এলাহাবাদ হাইকোর্টের ১৩ জন বিচারকের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের উপর আপত্তি। বিষয়টি বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা এবং সাংবিধানিক মূল্যবোধের সঙ্গে জড়িত।
Allahabad HC: সুপ্রিম কোর্ট ৪ অগাস্ট, ২০২৫-এ দেওয়া একটি আদেশ থেকে দুটি প্যারাগ্রাফ সরিয়ে দিয়েছে। এই প্যারাগ্রাফগুলিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি প্রশান্ত কুমারকে ফৌজদারি মামলার শুনানি থেকে দূরে রাখার কথা বলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশটি তখন দিয়েছিল যখন বিচারপতি কুমার একটি দেওয়ানি বিবাদে ফৌজদারি কার্যক্রমকে ন্যায্য ठहराਉਣ করে একটি মন্তব্য করেছিলেন। এতে আদালতের বিরক্তি প্রকাশ পায়।
হাইকোর্টের বিচারপতিদের আপত্তি
এই রায় নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের ১৩ জন বর্তমান বিচারপতি প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ কার্যকর না করার আবেদন করা হয়েছে। বিচারপতিদের বক্তব্য, এই আদেশ বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা এবং সাংবিধানিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে।
চিঠিতে কী বলা হয়েছে
হাইকোর্টের বিচারপতিরা এই বিষয়ে ফুল কোর্ট মিটিং ডাকার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশ শুধু সাংবিধানিক মূল্যবোধকেই চ্যালেঞ্জ করে না, বরং হাইকোর্টের কার্যপ্রণালীতেও সরাসরি হস্তক্ষেপ করে। বিচারপতিদের মতে, কোনও একজন বিচারকের কার্যশৈলী নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া পুরো প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের মূল আদেশ কী ছিল
৪ অগাস্টের আদেশে সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি প্রশান্ত কুমারের সমালোচনা করে বলেছিল যে তিনি দেওয়ানি মামলায় ফৌজদারি প্রকৃতির কার্যক্রমকে ভুলভাবে বহাল রেখেছেন। আদালত এও বলেছিল যে জামিন দেওয়ার প্রক্রিয়াতেও অনিয়ম করা হয়েছে। এই ভিত্তিতে তাঁকে ফৌজদারি মামলার শুনানি থেকে আলাদা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বিচারপতি পারদিওয়ালার মন্তব্য
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে থাকা বিচারপতি জে.বি. পারদিওয়ালা তাঁর আদেশে লিখেছেন, "আদালতকে প্রথমে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে হবে, তারপর বাদীর বক্তব্যগুলি বিবেচনা করে আইনের অনুসারে রায় দিতে হবে।" তিনি আরও বলেন যে উচ্চ আদালতের আদেশটি কেবল আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে ভুল ছিল তাই নয়, এর ফলে আইনশাস্ত্রের গুরুতর অবহেলাও হয়েছে।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রতিক্রিয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ
এলাহাবাদ হাইকোর্ট ভারতের বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম হাইকোর্টগুলির মধ্যে অন্যতম। সেখানকার বিচারপতিদের সমষ্টিগতভাবে কোনও আদেশের বিরুদ্ধে চিঠি লেখা বিচার বিভাগীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই পদক্ষেপটি এই ইঙ্গিত দেয় যে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের মধ্যে কার্যপ্রণালী এবং অধিকারক্ষেত্র নিয়ে মতভেদ বাড়ছে।