কারওয়া চৌথ ২০২৫ সালের ১০ই অক্টোবর, শুক্রবার উদযাপিত হবে। এই ব্রত বিবাহিত মহিলাদের জন্য স্বামীর দীর্ঘায়ু এবং বৈবাহিক সুখ-সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রত চলাকালীন নির্জলা উপবাস, সঠিক রঙের পোশাক পরিধান, সংযত আচরণ এবং সুহাগ সামগ্রীর প্রতি মনোযোগ রাখা জরুরি। এই নিয়মাবলী মেনে চললে ব্রতের ফল নিশ্চিত হয় এবং সংকল্প সফল হয়।
কারওয়া চৌথ ২০২৫: কারওয়া চৌথ উৎসব ১০ই অক্টোবর, শুক্রবার ভারতে পালিত হবে এবং এটি বিবাহিত মহিলাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে মহিলারা তাঁদের স্বামীর দীর্ঘায়ু ও বৈবাহিক সুখ-সমৃদ্ধির জন্য নির্জলা উপবাস পালন করেন। ব্রত সূর্যোদয়ের আগে সারগি (প্রাতরাশ) খাওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় এবং চন্দ্রকে অর্ঘ্য দেওয়ার পর শেষ হয়। এই সময় সঠিক রঙের পোশাক পরিধান, ধারালো জিনিসপত্র ব্যবহার এড়িয়ে চলা, সংযত আচরণ বজায় রাখা এবং সুহাগ সামগ্রীর প্রতি মনোযোগ রাখা ব্রতের সংকল্প সফল করার জন্য অত্যাবশ্যক।
নির্জলা ব্রতে সবচেয়ে বড় সতর্কতা
কারওয়া চৌথের মূল নিয়ম হল সারাদিন অন্ন ও জল গ্রহণ না করা। সূর্যোদয়ের পর এবং চন্দ্রোদয়ের আগে ভুল করেও এক ফোঁটা জল বা এক দানা খাদ্য গ্রহণ করলে ব্রত ভঙ্গ হয় বলে মনে করা হয়। যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে এমনটা ঘটে, তাহলে অবিলম্বে স্নান করে পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করুন এবং ভগবান শিব, পার্বতী, গণেশ জি ও কারওয়া মাতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। এরপরে চন্দ্রোদয় পর্যন্ত ব্রত চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প নিন। এই প্রতিকার ব্রতের শুভ ফল নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
ধারালো জিনিসপত্র ব্যবহার করবেন না
কারওয়া চৌথের দিনে বিবাহিত মহিলাদের কোনও প্রকারের ধারালো জিনিস, যেমন কাঁচি, ছুরি বা সুঁচ ব্যবহার করা উচিত নয়। শাস্ত্র অনুসারে, এগুলির ব্যবহার ব্রতের ফল হ্রাস করতে পারে এবং এটিকে অশুভ বলে মনে করা হয়। যদি প্রয়োজন হয়, তবে সবজি কাটা বা সেলাই-ফোঁড়াইয়ের মতো কাজের জন্য অন্যের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
রং এবং পোশাক
পূজা এবং শুভ অনুষ্ঠানে কালো ও সাদা রঙের পোশাক পরবেন না। কালো রং নেতিবাচকতার প্রতীক এবং সাদা রং বৈধব্যের প্রতীক বলে মনে করা হয়। কারওয়া চৌথের দিনে লাল, গোলাপী, হলুদ, কমলা বা সবুজের মতো উজ্জ্বল এবং শুভ রং পরিধান করুন। এটি বৈবাহিক জীবনে আনন্দ ও সৌভাগ্যের প্রতীক।
ব্রতের গুরুত্ব
ব্রত চলাকালীন মহিলাদের শান্ত, সংযত এবং বিনয়ী থাকা উচিত। কোনও ব্যক্তি, বিশেষ করে বয়স্কদের, শ্বশুর-শাশুড়ি বা স্বামীর প্রতি অসম্মান দেখানো উচিত নয়। ঝগড়া, ক্রোধ বা কটু কথা বললে ব্রতের ফল নষ্ট হতে পারে। সারাদিন জাগ্রত থেকে ঈশ্বরের স্মরণ করা বা কারওয়া চৌথের কাহিনী শোনা শুভ বলে মনে করা হয়।
শারীরিক পরিশ্রম এবং বিশ্রাম
সারাদিন নির্জলা উপবাস রাখলে ক্লান্তি আসা স্বাভাবিক। তবে ভারী শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে তৃষ্ণা বেশি লাগবে এবং ব্রত ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। দিনের বেলায় বেশি ঘুমানো থেকেও বিরত থাকুন এবং ঈশ্বরের স্মরণ করে সময় কাটান।
সুহাগ সামগ্রীর প্রতি মনোযোগ
কারওয়া চৌথের দিনে নিজের সুহাগ সামগ্রী যেমন মেহেন্দি, সিঁদুর, চুড়ি বা টিপ অন্য কোনও মহিলাকে দেবেন না। এমন করলে সৌভাগ্য হ্রাস পেতে পারে। যদি দান করা অত্যাবশ্যক হয়, তবে নতুন সুহাগ সামগ্রী কিনে দান করুন।
কারওয়া চৌথের ব্রত স্বামীর দীর্ঘায়ু এবং বৈবাহিক সুখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে অনিচ্ছাকৃতভাবে করা ভুলগুলি ব্রতের ফল কমিয়ে দিতে পারে। অতএব, নির্জলা উপবাস, ধারালো জিনিসপত্র থেকে বিরত থাকা, সঠিক রঙের পোশাক পরিধান, সংযত আচরণ এবং সুহাগ সামগ্রীর প্রতি মনোযোগ রাখা অত্যাবশ্যক। এই নিয়মাবলী পালন করে মহিলারা ব্রতের সংকল্প সফল করতে পারেন এবং তাঁদের বৈবাহিক জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারেন।