মধ্যপ্রদেশ মহিলা কমিশন: ৬ বছর ধরে অধ্যক্ষ নেই, ২৬ হাজার মামলা বিচারাধীন

মধ্যপ্রদেশ মহিলা কমিশন: ৬ বছর ধরে অধ্যক্ষ নেই, ২৬ হাজার মামলা বিচারাধীন

মধ্যপ্রদেশ মহিলা কমিশনে अध्यক্ষের পদ ৬ বছর ধরে খালি। ২৬ হাজার মামলা বিচারাধীন। মন্ত্রী নির্মলা ভুরিয়া বলেছেন, আদালতে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পরেই দ্রুত পদ পূরণ করা হবে এবং কার্যপ্রণালী সঠিক করা হবে।

MP News: মধ্যপ্রদেশ রাজ্য মহিলা কমিশনে প্রায় ৬ বছর ধরে অধ্যক্ষের পদ খালি রয়েছে। এর ফলে কমিশনের কার্যপ্রণালী প্রভাবিত হয়েছে এবং মহিলাদের অভিযোগের নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কমিশনের কাছে বর্তমানে প্রায় ২৬ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলাগুলিতে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ, অত্যাচার এবং অন্যান্য অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

রাজ্যের মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রী নির্মলা ভুরিয়া স্বীকার করেছেন যে, কমিশনে অধ্যক্ষের পদ দীর্ঘ সময় ধরে খালি থাকার কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, আদালতে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পরেই দ্রুত এই পদ পূরণ করা হবে।

মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে বৃদ্ধি

মধ্যপ্রদেশ সরকার সম্প্রতি বিধানসভার বাদল অধিবেশনে পরিসংখ্যান পেশ করেছে। ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ২০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত রাজ্যে ১০ হাজার ৮৪০টি ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সময়ে, ২১ হাজার ১৭৫ জন মহিলা এক মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছেন।

এই পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে, রাজ্যে প্রতিদিন প্রায় ২০টি ধর্ষণের ঘটনা এবং ৩৮ জন মহিলার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মহিলা কমিশনের ভূমিকার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

কমিশনের গঠন এবং অধ্যক্ষের পদ শূন্য থাকা

মধ্যপ্রদেশ রাজ্য মহিলা কমিশন সাত সদস্যের একটি প্যানেল। এতে ছয় জন সদস্য সরকারের বাইরের এবং একজন সদস্য সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হন। কমিশনের অধ্যক্ষের পদ ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে খালি রয়েছে। সাগরের বর্তমান লোকসভা সদস্য লতা ওয়াংখেড়ে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কমিশনের অধ্যক্ষা ছিলেন। এর পরে এই পদ প্রায় এক বছর ধরে খালি ছিল। ২০২০ সালের ১৬ মার্চ তৎকালীন কমলনাথ সরকার কংগ্রেস নেত্রী শোভা ওঝাকে কমিশনের অধ্যক্ষা হিসেবে নিযুক্ত করেন।

কিন্তু ২০২০ সালের ২০ মার্চ কমলনাথ সরকার পড়ে গেলে, শিবরাজ সিং চৌহানের বিজেপি সরকার ওঝার নিয়োগ বাতিল করে দেয়। এর পরে ওঝা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট ২০২২ সালের ২২ মে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।

অধ্যক্ষের পদত্যাগ এবং কমিশনের কাজকর্ম ব্যাহত

জুন ২০২২-এ শোভা ওঝা তৎকালীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে পদ থেকে ইস্তফা দেন। তিনি বলেন যে, তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি এবং নানা বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। ওঝা অভিযোগ করেন যে, অধ্যক্ষের পদ দীর্ঘ সময় ধরে খালি থাকার কারণে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের শুনানি প্রভাবিত হয়েছে। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতি রাজ্য সরকারের মহিলাদের প্রতি অসবেদনশীলতাকে দর্শায়।

মন্ত্রী নির্মলা ভুরিয়ার বক্তব্য

সংবাদ সংস্থা থেকে সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী নির্মলা ভুরিয়া বলেছেন, "রাজ্য মহিলা কমিশনের অধ্যক্ষের পদ দীর্ঘ সময় ধরে খালি রয়েছে। আমরা এটি দ্রুত পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে, তবে এর পরেই প্রক্রিয়া দ্রুত করা হবে।" ভুরিয়া এও স্বীকার করেছেন যে, পদ খালি থাকার কারণে অনেক অভিযোগ বিচারাধীন রয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হচ্ছে।

মহিলাদের জন্য কমিশনের ভূমিকা

মহিলাদের অধিকার রক্ষা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের অভিযোগের নিষ্পত্তি করার জন্য মহিলা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু অধ্যক্ষ না থাকায় কমিশনের বৈঠক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কমিশনের সদস্যদের যৌথ বেঞ্চ ২০২০ সাল থেকে কোনো বৈঠক করেনি।

শোভা ওঝা দাবি করেছেন যে, মহিলারা আজও তাঁর কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের সাহায্য করেন। তিনি বলেন যে, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশ দেশের প্রথম পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে রয়েছে।

Leave a comment