প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার দেশবাসীকে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি এক্স (পূর্বে টুইটার) এ পোস্ট করে লিখেছেন যে, এই বিশ্বাস ও উল্লাসের পবিত্র উৎসব সকলের জীবনে নতুন শক্তি ও উদ্দীপনা সঞ্চার করুক।
নয়া দিল্লি: জন্মাষ্টমীর উৎসব সারা দেশ ও বিশ্বজুড়ে আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হচ্ছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দেশবাসী এবং বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দুই নেতাই এই পবিত্র অনুষ্ঠানে কৃষ্ণ ভক্তি, ধর্ম ও সামাজিক ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর এক্স (টুইটার) এ শুভেচ্ছা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (X)-এ পোস্ট করে দেশবাসীকে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন যে, এই আস্থা ও উল্লাসের উৎসব সকলের জীবনে নতুন শক্তি ও উদ্দীপনা সঞ্চার করুক। মোদী তাঁর বার্তায় বলেছেন:
'জন্মাষ্টমীর এই পবিত্র উৎসব আমাদের সকলের জীবনে নতুন উদ্দীপনা এবং ইতিবাচকতা নিয়ে আসুক। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা আমাদের সর্বদা ধর্ম, সত্য ও প্রেমের পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে। জয় শ্রীকৃষ্ণ!'
রাষ্ট্রপতি মুর্মুর বার্তা
এই উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও ভারতীয়দের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি সচিবালয় থেকে জারি করা বার্তায় তিনি বলেছেন:
'জন্মাষ্টমীর উৎসব কেবল উৎসবই নয়, শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষাগুলির স্মরণ করানোরও একটি সুযোগ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবন আমাদের আত্ম-বিকাশ, আত্ম-উপলব্ধি এবং ধর্মের পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে। এই পবিত্র উপলক্ষে আসুন, আমরা সকলে সংকল্প করি যে শ্রীকৃষ্ণ দ্বারা বর্ণিত শাশ্বত মূল্যবোধগুলিকে গ্রহণ করে সমাজ ও রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করব।'
কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর গুরুত্ব
জন্মাষ্টমী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। বিশ্বাস করা হয় যে মথুরায় কারাগারের ভিতরে মাতা দেবকী ও বাসুদেবের ঘরে ভগবান কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই উৎসব প্রতি বছর ভাদ্র মাসের অষ্টমী তিথিতে পালিত হয়। ভক্তরা সারা রাত জেগে ভজন-কীর্তন করেন এবং মধ্যরাতে শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসব পালন করেন।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে জন্মাষ্টমীর উৎসব উৎসাহের সঙ্গে পালিত হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে দহি হান্ডি উৎসবের বিশেষ ধুম থাকে। এখানে যুবকরা মানুষের পিরামিড তৈরি করে উপরে বাঁধা দই, মাখন ও দুধ ভর্তি পাত্র ভাঙে, যা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলা ও তাঁর চঞ্চলতার প্রতীক। গুজরাটের দ্বারকা, যা ভগবান কৃষ্ণের নগরী হিসাবে বিবেচিত, সেখানে এই উপলক্ষে বিশেষ পূজা-অর্চনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং তীর্থযাত্রীদের জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবীণ নাগরিক এবং দিব্যাঙ্গ তীর্থযাত্রীদের জন্য আলাদা সুবিধা उपलब्ध করা হয়েছে।
বিদেশেও পালিত হচ্ছে উৎসব
শুধু ভারত নয়, আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্য প্রাচ্যের অনেক দেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ও জন্মাষ্টমীর উৎসব পালন করেছে। বিশ্বজুড়ে ইসকন মন্দিরগুলিতে বিশেষ ভজন-কীর্তন, झांकी এবং শ্রীকৃষ্ণের আরতির আয়োজন করা হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে কৃষ্ণ ভক্তির ঐতিহ্য এখন বিশ্বব্যাপী মানুষকে একত্রিত করছে।
জন্মাষ্টমী কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতীক নয়, এটি সামাজিক ঐক্য ও নৈতিক মূল্যবোধের বার্তাও দেয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতার মাধ্যমে কর্ম, ধর্ম ও ভক্তির যে বার্তা দিয়েছেন, তা আজও মানবতাকে পথ দেখায়।