবে।
স্মার্ট রোডস: ভারতে AI-ভিত্তিক স্মার্ট রাস্তা শীঘ্রই চালু হতে চলেছে। এই প্রযুক্তি দেশের ৬৩ লক্ষ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নেটওয়ার্কের উপর নজর রাখবে এবং সম্ভাব্য ত্রুটি বা গর্তগুলি সনাক্ত করে সময়মতো সতর্কবার্তা দেবে। পুনে এবং বেঙ্গালুরুতে ইতিমধ্যে সক্রিয় ইন্টেলিজেন্ট ট্র্যাফিক সিস্টেম এবং ড্রোন, GPS-এর মাধ্যমে সড়ক প্রকল্পগুলিতে উন্নতির কাজ চলছে। NHAI ডিজিটাল টুইনস এবং AI সেন্সর ব্যবহার শুরু করেছে। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, ট্র্যাফিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় হ্রাস পাবে।
AI প্রযুক্তির মাধ্যমে সময়মতো সতর্কতা
ভারতে শীঘ্রই দেশের রাস্তাগুলি স্মার্ট প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত করা হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) অন্তর্ভুক্তির ফলে রাস্তার কোনও ধরণের ত্রুটি সনাক্ত হলে দুর্ঘটনার আগেই সতর্কতা জারি করা হবে। এই প্রযুক্তি ভারতের ৬৩ লক্ষ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নেটওয়ার্কের উপর নজর রাখবে, যা সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিকল্প রুটের ব্যবস্থা করা যাবে। বর্ষাকালে রাস্তা ভেঙে যাওয়া বা গর্তের সমস্যা মোকাবেলায় AI সহায়ক প্রমাণিত হবে।
AI সেন্সর এবং ডেটা অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে রাস্তার অবিচ্ছিন্ন নজরদারি সম্ভব হবে। এর ফলে মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণ সময়মতো করা যেতে পারবে। সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে এই যে, রাস্তায় ঝুঁকি কমবে, ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত হবে এবং রাস্তাগুলি দীর্ঘস্থায়ী ও নিরাপদ থাকবে।
ভার্চুয়াল মডেলের মাধ্যমে দুর্বলতা সনাক্তকরণ
ET Infra-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ডিজিটাল টুইনস প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রকৌশলীরা পুরো সড়ক নেটওয়ার্কের একটি ভার্চুয়াল মডেল তৈরি করতে পারেন। এই মডেলটি ট্র্যাফিক এবং রাস্তার দুর্বলতা বিশ্লেষণ করে এবং সম্ভাব্য ত্রুটিগুলি আগে থেকেই সনাক্ত করে। সফটওয়্যারটি কেবল সমস্যাগুলি সনাক্ত করে না, সেগুলি সমাধানের উপায়ও প্রস্তাব করে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (NHAI) এই AI প্রযুক্তি তাদের প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে প্রয়োগ করা শুরু করেছে, যা সড়ক নির্মাণের গুণমান এবং সুরক্ষা উন্নত করেছে।
শহুরে এবং গ্রামীণ উভয় ক্ষেত্রে AI-এর প্রভাব
ভারতের শহুরে অঞ্চলে AI ইতিমধ্যেই ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে। পুনেতে ইন্টেলিজেন্ট ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং বেঙ্গালুরুর অ্যাডাপটিভ ট্র্যাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম ট্র্যাফিকের উপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করে। সড়ক প্রকল্পগুলিতে ড্রোন এবং GPS-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিহারে AI প্রযুক্তির সাহায্যে ১২,০০০-এর বেশি সেতু এবং ৭৪৩টি ব্রিজের পরীক্ষা করা হয়েছে, যা ত্রুটিপূর্ণ কাঠামোগুলি সনাক্ত করে মেরামতের সুযোগ করে দিয়েছে।
গ্রামীণ অঞ্চলে এখনও ৭০% রাস্তার পরীক্ষা ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে করা হয়। KPMG-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, AI প্রযুক্তির মাধ্যমে রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় ৩০% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে এবং রাস্তাগুলি আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। যদি গ্রামীণ অঞ্চলেও AI-এর ব্যবহার বাড়ে, তবে রাস্তার গুণমান এবং নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি ঘটবে।
ভারতে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১.৫ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। বিশেষজ্ঞদের মতে, AI ইন্টেলিজেন্ট ট্র্যাফিক সিস্টেমের মাধ্যমে জরুরি প্রতিক্রিয়া সময় ৬০% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে এবং ট্র্যাফিক দক্ষতা ৩০% বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এছাড়াও, AI কার্বন নিঃসরণ পর্যবেক্ষণ, বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য করিডোর তৈরি এবং টেকসই সড়ক নকশায়ও সহায়তা করে।