কোটার নয়াপুরা থানার কনস্টেবল খুশীরাম চৌধুরীকে গাঁজা পাচারের অভিযুক্তের সাথে বিয়ার বারে মদ্যপান করার সময় ধরা পড়ায় সাসপেন্ড করা হয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এসপি তেজস্বিনী গৌতম পদক্ষেপ নেন এবং বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
Kota: রাজস্থানের কোটা শহর থেকে পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট করার মতো একটি গুরুতর ঘটনা সামনে এসেছে। এখানে নয়াপুরা থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল খুশীরাম চৌধুরীকে একটি বিয়ার বারে গাঁজা পাচারের অভিযুক্তের সাথে মদ্যপান করতে দেখা গেছে। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হওয়ার পরে, কোটা সিটি এসপি তেজস্বিনী গৌতম অবিলম্বে কনস্টেবলকে বরখাস্ত করেন এবং বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনা পুলিশ ও অপরাধীদের মধ্যে আঁতাতের গন্ধ দিচ্ছে, যা নিয়ে পুলিশ বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে।
ভাইরাল ভিডিওতে ফাঁস আসল ঘটনা
জানা গেছে, এই ভিডিওটি ১৪ জুন ২০২৫ তারিখ রাত প্রায় ১১টার। ভিডিওতে কনস্টেবল খুশীরাম চৌধুরী এবং কাসিম নামের এক ব্যক্তি, যে NDPS আইনের অধীনে দায়ের করা একটি মামলার অভিযুক্ত, একটি স্থানীয় বিয়ার বারে একসাথে বসে মদ্যপান করছেন। ভিডিওতে দু'জনকে একই টেবিলে বসে খোলামেলা আলোচনা করতে দেখা যায়। সূত্র মারফত জানা গেছে, এটি সাধারণ আলাপ-পরিচয় ছিল না, বরং এর মধ্যে গভীর যোগসাজশের আশঙ্কা রয়েছে।
অভিযুক্ত কাসিমের বিরুদ্ধে আগে থেকেই একাধিক গুরুতর মামলা দায়ের
ভিডিওতে দেখা যাওয়া কাসিম কোনো সাধারণ ব্যক্তি নয়, একজন ধূর্ত অপরাধী। তার বিরুদ্ধে গাঁজা পাচারের সাথে জড়িত একটি মামলা NDPS আইনের অধীনে দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও, অবৈধ অস্ত্র রাখার একটি মামলাও নয়াপুরা থানায় আগে থেকেই নথিভুক্ত রয়েছে। এই ধরণের ব্যক্তির সাথে একজন পুলিশকর্মীর ঘনিষ্ঠতা কেবল নৈতিকভাবে ভুল নয়, এটি আইন ও বিভাগীয় বিধিরও গুরুতর লঙ্ঘন।
এসপি তেজস্বিনী গৌতমের পদক্ষেপ
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথেই পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। কোটা সিটি এসপি তেজস্বিনী গৌতম এই ঘটনাকে গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। তিনি কনস্টেবল খুশীরাম চৌধুরীকে অবিলম্বে বরখাস্ত করেন। এসপি বলেন, 'পুলিশ বিভাগে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর অপরাধীদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখার অনুমতি নেই। এটি কেবল বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট করে না, জনগণের বিশ্বাসও কমিয়ে দেয়।'
তদন্তের দায়িত্ব ডিএসপিকে হস্তান্তর
এসপি এই পুরো ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব ডিএসপি গঙ্গাসহায়কে দিয়েছেন, যিনি বিভাগীয় তদন্ত করে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবেন—
- কনস্টেবল খুশীরাম ও কাসিমের মধ্যে সম্পর্ক কী?
- তাদের সাক্ষাতের উদ্দেশ্য কী ছিল?
- এটি কোনো বড় ষড়যন্ত্র বা যোগসাজশের অংশ কি না?
তদন্তে এটিও স্পষ্ট করা হবে যে কনস্টেবল অভিযুক্তকে কোনো ধরনের সুরক্ষা বা তথ্য দিয়েছিলেন কি না।
পুলিশের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
এই ঘটনাটি শুধু কোটা পুলিশ নয়, পুরো রাজ্যের পুলিশ ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তুলেছে। যেখানে পুলিশকর্মীরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য নিযুক্ত, সেখানে যখন সেই উর্দিধারীরাই অপরাধীদের সাথে মেলামেশা করেন, তখন তা জনগণের বিশ্বাসে গুরুতর আঘাত হানে। স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যদি অপরাধী ও পুলিশের মধ্যে এমন ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা বজায় থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার আশা করা অর্থহীন।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজর এখন তদন্ত রিপোর্টের দিকে
পুরো ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত কনস্টেবলকে বরখাস্ত রাখা হবে এবং তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে বরখাস্ত করা থেকে শুরু করে আইনি মামলা করার মতো বিকল্পও খোলা রয়েছে।