দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল লাদাখের সংগ্রাম এবং সোনম ওয়াংচুকের খোলাখুলি সমর্থন করেছেন। তিনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে দুর্বল করা এবং জনগণের অধিকার দমন করার অভিযোগ তুলেছেন।
নয়াদিল্লি: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং আম আদমি পার্টির জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল শিক্ষা সংস্কারক ও পরিবেশ বিজ্ঞানী সোনম ওয়াংচুককে খোলাখুলি সমর্থন করেছেন। কেজরিওয়াল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের নীতিগুলিকে দুর্বল করা এবং ক্ষমতার মোহে জনগণের কণ্ঠস্বর দমন করার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন যে লাদাখের জনগণ কেবল তাদের সাংবিধানিক অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমাগত তাদের অধিকারকে উপেক্ষা করছে।
সোনম ওয়াংচুকের সমর্থনে কেজরিওয়ালের বিবৃতি
অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন যে সোনম ওয়াংচুকের মতো ব্যক্তিরা দেশের জন্য নতুন পথ খুলে দেন, শিক্ষার উন্নতি করেন এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। কিন্তু আজ সেই লোকেরাই ক্ষমতার সস্তা রাজনীতির শিকার হচ্ছেন। কেজরিওয়াল স্পষ্ট বলেছেন যে এটি কেবল ব্যক্তিগত অন্যায়ের বিষয় নয়, বরং গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রশ্ন।
কেজরিওয়াল বলেছেন যে ক্ষমতার মোহে মত্ত বিজেপি সরকার জনগণের কণ্ঠস্বর দমন করছে। তিনি লাদাখের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য প্রত্যেক ভারতীয়কে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, গণতন্ত্র তখনই টিকে থাকবে যখন প্রতিটি নাগরিক এমন সংগ্রামের পাশে দাঁড়াবে।
লাদাখের জনগণের অধিকারের লড়াই
কেজরিওয়াল লাদাখের জনগণের কণ্ঠস্বরকে গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন যে লোকেরা কোনো বিশেষাধিকারের দাবি করছে না, বরং কেবল তাদের সাংবিধানিক অধিকার চায়। বিজেপি সরকার বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও তাদের এই অধিকার দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেছেন যে যদি আজ লাদাখের কণ্ঠস্বরকে উপেক্ষা করা হয়, তবে এটি সারা দেশের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবে। এই সংগ্রাম কেবল আঞ্চলিক নয়, বরং সমগ্র দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের সাহস এবং ঐক্য প্রমাণ করে যে যখন জনগণ সংকল্পবদ্ধ হয়, তখন ক্ষমতাকে নত করা যায়।
সোনম ওয়াংচুকের জীবন ও অবদান
সোনম ওয়াংচুক ১৯৮৮ সালে SECMOL প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা শিক্ষায় নতুন পদ্ধতি গ্রহণের পথ দেখিয়েছিল। তিনি ব্যর্থ ছাত্রদের জন্য বিকল্প স্কুল খুলেছিলেন এবং জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় “আইস স্তূপ”-এর মতো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তার প্রচেষ্টা শিক্ষা ও পরিবেশ ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার উৎস।
ওয়াংচুক ধারা ৩৭০ বাতিলেরও সমর্থন করেছিলেন কারণ তিনি ভারতের একতায় বিশ্বাস করেন। কেজরিওয়াল বলেছেন যে তার উদ্যোগ এবং সমাজের প্রতি অবদান এই লড়াইকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। তিনি কেবল একজন বিজ্ঞানী বা শিক্ষক নন, বরং গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারের সমর্থক।
গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নাগরিকদের কাছে আবেদন
কেজরিওয়াল বলেছেন যে এই লড়াই কেবল সোনম ওয়াংচুকের নয়, বরং প্রতিটি ভারতীয়র অধিকার এবং গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই। তিনি প্রত্যেক নাগরিকের কাছে আবেদন করেছেন যে তারা লাদাখের জনগণের পাশে দাঁড়াক এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আওয়াজ তুলুক।
তিনি আরও বলেছেন যে গণতন্ত্র তখনই শক্তিশালী থাকবে যখন জনগণ তাদের অধিকার এবং কণ্ঠস্বর সম্পর্কে সচেতন থাকবে। লাদাখের লড়াই আজ দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। কেজরিওয়াল বলেছেন যে যখন জনগণ একত্রিত হয়, তখন ক্ষমতাও বাধ্য হয়।