কলকাতা, ১৯ সেপ্টেম্বর: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একের পর এক অকাল মৃত্যু ও হস্টেল সংক্রান্ত ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগ নিলেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো নিয়ে ফের বিতর্ক। বৃহস্পতিবার পড়ুয়ারা মিছিল করে স্পষ্ট জানায়, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া নজরদারি চালু করা যাবে না। অন্যদিকে, অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যুর তদন্তে সিসিটিভির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
ছাত্রছাত্রীদের অনড় অবস্থান
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পড়ুয়ারা মিছিল করেন। সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি শোনা গেলেও সিসিটিভির প্রশ্নে তাঁরা আপত্তি জানান। ছাত্রছাত্রীদের দাবি, তাঁদের মতামত নেওয়া ছাড়া নজরদারি বসালে তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে যাবে।
অনামিকা মৃত্যুর তদন্তে সমস্যায় পুলিশ
ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যুর তদন্তে লালবাজারের গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই একাধিক ছাত্রছাত্রী ও আয়োজকের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু ঘটনাস্থল সিসিটিভির আওতার বাইরে থাকায় মৃত্যুর কারণ ও পরিস্থিতি স্পষ্ট নয়। এ কারণে তদন্তে বড় সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, শিক্ষক ও ছাত্রদের একাংশের আঁতাঁতের কারণেই সিসিটিভি বসাতে বাধা তৈরি হচ্ছে। তাঁদের মতে, সিসিটিভি না থাকায় ক্যাম্পাসে অপরাধীরা সুবিধা পাচ্ছে এবং তদন্তে জটিলতা বাড়ছে।
অতীতের ঘটনাও স্মরণে
২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে এক ছাত্রকে যৌন হেনস্থা ও র্যাগিং করে খুনের অভিযোগ ওঠে। সিসিটিভি না থাকায় তখনও পুরো সত্য প্রকাশ পায়নি। অভিযুক্ত কয়েকজন প্রাক্তন পড়ুয়া এখনো জেলে। তবু আবারও নজরদারি নিয়ে ‘আলোচনা চাই’ বলে দাবি তুলছে কিছু পড়ুয়া।
আদালতের নির্দেশ ও খরচ
কলকাতা হাই কোর্ট ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিসিটিভি ও নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। ক্যাম্পাসে প্রায় ৭০টি ক্যামেরা বসাতে খরচ হবে ৬৮ লক্ষ টাকা। তবু ছাত্রছাত্রীদের চাপের মুখে কর্তৃপক্ষ আলোচনার আশ্বাস দিয়ে বিতর্ক আরও বাড়িয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি উঠলেও সিসিটিভি বসানো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যুর পর তদন্তে সিসিটিভি না থাকায় সমস্যার মুখে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের বৈঠকের পরেও ক্যাম্পাসে অনিশ্চয়তা।