কুয়ালালামপুরে জয়শঙ্কর-রুবিও বৈঠক: ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তিতে নতুন মোড়

কুয়ালালামপুরে জয়শঙ্কর-রুবিও বৈঠক: ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তিতে নতুন মোড়

কুয়ালালামপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি, কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কোনো চুক্তি তার সার্বভৌমত্ব এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের সঙ্গেই হবে।

New Delhi: কুয়ালালামপুরে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠককে উভয় দেশের জন্য কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন ভারত ও আমেরিকার মধ্যে চলমান বাণিজ্য চুক্তি (Trade Deal) নিয়ে আলোচনা নতুন মোড় নিয়েছে। উভয় নেতা এই সময়ে বাণিজ্য, কৌশলগত সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বাড়ছে উত্তেজনা

ভারত ও আমেরিকার মধ্যে প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তি গত কয়েক মাস ধরে আলোচনায় রয়েছে। তবে, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতভেদের কারণে চুক্তিতে বিলম্ব হচ্ছে। আমেরিকা চায় ভারত কিছু নির্দিষ্ট খাতে তার বাজার আরও উন্মুক্ত করুক, যেখানে ভারত জোর দিচ্ছে যে কোনো চুক্তি তখনই হবে যখন তা তার দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব (Sovereignty) এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।

কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ

কুয়ালালামপুরে এই বৈঠক শুধু বাণিজ্য আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। উভয় নেতা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল (Global Supply Chain)-এ সহযোগিতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলি তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে।

ভারতের স্পষ্ট বার্তা: তাড়াহুড়ো করে কোনো চুক্তি হবে না

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সম্প্রতি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে ভারত কোনো বাণিজ্য চুক্তি করতে তাড়াহুড়ো করবে না। তিনি বলেছিলেন যে ভারত এমন কোনো শর্ত গ্রহণ করবে না যা তার বাণিজ্যিক বিকল্পগুলিকে সীমিত করে দেয়। এই বিবৃতি ভারতের সেই সতর্ক অবস্থানকে তুলে ধরে, যার অধীনে নতুন দিল্লি তার জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে আপস করতে চায় না।

গোয়েল বলেছেন যে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি দীর্ঘমেয়াদী। এটি কেবল আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হতে যাওয়া বাণিজ্য বা রপ্তানিতে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি আরও যোগ করেছেন যে “এটি শুধু আমেরিকাকে ইস্পাত বিক্রি করার বিষয় নয়, বরং এটি একটি বিশ্বাসযোগ্য অংশীদারিত্ব (Trusted Partnership) গড়ে তোলার প্রক্রিয়া।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠকের সময় বলেছেন যে ভারতের লক্ষ্য কেবল বাজার প্রবেশাধিকার বা শুল্ক (Tariffs) সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি বলেছেন যে “বাণিজ্য চুক্তিগুলি কেবল অর্থনৈতিক চুক্তি নয়, এগুলি দুটি দেশের মধ্যে বিশ্বাস, দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক সহযোগিতার (Global Cooperation) ভিত্তি স্থাপন করে।”

Leave a comment