লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বলেছেন যে, আইনের শাসন এবং এর কার্যকর প্রয়োগই অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল ভিত্তি। তিনি আরও বলেছেন যে, ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য এই উপাদানটি অত্যন্ত জরুরি।
নয়াদিল্লি: লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লা (Om Birla) শুক্রবার বলেছেন যে, আইনের শাসন (Rule of Law) এবং এর কার্যকর প্রয়োগ ভারতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ভিত্তি। তিনি আরও বলেছেন যে, যদি ভারতকে ২০৪৭ সালের মধ্যে “উন্নত রাষ্ট্রে” (Developed India 2047 Vision) পরিণত করতে হয়, তাহলে আইনের শাসন এবং একটি শক্তিশালী প্রশাসনিক ব্যবস্থা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি ভারতীয় পুলিশ পরিষেবা (IPS)-এর ৭৭তম আরআর ব্যাচের কর্মকর্তাদের জন্য সংসদীয় গণতন্ত্র গবেষণা ও প্রশিক্ষণ সংস্থা (PRIDE) দ্বারা আয়োজিত দুই দিনের “এপ্রিসিয়েশন কোর্স”-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই কথাগুলি বলছিলেন।
আইনের শাসনই উন্নয়নের আত্মা — ওম বিড়লা
লোকসভা অধ্যক্ষ বলেছেন,
'আইনের শাসন এবং এর কার্যকর প্রয়োগ অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল ভিত্তি। আইনসভা দ্বারা প্রণীত আইন ও নীতিগুলি তখনই অর্থবহ হতে পারে, যখন বেসামরিক কর্মচারী এবং পুলিশ কর্মকর্তারা সেগুলিকে সততার সঙ্গে প্রয়োগ করেন।'
তিনি তরুণ আইপিএস কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন যে, তাঁরা তাঁদের কর্তব্য পালনের সময় প্রতিটি সিদ্ধান্তে সংবিধানের মর্ম (Spirit of the Constitution) প্রতিফলিত করুন। সংবিধান কেবল একটি দলিল নয়, এটি ভারতের গণতন্ত্র এবং বিচার ব্যবস্থার আত্মা। এর প্রতিটি অনুচ্ছেদে জনসেবার অনুভূতি নিহিত রয়েছে, যা আমাদের কাজের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করতে হবে।
তরুণ আইপিএস কর্মকর্তাদের 'উৎসর্গীকরণের' বার্তা
ওম বিড়লা দেশের তরুণ আইপিএস কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন যে, তাঁদের কর্তব্যকে কেবল দায়িত্ব হিসেবে না দেখে, একটি “জনসেবার সুযোগ” হিসেবে দেখা উচিত। আপনাদের সিদ্ধান্ত এবং কাজ জনগণের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই, আপনাদের মধ্যে সেবা এবং উৎসর্গীকরণের মনোভাব বজায় থাকা উচিত।

তিনি বলেছেন যে, একজন সত্যিকারের কর্মকর্তার জন্য সততা, স্বচ্ছতা এবং দেশপ্রেমই সবচেয়ে বড় পুঁজি। যে কর্মকর্তা জনগণের প্রতি নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করেন, তিনিই জনগণের বিশ্বাস ও সম্মান অর্জন করেন। এটাই আসল অর্জন।
সংবিধানের মর্ম হোক পথপ্রদর্শক
লোকসভা অধ্যক্ষ ভারতীয় সংবিধানের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন যে, সংবিধান সভা বছরের পর বছর গভীর আলোচনা ও বিতর্কের পর এমন একটি দলিল তৈরি করেছে, যা আজও কেবল ভারতের জন্যই নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস। আমাদের সংবিধান ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সমতা এবং ভ্রাতৃত্বের নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এটিকে সঠিক অর্থে প্রয়োগ করাই আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।
তিনি তরুণ কর্মকর্তাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁদের আচরণে ড. ভীমরাও আম্বেদকর দ্বারা প্রতিপাদিত জনসেবার মনোভাব প্রতিফলিত হওয়া উচিত। বাবা সাহেব আম্বেদকর যে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সমতার ধারণা করেছিলেন, তা বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত পরিষেবাগুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের লক্ষ্য
বিড়লা বলেছেন যে, ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’ (Viksit Bharat 2047) হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য আইনের শাসন, সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং নাগরিকদের বিশ্বাস সবচেয়ে জরুরি উপাদান। যখন প্রশাসনিক ব্যবস্থা সততা ও নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করবে, তখনই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেছেন যে, গণতন্ত্রের ভিত্তি তখনই শক্তিশালী হবে যখন আইন ও বিচারের ধারণা সাধারণ নাগরিকদের কাছে পৌঁছাবে। আইন মানা কেবল শাস্তির ভয়ে নয়, বরং নৈতিক দায়িত্বের অনুভূতি থেকে হওয়া উচিত। এটাই হবে উন্নত ভারতের পরিচয়।
 
                                                                        
                                                                             
                                                











