ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমাতে প্রস্তুত, তবে এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে শর্ত রেখেছে যে তাকে ইরান ও ভেনিজুয়েলা থেকে তেল কেনার অনুমতি দিতে হবে। আমেরিকান শুল্ক এবং বৈশ্বিক জ্বালানি সুরক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত তার জ্বালানি চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে।
রাশিয়ান তেল ক্রয় কমানো: ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত আমেরিকাকে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে যদি সে রাশিয়া থেকে তেলের আমদানি কমায়, তবে আমেরিকাকে ইরান ও ভেনিজুয়েলা থেকে তেল কেনার অনুমতি দিতে হবে। এই দুটি দেশ তেলের বড় সরবরাহকারী, কিন্তু আমেরিকা তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ভারতের যুক্তি হলো, একসাথে রাশিয়া, ইরান এবং ভেনিজুয়েলা থেকে তেল কেনা বন্ধ করলে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়তে পারে।
একটি সূত্র জানিয়েছে যে, এই সপ্তাহে আমেরিকায় যাওয়া ভারতীয় প্রতিনিধিদল আমেরিকান কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে এই বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন যে তেলের ক্রয়ে হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ভারতের জ্বালানি সুরক্ষায় প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে বাণিজ্য ও তেল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্ররা এবং আমেরিকান দূতাবাস কোনো মন্তব্য করেনি।
আমেরিকাকে দেওয়া শর্ত
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত আমেরিকাকে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে যদি সে রাশিয়া থেকে তেলের আমদানি কমায়, তবে আমেরিকাকে ইরান ও ভেনিজুয়েলা থেকে তেল কেনার অনুমতি দিতে হবে। এই দুটি দেশ তেলের বড় সরবরাহকারী, কিন্তু আমেরিকা তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ভারতের যুক্তি হলো, একসাথে রাশিয়া, ইরান এবং ভেনিজুয়েলা থেকে তেল কেনা বন্ধ করলে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়তে পারে।
একটি সূত্র জানিয়েছে যে, এই সপ্তাহে আমেরিকায় যাওয়া ভারতীয় প্রতিনিধিদল আমেরিকান কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে এই বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন যে তেলের ক্রয়ে হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ভারতের জ্বালানি সুরক্ষায় প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে বাণিজ্য ও তেল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্ররা এবং আমেরিকান দূতাবাস কোনো মন্তব্য করেনি।
রাশিয়া থেকে তেলের অবস্থা
ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এর পরিমাণ কিছুটা কমেছে। রাশিয়া এখনও ভারতের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সম্প্রতি বলেছেন যে ভারত আমেরিকা থেকে তেল ও গ্যাস কেনা বাড়াতে আগ্রহী। তিনি নিউইয়র্কে বলেছেন যে আমেরিকা ভারতের জ্বালানি সুরক্ষার লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক দেশ রাশিয়া থেকে বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে রাশিয়াকে তার তেলের ওপর বড় ছাড় দিতে হয়েছে। ভারত তার তেলের চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানি করে। সস্তা রাশিয়ান তেলের কারণে ভারত তার তেল বিল কমাতে সক্ষম হয়েছে। ইরান এবং ভেনিজুয়েলার তেলও তুলনামূলকভাবে সস্তা। ভারত ২০১৯ সালে ইরান থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছিল এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ একই বছরে ভেনিজুয়েলা থেকে তেল ক্রয় বন্ধ করে দেয়।
আমেরিকান তেল এবং ভারতের বিকল্প
ভারতীয় কোম্পানিগুলো মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল ক্রয় বাড়াতে পারে, কিন্তু এতে ভারতের আমদানি বিল বেড়ে যাবে। জুলাই মাসে ভারতীয় কোম্পানিগুলো রাশিয়ান তেলের জন্য প্রতি ব্যারেল গড়ে ৬৮.৯০ ডলার পরিশোধ করেছিল। যেখানে সৌদি আরবের তেল ৭৭.৫০ ডলার এবং আমেরিকান তেল ৭৪.২০ ডলার প্রতি ব্যারেল ছিল। ভারতীয় ট্যাঙ্কার রাশিয়া থেকে আসা তেলের বৃহত্তম গ্রাহক, তবে সব মিলিয়ে চীন প্রথম স্থানে রয়েছে।
ভারতের কৌশল
ভারতের এই কৌশল যে রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমানোর বিনিময়ে আমেরিকাকে ইরান এবং ভেনিজুয়েলা থেকে তেল কেনার অনুমতি দেওয়া হবে, এটিকে একটি সুষম পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভারত তার জ্বালানি নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারবে এবং রাশিয়া থেকে তেল ক্রয়ের ওপর আমেরিকান শুল্ক কমানোর চেষ্টা করবে। একই সাথে, এটি বিশ্বব্যাপী তেল বাজারে ভারতের অবস্থানকেও স্থিতিশীল রাখতে পারে।
বৈশ্বিক তেল বাজারে প্রভাব
ভারতের এই শর্ত বৈশ্বিক তেল বাজারের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যদি ভারত রাশিয়া থেকে তেলের আমদানি কমায় এবং আমেরিকা ইরান ও ভেনিজুয়েলা থেকে ক্রয়ের অনুমতি পায়, তবে তেলের সরবরাহ প্রভাবিত হবে এবং দামে ওঠানামা দেখা যেতে পারে। ভারতের এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র তার জ্বালানি বিল কমানোর জন্য নয়, বরং বৈশ্বিক বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্যও প্রয়োজনীয়।