মধ্য প্রদেশে লাভ জিহাদ: সচেতনতা অভিযানে সরকার, মহিলাদের সংকল্প

মধ্য প্রদেশে লাভ জিহাদ: সচেতনতা অভিযানে সরকার, মহিলাদের সংকল্প

মধ্য প্রদেশে 'লাভ জিহাদ'-এর ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলি সরকারকে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। এই গুরুতর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাখী বন্ধনের বিশেষ মুহূর্তে ভোপালে সরকার একটি বৃহৎ জনসচেতনতা অভিযান চালাতে চলেছে।

Love Jihad: মধ্য প্রদেশ সরকার 'লাভ জিহাদ'-এর ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে একটি ব্যাপক জনসচেতনতা অভিযান শুরু করেছে। রাজ্যের ক্রীড়া ও সমবায় মন্ত্রী বিশ্বাস কৈলাস সারঙ্গ রাখী বন্ধনের প্রাক্কালে ভোপালে মহিলাদের হাতে রাখী পরিয়ে 'লাভ জিহাদ'-এর বিরুদ্ধে সংকল্প করিয়েছেন। এই অভিযানের আওতায় মহিলারা শুধুমাত্র 'লাভ জিহাদ'-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সংকল্প নিচ্ছেন না, বরং এর মোকাবিলা করার জন্য ফর্মও পূরণ করছেন, যা সরকারকে এই গুরুতর বিষয়ে আরও ভালোভাবে ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে।

মধ্য প্রদেশে 'লাভ জিহাদ'-এর বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে অভিযান

মধ্য প্রদেশে 'লাভ জিহাদ'-এর ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে, যার কারণে রাজ্য সরকারকে রাস্তায় নেমে এই গুরুতর সমস্যার মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। রাখী বন্ধন উপলক্ষে আয়োজিত এই বিশেষ অভিযানে হাজার হাজার মহিলা অংশ নিয়েছেন, যেখানে মন্ত্রী বিশ্বাস সারঙ্গ মহিলাদের 'লাভ জিহাদ' থেকে নিজেদের রক্ষা করতে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই করার সংকল্প করিয়েছেন। এই সময় মহিলারা শুধুমাত্র রাখী পরাননি, 'লাভ জিহাদ'-এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালানোরও অঙ্গীকার করেছেন।

'লাভ জিহাদ' কী এবং মধ্য প্রদেশের পরিস্থিতি?

'লাভ জিহাদ' একটি বিতর্কিত বিষয়, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে কিছু সংগঠিত গোষ্ঠী ধর্ম পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে প্রেমের ছলনা করে। মধ্য প্রদেশে এই বিষয়টি বিশেষভাবে সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে, যেখানে ২৭ মার্চ, ২০২১ তারিখে ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন লাগু করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও রাজ্যে 'লাভ জিহাদ'-এর ঘটনা থামার কোনও লক্ষণ নেই।

মধ্য প্রদেশ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব জানিয়েছেন যে এ পর্যন্ত ২৮৩টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৪টি মামলা নাবালিকা মেয়েদের সাথে সম্পর্কিত। সবচেয়ে বেশি মামলা ইন্দোর (৫৮) এবং ভোপালে (৩৩) দেখা গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে শহরগুলিতে পড়াশোনা বা চাকরির জন্য আসা তরুণীরা বেশি নিশানা হচ্ছেন।

মন্ত্রী বিশ্বাস সারঙ্গ কী বলেছেন?

বিশ্বাস সারঙ্গ মহিলাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, তাঁরা যেন এই লড়াইয়ে সরকারের পাশে থাকেন এবং তাঁদের পরিবার ও সমাজকে এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতন করেন। তিনি বলেন, “আমাদের লড়াই কেবল আইনি পদক্ষেপের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আমাদের ঘরে ঘরে গিয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে, যাতে কোনও হিন্দু মেয়ে 'লাভ জিহাদ'-এর জালে পা না দেয়।”

মন্ত্রী আরও জানান, এই অভিযানের আওতায় মহিলাদের ফর্ম পূরণ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে তাঁদের অভিযোগ সরকারের কাছে পৌঁছতে পারে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

মহিলাদের সংকল্প ও সচেতনতা

রাখী পরাতে আসা মহিলারা এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন যে তাঁরা এই লড়াইয়ে সরকারের সাথে আছেন। মহিলারা জানাচ্ছেন যে 'লাভ জিহাদ'-এর ঘটনা কতটা বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে এবং কেন এটি বন্ধ করা জরুরি। তাঁরা সংকল্প নিয়েছেন যে তাঁরা তাঁদের আশেপাশের লোকদেরও এই বিপদ সম্পর্কে অবগত করবেন।

মধ্য প্রদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন লাগু হওয়ার পরেও 'লাভ জিহাদ'-এর ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে মেয়েদের ফাঁদে ফেলে তাদের যৌন শোষণ করার ঘটনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শহুরে এলাকায় দেখা যাচ্ছে। এই সমস্যা শুধু একটি সামাজিক সমস্যা নয়, আইনগতভাবেও গুরুতর।

Leave a comment