কলকাতা ল কলেজে গণধর্ষণ: চার্জশিট দাখিল, প্রধান অভিযুক্ত টিএমসি ছাত্রনেতা

কলকাতা ল কলেজে গণধর্ষণ: চার্জশিট দাখিল, প্রধান অভিযুক্ত টিএমসি ছাত্রনেতা

কলকাতা ল কলেজের গণধর্ষণ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্র তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি।

ধর্ষণ মামলা: কলকাতা ল কলেজের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থা আলিপুর আদালতে চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে। এই ঘটনা কলেজ প্রশাসন, ছাত্র সংগঠন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

আদালতে চার্জশিট দাখিল

অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট, আলিপুরের আদালতে শনিবার এই চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এতে মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্র সহ মোট চারজনের নাম রয়েছে। মিশ্র কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং ২০২৪ সাল থেকে কলেজের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

পুলিশ আধিকারিকদের মতে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, অপহরণ, বেআইনিভাবে আটকে রাখা, প্রমাণ নষ্ট করা, তদন্তে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং অপরাধ করার ষড়যন্ত্র সহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্তরা বর্তমানে judicial custody-তে রয়েছেন।

২৫শে জুন ঘটনাটি ঘটে

ঘটনাটি ২৫শে জুনের, যখন প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী অভিযোগ করেন যে মিশ্র এবং তার দুই সহযোগী, জাইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়, সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে তাকে গণধর্ষণ করেছে। এই ঘটনা কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

কলেজ প্রশাসনের পদক্ষেপ

ঘটনার পর কলেজ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং অভিযুক্ত ছাত্র জাইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়কে কলেজ থেকে বহিষ্কার করে। মিশ্র আগে থেকেই অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মূল অভিযুক্ত টিএমসি ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত

মনোজিত মিশ্র কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) ইউনিটের প্রাক্তন সভাপতি। তবে, TMCP দাবি করেছে যে গত দুই বছর ধরে মিশ্রের সঙ্গে তাদের সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিক যোগ থাকার কারণে মামলাটি রাজনৈতিক রংও পেয়েছে।

চতুর্থ অভিযুক্ত কিভাবে ধরা পরল

প্রধান তিন অভিযুক্তকে ২৬শে জুন গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন কলেজের নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, তিনি ভুক্তভোগীকে সাহায্য করেননি এবং অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের ঘর ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন।

ভুক্তভোগীর জন্য ন্যায়বিচারের দাবি

ভুক্তভোগীর পরিবার ও কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। তারা বলছেন, কলেজের মতো নিরাপদ স্থানে এমন ঘটনা ঘটায় সকলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলায় প্রযুক্তিগত, বৈজ্ঞানিক ও পরিস্থিতিগত প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। এই প্রমাণের ভিত্তিতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এখন আদালতে বিচার হবে এবং ভুক্তভোগীকে ন্যায়বিচার দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

Leave a comment