নওয়লগড়ে শুটিংয়ের মাঝে লোহাগড়ে জ্যাকি শ্রফের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা

নওয়লগড়ে শুটিংয়ের মাঝে লোহাগড়ে জ্যাকি শ্রফের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা

জ্যাকী শ্রফ নওয়লগড়ে ফিল্মের শুটিংয়ের মাঝে লোহargগল ধামে গিয়ে পূজা করেন এবং 'শেখাওয়াটির গঙ্গা'-র জল পান করে আত্মিক শান্তির অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন।

ঝুনঝুনু: রাজস্থানের ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিক ভূমি নওয়লগড় এবং লোহargগল ধাম আজকাল বলিউড-এর আলোয় ঝলমল করছে। ‘তু মেরি, ম্যায় তেরা, ম্যায় তেরা, তু মেরি’ ফিল্মের শুটিং-এর জন্য অভিনেতা জ্যাকি শ্রফ সেখানে পৌঁছেছেন। তিনি শুধু শুটিং-এ ব্যস্ত ছিলেন না, বরং এই অঞ্চলের আধ্যাত্মিকতা, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে তাঁর সংযোগও স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন। লোহargগল ধামে ‘শেখাওয়াটির গঙ্গা’-র পবিত্র জল গ্রহণ করার পর জ্যাকি শ্রফ বলেন, ‘পিয়ার করতে রাহো অউর নিকাল লো বাস’, যা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লোহargগল ধামে জ্যাকে-র আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা

শুক্রবার রাতে জ্যাকি শ্রফ রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলায় অবস্থিত বিখ্যাত তীর্থস্থান লোহargগল ধামে পৌঁছন। এই স্থানটি তার সূর্য মন্দির, ভীমকুণ্ড এবং আধ্যাত্মিক পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। জ্যাকি ধামে পৌঁছানো মাত্রই ভক্ত এবং তাঁর অনুরাগীদের ভিড় জমে যায়। মন্দির-এর মহন্ত অবধেশাচার্য মহারাজ জ্যাকিকে ঐতিহ্যপূর্ণ শাল পরিয়ে স্বাগত জানান এবং তাঁকে লোহargগল-এর প্রতীকচিহ্ন উপহার দেন। জ্যাকি সূর্য মন্দিরে পূজা-অর্চনা করেন এবং ভীমকুণ্ড জলপ্রপাতের কাছে গিয়ে শান্তি ও শক্তির অভিজ্ঞতা লাভ করেন। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘এই স্থানটি শুধু শরীরকেই শান্তি দেয় না, আত্মাকেও শান্তি দেয়। এখানকার প্রকৃতি এবং আধ্যাত্মিক শক্তি আত্মাকে হাসতে বাধ্য করে।’

‘শেখাওয়াটির গঙ্গা’-র জল পান করে জ্যাকি বললেন

লোহargগল-এ উপস্থিত প্রাকৃতিক জলধারা, যা ‘শেখাওয়াটির গঙ্গা’ নামে পরিচিত, তার জল পান করার পর জ্যাকি শ্রফ বলেন, ‘এই জল পান করার পর মনে হল যেন ভিতরে কিছু পবিত্রতা বইছে। এখানকার প্রতিটি কোণা শুদ্ধ এবং আত্মিক লাগে। স্বপ্নের মতো লাগছে সবকিছু।’ জ্যাকি তাঁর নিজস্ব ঢঙে বলেন, ‘বিডু, পিয়ার করতে রাহো অউর নিকাল লো বাস’। এই বাক্যটি তাঁর সারল্য, আধ্যাত্মিকতা এবং আনন্দ-পূর্ণ স্বভাবকে প্রতিফলিত করে।

সেলফি তুললেন, ভক্তরা বললেন - ‘ভিড়ু আসল হিরো’

জ্যাকী শ্রফের লোহargগল-এ আসার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই পড়ে যায়। সেখানে উপস্থিত প্রত্যেক ব্যক্তি ‘ভিড়ু’-এর সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। জ্যাকি সবাইকে সময় দেন, হাসেন, সকলের সঙ্গে মিশে যান এবং তাঁর সারল্য সকলের মন জয় করে। ভক্ত রবি কুমার বলেন, ‘আজ পর্যন্ত শুধু ফিল্মেই জ্যাকি দাদাকে দেখেছি, কিন্তু এখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করে মনে হল যেন নিজের বাড়ির মানুষের সঙ্গেই দেখা হচ্ছে।’

মূল্যবোধ, সংস্কৃতি এবং পরিবেশ নিয়ে জ্যাকি বললেন

জ্যাকি শ্রফ ঝুনঝুনু-র সংস্কৃতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এখানে পরিবেশ, মানুষের আন্তরিকতা, দুধ-দই-এর মাধুর্য এবং সকালে পাখির শব্দ শুনে দিন শুরু করা – এসব মুম্বাইয়ের ব্যস্ত জীবন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে হর্নের শব্দে ঘুম ভাঙে, আর এখানে প্রকৃতির ডাকে।’ তিনি যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বাবা-মায়ের সেবা করো, পরিশ্রম করো, পরিবেশ বাঁচাও এবং যোগাভ্যাস করো। প্রোগ্রেসের সঙ্গে রিগ্রেশন হতে দিও না।’ তাঁর এই কথাগুলো যুবকদের জন্য এক অনুপ্রেরণা হয়ে উঠল।

শুটিংয়ের মাঝে আধ্যাত্মিক যাত্রা

জ্যাকি শ্রফ আজকাল নওয়লগড়ে তাঁর আসন্ন ছবি ‘তু মেরি ম্যায় তেরা, ম্যায় তেরা তু মেরি’-এর শুটিং করছেন। এই ছবিতে তাঁর সঙ্গে কার্তিক আরিয়ান এবং অনন্যা পান্ডেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন। শুটিং থেকে সময় বের করে জ্যাকি লোহargগল-এ পূজা করে তাঁর আধ্যাত্মিক দিকটিও তুলে ধরেন। অন্যদিকে, কার্তিক আরিয়ানও নওয়লগড়ে অবস্থিত বাবা রামদেব মন্দিরে দর্শন করেন এবং সেখানে উপস্থিত ভক্তদের সঙ্গে উৎসাহের সঙ্গে মিলিত হন।

আসন্ন মুক্তি, ছবিতে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ

এই ছবির শুটিং রাজস্থানের সুন্দর লোকেশনগুলোতে হচ্ছে। এর ফলে পর্যটন যেমন বাড়বে, তেমনই স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান এবং পরিচিতিও তৈরি হবে। ফিল্ম নির্মাতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ফিল্মের কিছু অংশে স্থানীয় শিল্পীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

Leave a comment