জ্যোতি মৌর্য মামলা: হাইকোর্টে স্বামীর খোরপোশের আবেদন, আইন কী বলে?

জ্যোতি মৌর্য মামলা: হাইকোর্টে স্বামীর খোরপোশের আবেদন, আইন কী বলে?

PCS অফিসার জ্যোতি মৌর্য থেকে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনের মধ্যে তাঁর স্বামী ভরণপোষণের আবেদন করেছেন। হাইকোর্ট নোটিশ জারি করেছে। আইন অনুযায়ী, স্বামীও খোরপোশের আবেদন করতে পারেন।

জ্যোতি মৌর্য: এলাহাবাদ হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় PCS অফিসার জ্যোতি মৌর্যকে নোটিশ জারি করেছে। মামলাটি তাঁর স্বামী, আলোক মৌর্যের তরফে দায়ের করা একটি আবেদন সম্পর্কিত, যেখানে তিনি স্ত্রীর কাছ থেকে ভরণপোষণের (alimony) আবেদন করেছেন। এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলেছে যে বিবাহবিচ্ছেদের মামলাগুলিতে স্বামীও কি স্ত্রীর কাছ থেকে খোরপোশের আবেদন করতে পারেন এবং আইন এ বিষয়ে কী বলে।

হাইকোর্টের নির্দেশ এবং মামলাটি কী?

আলোক মৌর্য প্রয়াগের পারিবারিক আদালতের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, যেখানে তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে ভরণপোষণ চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই আবেদনটি গ্রহণ করে জ্যোতি মৌর্যকে নোটিশ জারি করেছে এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ ৮ই আগস্ট ধার্য করেছে।

আলোক মৌর্য কেন ভরণপোষণ চেয়েছেন?

আলোক মৌর্যের বক্তব্য, তিনি একজন সাধারণ সরকারি কর্মচারী এবং বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রী একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং আয়ের দিক থেকে অনেক বেশি সক্ষম।

তিনি জানান, স্ত্রী জ্যোতি মৌর্য পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছেন, যা এখনও বিচারাধীন। এরই মধ্যে তিনি হিন্দু বিবাহ আইনের ২৪ ধারার অধীনে পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণের জন্য আবেদন করেছিলেন, যা ৪ঠা জানুয়ারী, ২০২৫ তারিখে খারিজ হয়ে যায়।

আইন কী বলে?

হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫-এর ২৪ ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, যদি বিবাহবিচ্ছেদ বা অন্যান্য বৈবাহিক বিবাদ আদালতে বিচারাধীন থাকে এবং স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে কোনো পক্ষ যদি নিজের ভরণপোষণ করতে অক্ষম হন, তবে তিনি অন্য পক্ষের কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন ভরণপোষণ চাইতে পারেন।

এই ধারা লিঙ্গ-নিরপেক্ষ (gender-neutral), অর্থাৎ এতে পুরুষদেরও সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। যদি স্বামী প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি আর্থিকভাবে দুর্বল এবং স্ত্রীর আয় তাঁর থেকে অনেক বেশি, তবে তিনি খোরপোশ পেতে পারেন।

আদালতে আবেদন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ

আলোক মৌর্য পারিবারিক আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে প্রথম আপিল দায়ের করেছেন। আবেদনে তিনি আরও জানিয়েছেন যে, তিনি এই আবেদন ৭৭ দিন দেরিতে দাখিল করেছেন। এর জন্য তিনি বিলম্ব মার্জনা করার আবেদনও জানিয়েছেন। হাইকোর্ট তাঁকে নির্দেশ দিয়েছে পারিবারিক আদালতের রায়ের ইংরেজি অনুবাদ জমা দেওয়ার জন্য।

২০১০ সালে বিবাহ হয়েছিল

আলোক মৌর্য এবং জ্যোতি মৌর্যের বিবাহ ২০১০ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। ২০০৯ সালে, আলোকের পঞ্চায়েত রাজ বিভাগে সাফাই কর্মী পদে নিয়োগ হয়েছিল। তিনি দাবি করেছেন যে, তিনি প্রয়াগে তাঁর স্ত্রীর শিক্ষা ও কর্মজীবনের জন্য সমস্ত সম্ভাব্য সহায়তা করেছেন।

আলোকের মতে, ২০১৫ সালে যখন জ্যোতি মৌর্য PSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং SDM হন, তখন থেকে তাঁর আচরণ এবং পরিবারের প্রতি ধারণা পরিবর্তিত হতে শুরু করে। এই কারণেই তিনি এখন খোরপোশের আবেদন করছেন।

Leave a comment