পুরুষদের স্বাস্থ্যে নীরব ঘাতক রোগের বৃদ্ধি

পুরুষদের স্বাস্থ্যে নীরব ঘাতক রোগের বৃদ্ধি

বিশ্বজুড়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি সত্ত্বেও, কিছু রোগে পুরুষদের মৃত্যুর ঝুঁকি মহিলাদের তুলনায় বেশি। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং এইচআইভি/এইডসের মতো রোগের কারণে পুরুষদের মৃত্যুর হার বেশি। শুধু শারীরিক কারণ নয়, সামাজিক অভ্যাস ও মানসিক মনোভাবও এই সমস্যার মূল কারণ।

অভ্যাস ও আচরণে স্বাস্থ্যের প্রভাব

পুরুষরা বেশি ধূমপান, মদ্যপান এবং অনিরাপদ যৌন মিলনের প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া, রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে উপেক্ষা করা, ডাক্তারের কাছে দেরিতে যাওয়া এবং অসম্পূর্ণ চিকিৎসা নেওয়া পুরুষদের জন্য ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যুর হার বেশি।

কেন পুরুষদের ঝুঁকি বেশি?

গবেষণায় দেখা গেছে, ৮৬% দেশে পুরুষরা মহিলাদের তুলনায় বেশি ধূমপান করেন, যা রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। পুরুষদের মধ্যে মদ্যপানের হারও বেশি। এছাড়াও, অসুরক্ষিত যৌন মিলনের কারণে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

নীরব ঘাতক: উচ্চ রক্তচাপ

উচ্চ রক্তচাপ প্রায়শই লক্ষণহীন থাকে, তাই একে “নীরব ঘাতক” বলা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ প্রকাশ পায় না, এবং চিকিৎসা বিলম্বিত হলে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে। পুরুষদের মধ্যে এই রোগের প্রাথমিক অবস্থায়ই মারাত্মক প্রভাব দেখা যায়।

ডায়াবেটিস: দেরিতে শনাক্ত হওয়ার বিপদ

অনেক পুরুষ ডায়াবেটিসের কারণে মারা যান, কারণ রোগ নির্ণয় অনেক সময় দেরিতে হয় এবং সময় মতো ওষুধ খাওয়া হয় না। চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা, ওষুধের খাওয়ার নিয়ম না মানা, পুরুষদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রভাবকে আরও গুরুতর করে তোলে।

এইচআইভি/এইডস: অচেনা ঝুঁকি

পুরুষদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ এবং এইডসে মৃত্যুর হার বেশি। ৫৬% দেশে পুরুষদের মধ্যে এইচআইভি প্রকোপ বেশি এবং ৬৪% দেশে এইডসে মৃত্যুর হার বেশি। পরীক্ষার অভাব, চিকিৎসা এড়ানো এবং সচেতনতার ঘাটতি এই সমস্যার মূল কারণ।

স্বাস্থ্যসেবা এড়ানোর মানসিক ও সামাজিক কারণ

পুরুষদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা এড়ানোর পেছনে রয়েছে মানসিক ও সামাজিক বাধা। অনেকেই মনে করেন, ডাক্তারের কাছে যাওয়া দুর্বলতার পরিচয়। কাজ ও দায়িত্বের কারণে চেকআপ স্থগিত রাখাও সাধারণ প্রবণতা। সমাজে এমন ধারণা আছে যে, “পুরুষ অসুস্থ হন না,” ফলে সচেতনতার ঘাটতি দেখা দেয়।

কীভাবে স্বাস্থ্য রক্ষা করবেন?

পুরুষদের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য বিশেষ কিছু পরামর্শ:

বছরে একবার সম্পূর্ণ শরীরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।

ধূমপান এবং মদ্যপান কমিয়ে দিন বা পুরোপুরি ত্যাগ করুন।

সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন এবং প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।

Leave a comment