ঝাড়খণ্ডের চাইবাসায় নকশাল-অধ্যুষিত এলাকায় আইইডি বিস্ফোরণে সিআরপিএফ-এর কোবরা ব্যাটেলিয়নের দুই জওয়ান আহত হয়েছেন। অপারেশন চলাকালীন বিস্ফোরণে আহত জওয়ানদের প্রথমে ক্যাম্পে এবং পরে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দু'জনের অবস্থাই স্থিতিশীল।
ঝাড়খণ্ড: ঝাড়খণ্ডের নকশাল-অধ্যুষিত পশ্চিম সিংভূম জেলার চাইবাসা এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি যৌথ অভিযান চলাকালীন একটি জোরালো আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর বিশেষ কোবরা ব্যাটেলিয়নের দুই জওয়ান আহত হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর দু'জনকেই রাঁচির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
অপারেশন চলাকালীন বিস্ফোরণ
ঘটনাটি জরাইকেল থানা এলাকার সারান্ডা বনাঞ্চলের, যা নকশাল কার্যকলাপের জন্য কুখ্যাত বলে মনে করা হয়। সূত্র অনুযায়ী, সিআরপিএফ-এর ২০৯ কোবরা ব্যাটেলিয়ন এবং রাজ্য পুলিশ যৌথভাবে একটি নকশাল বিরোধী অভিযান চালাচ্ছিল। সেই সময় জওয়ানদের একটি দল জঙ্গলের ভেতরে এগোনোর সময়, মাটিতে লুকানো বিস্ফোরক जोरदार শব্দে বিস্ফোরিত হয়।
এই বিস্ফোরণে দুই জওয়ানের শরীরে স্প্লিন্টার লাগে এবং তাঁরা আহত হন। তাঁদের সঙ্গীরা তৎক্ষণাৎ প্রাথমিক চিকিৎসা করে তাঁদের দিঘা ক্যাম্পে নিয়ে যান, যেখান থেকে তাঁদের হেলিকপ্টারের সাহায্যে রাঁচির হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কর্মকর্তাদের মতে, দুই জওয়ানের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল এবং তাঁরা বিপদমুক্ত।
নকশাল কৌশল এবং সিআরপিএফ-এর চ্যালেঞ্জ
ঝাড়খণ্ডের এই অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে নকশাল-অধ্যুষিত। নকশালরা প্রায়ই নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশানা বানানোর জন্য আইইডির মতো বিস্ফোরক ব্যবহার করে। এই কৌশলের অধীনেই আজকের ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে, যা স্পষ্ট করে যে নকশালরা এখনও এলাকায় সক্রিয় রয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিটি গতিবিধির উপর নজর রাখছে।
কোবরা ব্যাটেলিয়ন, যা বিশেষভাবে নকশাল বিরোধী অভিযানের জন্য গঠিত, গত কয়েক বছর ধরে ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় এবং ওড়িশার মতো রাজ্যগুলিতে বড় সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু এই ধরনের হামলা মনে করিয়ে দেয় যে এই সংঘাত এখনও শেষ হয়নি।
প্রশাসন সতর্ক, এলাকায় তল্লাশি চলছে
আইইডি বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তা বাহিনী এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে। ডগ স্কোয়াড এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সাহায্যে জঙ্গলে অন্যান্য বিস্ফোরকের সন্ধান করা হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে আর কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। একই সাথে, নকশালদের সম্ভাব্য ठिकानाগুলোতেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
ঝাড়খণ্ড পুলিশ এবং সিআরপিএফ-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতির जायजा নিচ্ছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও এই ঘটনার রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসনের শান্তি রক্ষার আবেদন
প্রশাসন জানিয়েছে যে এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আতঙ্কিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আহত জওয়ানদের ভালোভাবে চিকিৎসা চলছে এবং তাঁদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সম্পূর্ণরূপে সুনিশ্চিত করা যায়।