উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি: কেদারনাথ যাত্রা স্থগিত, সতর্কতা জারি

উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি: কেদারনাথ যাত্রা স্থগিত, সতর্কতা জারি

উত্তরাখণ্ডে লাগাতার মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কারণে কেদারনাথ যাত্রা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধস এবং রাস্তার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকায়, যাত্রীদের সোনপ্রয়াগ এবং গৌরীকুন্ডে আটকে দেওয়া হয়েছে।

চার জেলায় রেড অ্যালার্ট

আবহাওয়া দপ্তর রাজ্যের চারটি জেলা - তেহরি, রুদ্রপ্রয়াগ, চামোলি এবং উত্তরকাশীতে ৭ ও ৮ জুলাই ভারী বৃষ্টি এবং ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছে। প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দা এবং তীর্থযাত্রীদের সাবধানে থাকার এবং অপ্রয়োজনে ভ্রমণ না করার আবেদন জানিয়েছে। আবহাওয়ার উন্নতি হলেই যাত্রা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অলকানন্দার জলস্তর বৃদ্ধি

রুদ্রপ্রয়াগ এবং আশেপাশের অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির কারণে অলকানন্দা নদীর জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। যদিও জলস্তর এখনও বিপদসীমার নীচে রয়েছে, তবুও জেলা প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নদীর তীরে লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে এবং উদ্ধারকারী দলগুলিকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

গৌরীকুন্ডে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে

বদ্রীনাথ যাওয়ার রাস্তাও ভারী ভূমিধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তার উপর ধ্বংসস্তূপ জমে থাকার কারণে প্রশাসন যাত্রীদের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়াও, গৌরীকুন্ডে দ্রুত ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে, যাতে দ্রুত যাত্রা পুনরায় চালু করা যায়।

বৃষ্টির কারণে খারাপ পরিস্থিতি

টানা বৃষ্টির কারণে পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি, সোনপ্রয়াগে ভারী বৃষ্টিতে ভূমিধসের কারণে কেদারনাথ থেকে ফিরছিলেন এমন ৪০ জনের বেশি তীর্থযাত্রী আটকে পড়েছিলেন। এসডিআরএফ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের নিরাপদে উদ্ধার করে।

বৃষ্টির প্রভাব শুধু যাত্রাপথে নয়, দৈনন্দিন জীবনেও পড়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। রাস্তাঘাটে ধ্বংসস্তূপ জমে যাওয়ায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। বারকোট অঞ্চলে কয়েক দিন আগে মেঘ ভাঙার ঘটনা পরিস্থিতি আরও গুরুতর করে তুলেছে।

কেদারনাথ যাত্রার ধর্মীয় গুরুত্ব

উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় অবস্থিত কেদারনাথ মন্দির ভগবান শিবকে উৎসর্গীকৃত এবং এটি চারধাম যাত্রার একটি অংশ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৫৮৩ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই মন্দিরটি ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী এখানে এসে বাবা কেদারের দর্শন করেন। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই তীর্থস্থানে পৌঁছানোর জন্য তীর্থযাত্রীদের কঠিন পার্বত্য পথ অতিক্রম করতে হয়।

প্রশাসনের আবেদন

প্রশাসন স্পষ্ট করেছে যে যাত্রী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সবার আগে। সকলকে প্রশাসনের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে, গুজব থেকে দূরে থাকতে এবং খারাপ আবহাওয়ায় ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে আবেদন জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকার এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলগুলি সম্পূর্ণ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং পরিস্থিতির উপর ক্রমাগত নজর রাখছে।

 

Leave a comment