বিচারপতি অতুল শ্রীধরনের ছত্তিশগড় হাইকোর্টে বদলি: সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের সুপারিশ

বিচারপতি অতুল শ্রীধরনের ছত্তিশগড় হাইকোর্টে বদলি: সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের সুপারিশ

সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম বিচারপতি অতুল শ্রীধরনকে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট থেকে ছত্তিশগড় হাইকোর্টে স্থানান্তরের সুপারিশ করেছে। কলেজিয়াম ২৫ ও ২৬ আগস্টের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নতুন দিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম সম্প্রতি বিচারপতি অতুল শ্রীধরনকে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট থেকে ছত্তিশগড় হাইকোর্টে স্থানান্তরের সুপারিশ করেছে। ২৫ ও ২৬ আগস্ট, ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত কলেজিয়ামের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিচারপতি শ্রীধরনের বদলি আগেও শিরোনামে এসেছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু পরে তাঁকে মধ্যপ্রদেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

তাঁর কর্মজীবনে বিচারপতি শ্রীধরন সমাজের প্রান্তিক রোগীদের এবং জেলে বন্দীদের অধিকার রক্ষায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁর বিচারিক দৃষ্টিভঙ্গি সর্বদা সমতা ও ন্যায়ের উপর নিবদ্ধ ছিল।

বিচারপতি অতুল শ্রীধরনের প্রোফাইল

  • জন্ম: ২৪ মে ১৯৬৬
  • শিক্ষা: আইন ডিগ্রি, ১৯৯২
  • হাইকোর্টে নিয়োগ: ৭ এপ্রিল ২০১৬, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট
  • স্থায়ী বিচারপতি নিয়োগ: ১৭ মার্চ ২০১৮

বিচারপতি শ্রীধরন মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট থেকে তাঁর বিচারিক কর্মজীবনের সূচনা করেন এবং তাঁর নিরপেক্ষতা ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত। তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হতে অস্বীকৃত বিচারপতিদের তালিকাতেও অন্তর্ভুক্ত।

কর্মজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন

  • প্রান্তিক রোগীদের জন্য আইনি সহায়তা – বিচারপতি শ্রীধরন হাসপাতালে এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীদের অধিকার রক্ষায় অনেক মামলায় নিশ্চিত করেছেন।
  • জেলে বন্দীদের অধিকার রক্ষা – জেলবন্দীদের যত্ন ও তাদের অধিকার নিয়ে তিনি অনেক নির্দেশ দিয়েছেন।
  • মন্ত্রী বিজয় শাহ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ – তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে এফআইআর অবিলম্বে দায়ের করতে হবে, অন্যথায় ডিজি-র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হবে। বিচারপতি শ্রীধরন এই মামলায় বলেছিলেন, “কেসটি এখনই দায়ের করুন, হতে পারে আমি কাল জীবিত নাও থাকতে পারি। আমি চার ঘন্টা দিচ্ছি, হয় আদেশ পালন করুন অথবা সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ আনুন। আমরা কোনো অজুহাত শুনব না। সন্ধ্যার মধ্যে এফআইআর দায়ের করতে হবে।”

বিচারপতি শ্রীধরনের বিচারিক দৃষ্টিভঙ্গি দ্রুত ও কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য পরিচিত। তাঁর আদেশ প্রায়শই সমাজ ও আইনের স্বার্থে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত করে।

সামাজিক ন্যায়বিচার ও বিচারব্যবস্থায় অবদান

বিচারপতি শ্রীধরন প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল গোপাল সুব্রহ্মণ্যম-এর অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁর আইন পেশা শুরু করেন। এর ফলে তিনি আইন ও বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তাঁর কন্যা জেলা আদালত ও মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ইন্দোর বেঞ্চে আইন পেশা শুরু করেছেন, যার কারণে বিচারপতি শ্রীধরন তাঁর পদে থেকে সম্ভাব্য স্বার্থের সংঘাত এড়াতে বদলির অনুরোধ করেছিলেন। বিচারপতি শ্রীধরনের কর্মজীবন সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক বলে মনে করা হয়। তাঁর উদ্যোগগুলি হল:

  • জেলে বন্দীদের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা
  • প্রান্তিক রোগীদের আইনি সহায়তার সুযোগ নিশ্চিত করা
  • প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা
  • এই দিকগুলি তাঁকে বিচারব্যবস্থায় একজন প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় বিচারপতি হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে।
  • বিচারপতি অতুল শ্রীধরনের বদলি ও বিতর্ক

বিচারপতি শ্রীধরনের বদলি প্রায়শই আলোচনায় থাকে। তাঁকে জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টে পাঠানো, তারপর মধ্যপ্রদেশে ফিরে আসা এবং এখন ছত্তিশগড় হাইকোর্টে বদলির সিদ্ধান্ত বিচারিক মহল ও মিডিয়ায় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Leave a comment