জম্মু ও কাশ্মীরে মেঘ ভাঙা বন্যা: মৃত ৩, বিপর্যস্ত জনজীবন

জম্মু ও কাশ্মীরে মেঘ ভাঙা বন্যা: মৃত ৩, বিপর্যস্ত জনজীবন

জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা জেলায় ভারী বৃষ্টি এবং মেঘ ভাঙা বন্যার ঘটনায় আবারও এলাকায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। জেলার থাথরি মহকুমায় আকস্মিক মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ১০টিরও বেশি বাড়িঘর ধূলিসাৎ হয়ে গেছে, একইসঙ্গে তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

শ্রীনগর: জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা জেলায় মেঘ ভাঙা বন্যার ঘটনা ফের একবার বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১০টির বেশি বাড়িঘর বিধ্বস্ত। জেলায় একটানা ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধস, মাটি ধসে যাওয়া এবং পাথর পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর ফলস্বরূপ, বেশ কয়েকটি সংযোগকারী রাস্তা এবং জাতীয় সড়কের অনেক অংশ বন্ধ হয়ে গেছে, যা মানুষের চলাচল এবং জরুরি সাহায্য পৌঁছনোর ক্ষেত্রেও অসুবিধা সৃষ্টি করছে।

ভূমিধসের কারণে জাতীয় সড়ক এনএইচ-২৪৪-এর কিছু অংশ বন্ধ 

ডোডা জেলায় গত তিন দিন ধরে একটানা ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এর জেরে ভূমিধস, মাটি ধসে যাওয়া ও পাথর পড়ার মতো ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাগুলোর কারণে বেশ কয়েকটি সংযোগকারী রাস্তা এবং জাতীয় সড়ক এনএইচ-২৪৪-এর কিছু অংশ বন্ধ হয়ে গেছে। ডেপুটি কমিশনার হরবিন্দর সিং জানিয়েছেন যে, চেনাব নদীর তীরে দুটি স্থানে মেঘ ভাঙা বন্যার ঘটনা ঘটেছে। মেঘ ভাঙার পরে এনএইচ-২৪৪-এর রাস্তা দিয়ে জল বয়ে গেছে, যা পুনরুদ্ধারের কাজ প্রশাসন শুরু করেছে।

  • আবাসিক বাড়ি: প্রায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • গোশালা: অনেক গোশালাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • স্বাস্থ্য কেন্দ্র: একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • পোল: তিনটি হাঁটাপথের সেতু ভেসে গেছে, যার ফলে স্থানীয় মানুষের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।
  • নদীর স্তর: চেনাব নদীর জলস্তর ৯০০ ফিটের সর্বোচ্চ স্তরের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বর্তমানে এটি ৮৯৯.৩ মিটারে রয়েছে, অর্থাৎ আর মাত্র সোয়া মিটার দূরে নদীটি বিপদসীমা অতিক্রম করবে।

ডেপুটি কমিশনার সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যদি বৃষ্টি এভাবেই চলতে থাকে এবং নদীর জলস্তর আরও বাড়ে, তাহলে এইচএফএল (হাই ফ্ল্যাড লেভেল) ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসন চেনাব নদীর আশেপাশে এবং নদীর সংলগ্ন রাস্তাগুলোতে মানুষের চলাচল সীমিত করে দিয়েছে এবং তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি 

মেঘ ভাঙা বন্যার এই ঘটনায় গান্ডোর এলাকায় দুইজন এবং ঠাঠরি মহকুমায় একজন মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রশাসন দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। স্থানীয় পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ডোডার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ লাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে প্রশাসন ও ত্রাণকারী দলের জন্য কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ডোডা এবং এর আশেপাশের অঞ্চলে এর আগেও কিশ্তওয়ার ও থরালিতে মেঘ ভাঙা বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। বর্ষাকালে এই এলাকা প্রায়শই দুর্যোগের শিকার হয়। প্রশাসন সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে যে, নাগরিকদের নদী পাড়ে এবং বিপজ্জনক এলাকাগুলোতে যাওয়া উচিত না।

Leave a comment