ভারত-মার্কিন যৌথ সামরিক মহড়া: আলাস্কায় যুদ্ধ প্রস্তুতি

ভারত-মার্কিন যৌথ সামরিক মহড়া: আলাস্কায় যুদ্ধ প্রস্তুতি

ভারত ও আমেরিকার সেনা ১-১৪ সেপ্টেম্বর আলাস্কায় যৌথ যুদ্ধ মহড়া ২০২৫-এ অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ, পাহাড়ি যুদ্ধ, ড্রোন প্রযুক্তি এবং জাতিসংঘের মিশনের প্রস্তুতি।

যুদ্ধ অভ্যাস ২০২৫: শুল্ক যুদ্ধের (tariff war) মাঝে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সামরিক সহযোগিতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখা যাচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দল ২১তম যুদ্ধ অভ্যাস ২০২৫ (Joint Military Exercise 2025) এর জন্য আমেরিকার আলাস্কার ফোর্ট ওয়েনরাইটে পৌঁছেছে। এই মহড়াটি ১ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এবং উভয় দেশের সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ, পাহাড়ি যুদ্ধ, ড্রোন পরিচালনা এবং অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির প্রদর্শন করবে।

এই যুদ্ধ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হল জাতিসংঘের শান্তি মিশনের জন্য উভয় দেশের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করা। এছাড়াও, এই মহড়াটি বহু-ক্ষেত্রীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সৈন্যদের আধুনিক যুদ্ধের কৌশলগুলির সাথে পরিচিত করাবে।

আলাস্কার বরফাচ্ছাদিত অঞ্চলে যুদ্ধ কৌশলের প্রদর্শন

আমেরিকার আলাস্কার বরফাচ্ছাদিত অঞ্চলে ভারতীয় ও আমেরিকান সেনারা আবারও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাদের যুদ্ধ কৌশল প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দলে মাদ্রাজ রেজিমেন্টের একটি ব্যাটালিয়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ব্যাটালিয়নটি আমেরিকার ১১তম এয়ারবোর্ন ডিভিশনের "ববক্যাটস" (1st Battalion, 5th Infantry Regiment) এর সাথে মিলিতভাবে প্রশিক্ষণ নেবে।

সেনারা কেবল যুদ্ধের কৌশল শিখবে না, বরং একে অপরের অভিজ্ঞতা এবং প্রযুক্তি থেকেও পরিচিত হবে। এই সহযোগিতা উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও বিশ্বাসকে আরও জোরদার করবে।

হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ এবং পাহাড়ি যুদ্ধে মহড়া

এই দুই সপ্তাহের মহড়ায় সেনারা বিভিন্ন ধরণের কৌশলগত মহড়ার অনুশীলন করবে। এর মধ্যে রয়েছে হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ (Heliborne operations), পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধ, ড্রোন ব্যবহার এবং অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ।

সেনারা আহতদের নিরাপদে উদ্ধার, যুদ্ধের সময় প্রাথমিক চিকিৎসা এবং উচ্চ-উচ্চতার অঞ্চলে লড়াইয়ের প্রস্তুতির উপরও মনোযোগ দেবে। এই সমস্ত মহড়া আধুনিক যুদ্ধের বাস্তব পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

ড্রোন ও অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির উপর গুরুত্ব

যুদ্ধ মহড়া শুধুমাত্র যুদ্ধ কৌশলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। উভয় দেশের সেনাবাহিনী ড্রোন এবং অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি, তথ্য যুদ্ধ (Information Warfare), যোগাযোগ ব্যবস্থা (Communication System) এবং লজিস্টিকসের মতো ক্ষেত্রগুলিতেও আলোচনা করবে। এই অংশীদারিত্ব উভয় দেশের সেনাবাহিনীকে প্রযুক্তিগতভাবে প্রস্তুত করবে এবং যুদ্ধের সময় সমন্বয় উন্নত করবে।

জাতিসংঘ মিশনের প্রস্তুতি

এই যুদ্ধ মহড়ার একটি প্রধান উদ্দেশ্য হল জাতিসংঘের শান্তি মিশনের জন্য উভয় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি জোরদার করা। সেনারা লাইভ-ফায়ার ড্রিলস এবং কঠিন উচ্চ-উচ্চতার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অংশ নেবে।

এই মহড়াটি তাদের বহু-ক্ষেত্রীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করবে। আধুনিক যুদ্ধের জটিলতা, প্রযুক্তিগত কৌশল এবং বহু-ডোমেন (Multi-Domain) অপারেশনে দক্ষতা অর্জনে এই মহড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Leave a comment