ভারতীয় মহাকাশচারী শুভংশু শুক্লা ২০ দিনের মিশন থেকে ফিরেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতকে কেউ থামাতে পারবে না। তিনি তরুণদের নির্ভীক এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। মিশনে ভারতের প্রথম মাইক্রোগ্র্যাভিটি গবেষণা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
New Delhi: ভারতীয় মহাকাশচারী শুভংশু শুক্লা জুন ২০২৫ সালে ২০ দিনের ঐতিহাসিক মহাকাশ মিশন সম্পন্ন করেছেন। তিনি কেবল ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়েই যাননি, বরং ১.৪ বিলিয়ন নাগরিকের আকাঙ্ক্ষাকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। এই মিশনে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞানীরা ডিজাইন করা পরীক্ষাগুলি সম্পাদন করেন, যা ছিল ভারতের প্রথম মাইক্রোগ্র্যাভিটি গবেষণা। এই অর্জনটিকে দেশটির জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা বলে মনে করা হচ্ছে।
উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং নির্ভীকতার বার্তা
শুভংশু শুক্লা তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেছেন যে ভারতকে কেউ থামাতে পারবে না। তিনি তরুণদের নির্ভীক হওয়ার, উচ্চাকাঙ্ক্ষী চিন্তা করার এবং নিজেদের অপরাজেয় মনে করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে যখন একজন ব্যক্তি নিজের সীমাগুলি অতিক্রম করে, তখনই জাতি নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়।
সফলতার চাবিকাঠি সাতটি নীতি
শুক্লা তাঁর মিশন থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা সাতটি নীতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন যে যখন জীবন আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী না চলে, তখন ধৈর্য ধরে রাখা উচিত। কোলাহল এবং চাপের মধ্যেও মনোনিবেশ করা জরুরি। প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করা উচিত কারণ স্বপ্নগুলি মেজাজের উপর নির্ভর করে না। ব্যর্থতা এলে অভিযোজনযোগ্যতা (adaptability) দেখানো উচিত।
আপনি সমাজে যে পরিবর্তন দেখতে চান, নিজে সেই পরিবর্তন হন। টিমওয়ার্ককে গুরুত্ব দিন কারণ কেউই একা মহানতা অর্জন করে না। সাহস রাখুন কারণ ভয় সবসময় থাকবে, কিন্তু বিশ্বাস তাকে জয় করতে পারে। এবং সবশেষে, আপনার যাত্রাকে উপভোগ করুন কারণ এটাই আসল অর্জন।
অপেক্ষা নয়, প্রস্তুতি
শুক্লা মিশনের আগে ৩২ দিনের কোয়ারেন্টাইন পর্বের কথা স্মরণ করেছেন। তিনি বলেছেন যে অপেক্ষা করা সময়ের অপচয় নয়, বরং প্রস্তুতি। এই সময়ে তিনি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন। তিনি আরও বলেছেন যে যখন রকেট উৎক্ষেপণ হয়, তখন সমস্ত গণনা পেছনে পড়ে যায় এবং আসল চ্যালেঞ্জ সামনে এসে দাঁড়ায়। ঘাবড়ে যাওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু প্রশিক্ষণ আপনাকে ভয়ের উপর নয়, পরবর্তী চেকলিস্টের উপর মনোযোগ দিতে শেখায়।
টিমওয়ার্কের শক্তি
শুভংশু শুক্লা স্পষ্ট করেছেন যে মহাকাশ মিশন কেবল একজন মহাকাশচারীর অর্জন নয়। এর পিছনে হাজার হাজার বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং পরিবারের অবদান রয়েছে। তিনি বলেছেন যে সাফল্য কখনোই একা আসে না, বরং এটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।
ভারতের নতুন রূপ
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে শুক্লা ভারতের একটি নতুন চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন যে ১৯৮৪ সালে যখন উইং কমান্ডার রাকেশ শর্মা বলেছিলেন "সারে যেখানে আচ্ছা" (আমার দেশ পৃথিবীর সেরা), তখন ভারত একটি আশার দেশ ছিল। কিন্তু আজকের ভারত একটি নির্ভীক, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং অপরাজেয় জাতি হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে।