লর্ডস টেস্টে গিল-ক্রোলির বিতর্ক: মাঠ থেকে ধারাভাষ্য কক্ষ পর্যন্ত উত্তেজনা

লর্ডস টেস্টে গিল-ক্রোলির বিতর্ক: মাঠ থেকে ধারাভাষ্য কক্ষ পর্যন্ত উত্তেজনা

লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিনে শুভমন গিল এবং জ্যাক ক্রোলির মধ্যে হওয়া বিতর্ক ম্যাচের পরিবেশ গরম করে তোলে। ক্রোলির সময় নষ্ট করার চেষ্টা নিয়ে গিল ক্ষিপ্ত হন এবং দু'জনের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। এর ওপর নাসের হুসেনের প্রতিক্রিয়া এবং দীনেশ কার্তিকের মন্তব্য বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালে।

ভারত বনাম ইংল্যান্ড, ৩য় টেস্ট, লর্ডসে: লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে খেলা ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে তৃতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে, যখন শুভমন গিল এবং জ্যাক ক্রোলির মধ্যে মাঠের মধ্যে উত্তপ্ত বাদানুবাদ হয়। এই ঘটনা কেবল খেলোয়াড়দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ধারাভাষ্য কক্ষেও পৌঁছে যায়, যেখানে নাসের হুসেনের একটি মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করে।

বিবাদের সূত্রপাত: পঞ্চম বলে ক্রোলির আচরণ

দিনের শেষ ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহ বোলিং করছিলেন এবং জ্যাক ক্রোলি স্ট্রাইকে ছিলেন। বুমরাহর পঞ্চম বল ক্রোলির গ্লাভসে লাগে, এর পরে তিনি আহত হওয়ার ভান করে ফিজিওকে ডাকার ইঙ্গিত দেন। শুভমন গিলের মনে হয় এটা সময় নষ্ট করার চেষ্টা এবং তিনি ক্রোলির কাছে গিয়ে তাকে ধমক দিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

খেলোয়াড়দের প্রতিক্রিয়া এবং আম্পায়ারের হস্তক্ষেপ

গিলের প্রতিক্রিয়ার পরে, ভারতীয় ফিল্ডাররা তালি দিয়ে ক্রোলির এই আচরণের প্রতি ব্যঙ্গাত্মক প্রতিক্রিয়া জানায়। পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং আম্পায়ারকে দু'জন খেলোয়াড়কে শান্ত করতে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান বেন ডাকেটও গিলের কাছে এসে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। অবশেষে, আম্পায়ারের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

নাসির হোসেনের ধারাভাষ্য থেকে বিতর্ক বাড়ে

ঘটনার সময় স্কাই স্পোর্টসে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় প্রাক্তন ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেন বলেন, 'ক্রোলির গ্লাভসে বল লেগেছিল, তিনি ঠিকই করেছেন ফিজিওকে ডেকেছেন।' এর ওপর ভারতীয় ধারাভাষ্যকার দীনেশ কার্তিক সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন করেন, 'আপনি কি বললেন ফিজিওকে ডাকা ঠিক ছিল?' এটি ছিল একটি মজার প্রশ্ন, তবে এটি পরিস্থিতি আরও গরম করে তোলে।

মাঠ থেকে ধারাভাষ্য কক্ষ পর্যন্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে

দীনেশ কার্তিক এবং নাসের হোসেনের মধ্যে এই কথোপকথন কেবল মজা হিসেবে নেওয়া হয়নি। ক্রিকেট প্রেমীরা এটিকে গুরুত্ব সহকারে নেয় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক শুরু হয়। অনেক ভারতীয় সমর্থক গিলের সমর্থন করে এবং বলে যে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করছিল। অন্যদিকে, ইংল্যান্ডের সমর্থকরা ক্রোলিকে সমর্থন করে এবং গিলকে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য অভিযুক্ত করে।

গিলের আক্রমণাত্মক মেজাজ: নতুন নেতৃত্বের ঝলক

শুভমন গিলের এই মনোভাব দেখায় যে তিনি মাঠে কতটা আবেগপ্রবণ এবং তার দলের জন্য কতটা সচেতন। অধিনায়ক হিসেবে এটি তার নতুন রূপ, যেখানে তিনি কেবল কৌশলগতভাবে শক্তিশালী দেখাচ্ছেন না, বরং প্রতিপক্ষের প্রতিটি চালের জবাবও একই স্টাইলে দিচ্ছেন। এই ঘটনা গিলের অধিনায়কত্ব ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলিতে তার দৃঢ়তাকে তুলে ধরে।

খেলাধুলার মনোভাব বনাম কৌশল: বিতর্ক অব্যাহত

ক্রোলির ফিজিও ডাকার ঘটনা নিয়ে দুটি দল তৈরি হয়েছে। এক পক্ষের বক্তব্য, আঘাত পেলে ফিজিও ডাকা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যেখানে অন্য পক্ষ এটিকে সময় নষ্ট করার কৌশল হিসেবে দেখছে। এই বিতর্কটি তুলে ধরেছে যে টেস্ট ক্রিকেটে এখন স্কোরবোর্ডের রান এবং উইকেটের মতোই মনস্তাত্ত্বিক খেলার গুরুত্ব রয়েছে।

Leave a comment