ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বিএসএফ জওয়ান থানার শৌচাগারে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে থানা ইনচার্জকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
খুঁটি: ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলায় বিএসএফের এক ৩২ বছর বয়সী জওয়ান থানার শৌচাগারে আত্মহত্যা করেছেন। ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ছিল। একই সময়ে, ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে এক কিশোরকে তার বন্ধুর দ্বারা হত্যা করার ঘটনা সামনে এসেছে। উভয় ঘটনাই রাজ্যে নিরাপত্তা ও পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
খুঁটিতে জওয়ানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
খুঁটির মুরহু থানা এলাকার মেরাল গ্রামের ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, সে মাতাল অবস্থায় মাহিল গ্রামের ১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ের সাথে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। মেয়েটি চিৎকার করলে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাকে ধরে গাছে বেঁধে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মণীশ টোপ্পো জানিয়েছেন যে, জওয়ানকে থানায় আটক করা হয়েছিল। নাবালিকার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সম্পূর্ণ সত্যতা কী, তা নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত চলছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে যে, অভিযুক্তের মানসিক অবস্থা এবং ঘটনার সময় তার আচরণ পরীক্ষা করা হবে।
খুঁটি থানায় জওয়ানের আত্মহত্যা
এসপি মণীশ টোপ্পো জানিয়েছেন যে, মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত থানায় এক পুলিশকর্মীকে বলেছিল যে সে শৌচাগারে যেতে চায়। অনেকক্ষণ বাইরে না আসায় পুলিশকর্মী দরজা খুললে অভিযুক্তকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। প্রাথমিক তদন্তে থানা চত্বরে কোনো ধরনের আক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে থানা ইনচার্জ রামদেব যাদবকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মৃত জওয়ানের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুঁটির সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন পুরো ঘটনার নিবিড় তদন্ত করছে যাতে নিশ্চিত করা যায় যে হেফাজতে কোনো ধরনের গাফিলতি হয়নি।
জামশেদপুরে কিশোর হত্যা
আরেকটি গুরুতর ঘটনা ঘটেছে জামশেদপুরে, যেখানে গাদাবাসা এলাকার গোলমুড়ি থানা এলাকার অন্তর্গত এক কিশোরকে তার বন্ধু হত্যা করেছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, সোমবার রাতে ঝগড়ার পর সন্দীপ কুমার ধারালো অস্ত্র দিয়ে অজয় বাসাকে হত্যা করেছে।
সন্দীপ কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঘটনার নিবিড় তদন্ত চলছে। পুলিশ উভয় পক্ষের জবানবন্দি রেকর্ড করছে এবং ঘটনার আসল কারণ খুঁজে বের করতে ব্যস্ত। এই ঘটনা এলাকায় নিরাপত্তা এবং কিশোর অপরাধ নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে
খুঁটি ও জামশেদপুরের ঘটনার পর প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলেছে। খুঁটিতে পুলিশি হেফাজত এবং থানার নিরাপত্তা মান যাচাই শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে, জামশেদপুরে কিশোর হত্যার ঘটনায় পুলিশ স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই ঘটনাগুলি রাজ্যে নিরাপত্তা, কিশোর অপরাধ এবং হেফাজতে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছে। প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে এমন মামলাগুলিতে দ্রুত ব্যবস্থা এবং নজরদারি নিশ্চিত করা হবে।