মার্কিন বিদেশ মন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন যে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে আমেরিকার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। তিনি এর কৃতিত্ব ট্রাম্পকে দিয়েছেন। ভারত ইতিমধ্যেই এই ধরনের সমস্ত দাবি খারিজ করে দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আমেরিকা আবারও আলোচনায় এসেছে। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রী মার্কো রুবিও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন যে ২০২১ সালে হওয়া যুদ্ধবিরতিতে আমেরিকার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল এবং এটি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে সম্ভব হয়েছিল। তাঁর এই বক্তব্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আবারও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
রুবিও ট্রাম্পকে 'President of Peace' বলেছেন
মার্কো রুবিও তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেন যে ট্রাম্প প্রশাসন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে একটি নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তিনি ট্রাম্পকে 'President of Peace' আখ্যা দিয়ে আরও বলেন যে আমেরিকা উভয় পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা রোধ করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তাঁর মতে, এটি ট্রাম্পের নীতি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগের ফলস্বরূপ সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে।
এর আগেও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন
এই প্রথমবার নয় যখন আমেরিকা বা ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ধরনের দাবি করা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও অনেকবার বলেছেন যে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং তাঁর প্রচেষ্টাতেই যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে।
২০১৯ সালেও ট্রাম্প এক জনসমক্ষে বলেছিলেন যে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছিলেন। যদিও ভারত সেই সময়ও এই বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছিল।
ভারতের স্পষ্ট জবাব: পাকিস্তান অনুরোধ করেছিল
ভারত সরকার এই সমস্ত দাবি আগেই অস্বীকার করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের বক্তব্য হল পাকিস্তান নিজেই যুদ্ধবিরতির জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল। ভারতের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে যে সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা ভারতের অগ্রাধিকার, তবে এতে আমেরিকা বা অন্য কোনও দেশের মধ্যস্থতা ছিল না।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ফেব্রুয়ারি ২০২১-এ ঘোষণা করা হয়েছিল
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ফেব্রুয়ারি ২০২১-এ ডিজিএমও পর্যায়ে আলোচনার পর যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করতে সম্মতি হয়। উভয় দেশ একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে নিশ্চিত করে যে তারা নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) এবং অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে যুদ্ধবিরতি কঠোরভাবে মেনে চলবে। এই সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখেছিল।
ট্রাম্পের বিদেশনীতি নিয়ে রুবিওর ব্যাখ্যা
মার্কো রুবিও সাক্ষাৎকারে শুধু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কথাই উল্লেখ করেননি, অন্যান্য ক্ষেত্রেও ট্রাম্পের 'শান্তি স্থাপনের' ভূমিকা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন যে ট্রাম্প প্রশাসন কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড, আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মতো দেশগুলির মধ্যে চলমান সংঘাত নিরসনেও কাজ করেছে। এর পাশাপাশি রুবিও ডিআর কঙ্গো এবং রুয়ান্ডার মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা সংঘাত নিরসনেও আমেরিকার ভূমিকার কথা জানান।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও রুবিও কথা বলেন
রুবিও আরও দাবি করেন যে ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হত না। তাঁর মতে, ট্রাম্পের বিদেশনীতি ছিল কূটনীতি ও চাপের ভারসাম্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা অনেক দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সফল হয়েছিল।