মহারাষ্ট্রে ভোটার তালিকা দুর্নীতি: নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আবু আজমি

মহারাষ্ট্রে ভোটার তালিকা দুর্নীতি: নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আবু আজমি

মহারাষ্ট্রে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ তুললেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আবু আজমি। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অবিলম্বে নিরীক্ষা ও জবাবদিহি চেয়েছেন তিনি।

Maharashtra: সমাজবাদী পার্টি (সপা)-র বর্ষীয়ান নেতা আবু আজমি মহারাষ্ট্রের ভোটার তালিকা নিয়ে বড় দাবি করেছেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বলেছেন, শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ভোটার তালিকায় কারচুপি করা হয়েছে। আজমি দাবি করেছেন, এই পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ভোটার তালিকার নিরীক্ষা করানো হোক।

ভোটার তালিকায় গরমিলের গুরুতর অভিযোগ

আবু আজমি, যিনি সপা-র মহারাষ্ট্র ইউনিটের সভাপতিও, তিনি বলেছেন যে মানখুর্দ-শিবাজি নগর বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের ছয় মাস আগে বৈধ ভোটারদের নাম যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁদের নাম সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁদের জায়গায় এমন লোকেদের নাম যুক্ত করা হয় যাঁরা ওই অঞ্চলের বাসিন্দা নন। তিনি বলেছেন, এটা সরাসরি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

বিজেপির প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

আজমি নির্বাচন কমিশনের বিজেপি-র প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখানোরও অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক। তিনি বলেছেন, কমিশনের উচিত তাদের ভূমিকা নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছভাবে পালন করা যাতে সাধারণ মানুষের আস্থা বজায় থাকে।

নির্বাচনী ফলাফলের উপর প্রভাবের দাবি

আজমি দাবি করেছেন, ২০২৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অনেক বর্ষীয়ান নেতা শুধুমাত্র এই কারচুপির কারণে হেরে গেছেন। তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চ্যাভান এবং কংগ্রেস নেতা বালাসাহেব থোরাটের উদাহরণ দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে এটা একটা সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। তিনি বলেন, ভোটার তালিকা সঠিক থাকলে ফলাফল অন্যরকম হতে পারত।

নির্বাচন কমিশনের কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন

আজমি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিজেদের কার্যপদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, "যদি নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানের উপর থেকে মানুষের ভরসা উঠে যায়, তাহলে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে যাবে।" তিনি জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তারা কমিশনের কার্যপদ্ধতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামুক।

জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি

আবু আজমি এই পুরো ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, যদি ভোটার তালিকায় ইচ্ছাকৃতভাবে গরমিল করা হয়ে থাকে, তাহলে এতে জড়িত আধিকারিক ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুচিতা বজায় রাখার জন্য এই ধরনের অনিয়মগুলো বন্ধ করা খুবই জরুরি।

উদয়পুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে আজমির বিতর্কিত মন্তব্য

এর আগে আবু আজমি ২০২২ সালের উদয়পুর শিরশ্ছেদ মামলা নিয়েও আলোচনায় ছিলেন। তিনি এই ঘটনাকে পয়গম্বর মহম্মদের বিরুদ্ধে করা অপমানজনক মন্তব্যের "প্রতিক্রিয়া" বলেছিলেন। তাঁর এই বয়ান "উদয়পুর ফাইলস" সিনেমা মুক্তির পর এসেছিল। এই সিনেমাটি দর্জি কানহাইয়ালালের হত্যার উপর ভিত্তি করে তৈরি।

কানহাইয়ালাল হত্যা মামলার পটভূমি

উল্লেখ্য, জুন ২০২২-এ উদয়পুরে দর্জি কানহাইয়ালালের দোকানে দুই ব্যক্তি তাঁকে হত্যা করে। অভিযোগ রয়েছে যে তিনি বিজেপি-র প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে একটি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন। এই ঘটনা পুরো দেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল এবং এটিকে জঙ্গি ষড়যন্ত্র বলা হয়েছিল।

Leave a comment