পুরুষত্বহীনতা থেকে অকাল বীর্যপাত সারাতে পারে গ্রামবাংলার আগাছা কন্টিকারি!

পুরুষত্বহীনতা থেকে অকাল বীর্যপাত সারাতে পারে গ্রামবাংলার আগাছা কন্টিকারি!

অবহেলিত ঝোপঝাড়ের অমূল্য ভেষজ

গ্রামের রাস্তার ধারে কিংবা খেতের পাশে গজানো কাঁটাওয়ালা গাছ কন্টিকারি। সাধারণত এটিকে আগাছা মনে করে উপড়ে ফেলা হয়। কিন্তু আয়ুর্বেদ বলছে, এই গাছই হতে পারে শরীরের নানা সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান। উজ্জ্বল হলুদ ফুলে ভরা এই ঝোপঝাড়কে সত্যানাশি বা কাঁটাযুক্ত আফিম নামেও চেনেন অনেকে।

যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে আশ্চর্য গুণ

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা জানান, কন্টিকারি পুরুষদের যৌনশক্তি বাড়াতে বিশেষভাবে কার্যকর। পুরুষত্বহীনতা, দুর্বলতা থেকে শুরু করে অকাল বীর্যপাতের মতো সমস্যার চিকিৎসায় বহু বছর ধরে এই গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। পাতার রস বা কাণ্ডের নির্যাস নিয়মিত খেলে দেহে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অনেকে এটিকে ‘ন্যাচারাল ভায়াগ্রা’ বলেও অভিহিত করেন।

আয়ুর্বেদাচার্যের মতামত

আয়ুর্বেদাচার্য ডঃ পীযূষ মহেশ্বরী বলেন, সঠিক মাত্রায় কন্টিকারির নির্যাস সেবন করলে অসাধারণ ফল মেলে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এর পাতা ও কাণ্ডের রস খেলে এক মাসের মধ্যেই পুরুষত্বহীনতা কাটিয়ে যৌনশক্তি বৃদ্ধি সম্ভব। এ যেন এক প্রাকৃতিক টনিক, যা শরীরের দুর্বলতা দূর করে ভেতর থেকে শক্তি জোগায়।

হজম ও শরীর শুদ্ধিতে কার্যকর

শুধু যৌন সমস্যা নয়, কন্টিকারি হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। ক্ষুধা বাড়ায়, পেটের কৃমি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। শিকড় ও পাতার ভেষজ উপাদান শরীরের ভেতর জমে থাকা বিষাক্ত উপাদান পরিষ্কার করে। ফলে শরীর হয় হালকা ও সতেজ। একইসঙ্গে শ্বাসকষ্ট ও কাশি কমাতেও এটি ব্যবহার করা হয়, বিশেষত ধুলোবালি বা দূষণে যাঁদের শ্বাসযন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে।

ত্বকের রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আয়ুর্বেদ মতে, কন্টিকারির পেস্ট বা তেল ত্বকের রোগে অত্যন্ত কার্যকর। এটি ত্বকের গভীর স্তরকে পরিষ্কার করে, সংক্রমণ প্রতিরোধ করে ও কোষ পুনরুজ্জীবিত করে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ থাকায় একে রক্ত পরিশোধক হিসেবেও ধরা হয়। নিয়মিত ব্যবহার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। চুলকানি, দাদ কিংবা সোরিয়াসিসের মতো সমস্যায় কন্টিকারি তেলের ব্যবহার আশ্চর্যজনক ফল দিতে পারে।

অন্যান্য উপকারিতা

দাঁতের ব্যথা ও মাড়ির সমস্যা কমাতে এর শিকড় ফুটিয়ে কুলকুচি করার পরামর্শ দেন আয়ুর্বেদাচার্যরা।

জ্বর, বিশেষত ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে গ্রামবাংলায় একে ব্যবহার করা হয়।

স্নায়বিক দুর্বলতা, মাথাব্যথা ও অনিদ্রার ক্ষেত্রেও এর নির্যাস কার্যকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

যদিও কন্টিকারি অলৌকিক গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ, তবে এটি অত্যন্ত শক্তিশালী প্রভাবশালীও বটে। অতিরিক্ত সেবনে মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। গর্ভবতী মহিলা, শিশু কিংবা গুরুতর রোগীরা কখনওই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি ব্যবহার করবেন না। আয়ুর্বেদিক ডাক্তারের তত্ত্বাবধানেই সঠিক উপকার মেলে।

Leave a comment