মহারাষ্ট্রের সব স্কুলে বন্দে মাতরম বাধ্যতামূলক: ১৫০ বছর পূর্তিতে ফড়নবিস সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত

মহারাষ্ট্রের সব স্কুলে বন্দে মাতরম বাধ্যতামূলক: ১৫০ বছর পূর্তিতে ফড়নবিস সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত
সর্বশেষ আপডেট: 3 ঘণ্টা আগে

মহারাষ্ট্রের ফড়নবিস সরকার একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীত ‘বন্দে মাতরম’-এর সম্পূর্ণ গান বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি স্বর্গীয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত এই অমর সঙ্গীতটির ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে। 

মুম্বাই: মহারাষ্ট্র সরকার একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীত ‘বন্দে মাতরম’-এর সম্পূর্ণ গান বাধ্যতামূলক করেছে। এই সিদ্ধান্তটি স্বর্গীয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত এই অমর সঙ্গীতটির রচনার ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে। সরকার কর্তৃক জারি করা আদেশ অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিদ্যালয়গুলিতে সাধারণত ‘বন্দে মাতরম’-এর কেবল প্রথম দুটি পদই গাওয়া হতো। 

কিন্তু ৩১ অক্টোবর ২০২৫ (কার্তিক শুক্লা নবমী)-এ এই গানটির রচনার ১৫০ বছর পূর্ণ হওয়ায় সমস্ত বিদ্যালয়ে এর সম্পূর্ণ গান করা হবে। এই পদক্ষেপটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম এবং সাংস্কৃতিক গর্বের অনুভূতিকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে ‘বন্দে মাতরম’ অভিযান

সরকারি আদেশ অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিদ্যালয়গুলিতে সাধারণত কেবল ‘বন্দে মাতরম’-এর প্রথম দুটি পদ গাওয়া হতো। কিন্তু এই বছর গানটির ১৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সমস্ত বিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ ‘বন্দে মাতরম’ গানটি গাওয়া হবে। এই অভিযানের অধীনে স্কুলগুলিতে প্রতিদিন জাতীয় সঙ্গীতটির সম্পূর্ণ গান করানো হবে। একই সাথে, শিক্ষার্থীদের এই গানটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, রচনার প্রসঙ্গ এবং এর সাথে জাতীয়তাবাদের সম্পর্ক বোঝানোর জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।

মহারাষ্ট্র সরকার শিক্ষা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে যে অভিযানের সময় স্কুলগুলিতে ‘বন্দে মাতরম’-এর ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে প্রদর্শনী স্থাপন করা হোক। এর উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের জাতীয় সঙ্গীতের উৎপত্তি, লেখকের ভূমিকা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে এর অবদান সম্পর্কে সচেতন করা। এই প্রদর্শনীতে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এই গানটির ভূমিকা, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবন, এবং ‘বন্দে মাতরম’-এর অনুপ্রেরণার সাথে সম্পর্কিত চিত্র, পোস্টার এবং ঐতিহাসিক নথি প্রদর্শন করা হবে।

শিক্ষা বিভাগে পাঠানো হলো আনুষ্ঠানিক পরিপত্র

সরকার এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত আনুষ্ঠানিক পরিপত্র শিক্ষা বিভাগে পাঠিয়েছে। এতে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বরের মধ্যে এই অভিযানটি প্রতিটি স্কুলে সক্রিয়ভাবে বাস্তবায়িত করা হোক। রাজ্য সরকার এও স্পষ্ট করেছে যে এই উদ্যোগটি কেবল সরকারি স্কুলগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সমস্ত বেসরকারি, সাহায্যপ্রাপ্ত এবং স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলির বিদ্যালয়েও এটি বাস্তবায়িত হবে।

‘বন্দে মাতরম’ গানটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৫ সালে রচনা করেছিলেন, যা পরে তাঁর বিখ্যাত রচনা ‘আনন্দমঠ’-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই গানটি স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ভারতীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের এক নতুন ঢেউ তুলেছিল। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় ‘বন্দে মাতরম’ দেশপ্রেমের প্রতীকে পরিণত হয়। পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর মতো নেতারাও এই গানটির গুরুত্ব স্বীকার করেছিলেন।

Leave a comment