তৃতীয় টেস্টের শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের টাইম ওয়েস্টিং (সময় নষ্ট করা) কৌশল নিয়ে শুভমন গিল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং জ্যাক ক্রলির সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, যার ফলে মাঠে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ভারত বনাম ইংল্যান্ড: ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে খেলা হওয়া তৃতীয় টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিনের সমাপ্তি সাধারণত টেস্ট ক্রিকেটে যেমন দেখা যায়, তেমন হয়নি। ম্যাচটি যেমন উত্তেজনাপূর্ণ ছিল, তেমনই আকর্ষণীয় ছিল তৃতীয় দিনের শেষ কয়েক মিনিটের ঘটনা। ভারতীয় অধিনায়ক শুভমন গিল এবং ইংল্যান্ডের ওপেনার জ্যাক ক্রলির মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ দর্শকদের হতবাক করে দেয়।
প্রথম ইনিংসে সমতা, ম্যাচ হয় হাইভোল্টেজ
লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে অনুষ্ঠিত এই টেস্টে উভয় দল প্রথম ইনিংসে ৩৮৭-৩৮৭ রান করে ম্যাচটিকে সম্পূর্ণভাবে সমতায় এনেছিল। ইংল্যান্ডের হয়ে জো রুট সেঞ্চুরি করেন, যেখানে ভারতের হয়ে কে এল রাহুল অসাধারণ ইনিংস খেলেন। তৃতীয় দিনের খেলা শেষের ঠিক আগে ইংল্যান্ড দল দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামে, কিন্তু এর সঙ্গেই শুরু হয় সেই নাটক, যা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে খেলার জগৎ পর্যন্ত আলোড়ন সৃষ্টি করে।
বুমরাহর ওভারে শুরু হয় চালবাজি
ভারতের হয়ে জাসপ্রিত বুমরাহ তৃতীয় দিনের শেষ ওভারটি করার দায়িত্ব নেন। ইংল্যান্ডের ইনিংস শুরু করেন জ্যাক ক্রলি এবং বেন ডাকেট। যখন বুমরাহ ওভার শুরু করতে প্রস্তুত ছিলেন, তখন জ্যাক ক্রলি ইচ্ছাকৃতভাবে স্ট্রাইক নিতে দেরি করতে শুরু করেন। তিনি ব্যাটিং পজিশন নিলেন না এবং বারবার মাঠ থেকে সরে যেতে দেখা গেল। এটা স্পষ্টতই খেলার গতি কমানোর চেষ্টা ছিল, যাতে ইংল্যান্ডকে বেশি বল খেলতে না হয়।
মাঠ থেকে দৌড়ে পালালেন ক্রলি, গিলের রাগ
বুমরাহর দুটি বলের পরে, ক্রলি দুটি রান নিলেন, কিন্তু এর পরেই তিনি দৌড়ে মাঠের বাইরে চলে যান। এই আচরণ ভারতীয় খেলোয়াড়দের ভালো লাগেনি। শুভমন গিল, যিনি সেই সময়ে স্লিপে দাঁড়িয়ে ছিলেন, উচ্চস্বরে কিছু কথা বলেন, যা ইংলিশ শিবিরে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপরে বুমরাহ তৃতীয় ও চতুর্থ বল করেন, কিন্তু ক্রলি বারবার ক্রিজ থেকে সরতে থাকেন এবং সময় নষ্ট করতে থাকেন।
পঞ্চম বলে আঘাত এবং ভারতীয় খেলোয়াড়দের করতালি
পঞ্চম বল বুমরাহ শর্ট ফেলেন যা সরাসরি ক্রলির গ্লাভসে লাগে। তিনি কিছুটা অস্বস্তি বোধ করেন এবং ফিজিওকে ডাকা হয়। এই সময়ে ভারতীয় খেলোয়াড়রা হাততালি দিতে শুরু করেন, যা ইংল্যান্ডের জন্য একটি মানসিক চাপ তৈরি করে। এই পরিস্থিতিতে শুভমন গিল সরাসরি জ্যাক ক্রলির কাছে যান এবং কিছু কড়া কথা বলেন। ক্রলিও জবাব দিতে পিছপা হননি। উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করার জন্য বেন ডাকেটকে আসতে হয়।
ভারতীয় দল ঐক্যবদ্ধ, অধিনায়কের সঙ্গে
গিলের এই প্রতিক্রিয়ার পরে, ভারতীয় দল সম্পূর্ণভাবে তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসে। কোহলি, সিরাজ, এবং রবীন্দ্র জাদেজাসহ বাকি খেলোয়াড়রাও সেখানে পৌঁছান এবং ইংরেজ খেলোয়াড়দের ঘিরে ধরেন। যদিও বিষয়টি বেশিদূর গড়ায়নি, তবে এই দৃশ্যটি মাঠে এক বিশেষ ধরনের শক্তি নিয়ে আসে। গিলের এই পদক্ষেপ স্পষ্টভাবে দেখায় যে তিনি কেবল একজন তরুণ অধিনায়কই নন, বরং দলকে নেতৃত্ব দিতেও পিছপা নন।
অবশেষে ওভার শেষ, কিন্তু প্রশ্নগুলি রয়েই গেল
বুমরাহ শেষ বলটি করে দিনের খেলা শেষ করেন। ইংল্যান্ড এক ওভারে মাত্র দুটি রান করে, যা জ্যাক ক্রলির ব্যাট থেকে আসে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ইংল্যান্ডের এই টাইম ওয়েস্টিং কৌশল কি সঠিক ছিল? টেস্ট ক্রিকেটের मर्यादाগুলি কি এই ধরনের চালের দ্বারা ভাঙা হচ্ছে?