ভারতীয় ক্রিকেট দলের পেসার মোহাম্মদ শামি এই মুহূর্তে টিম ইন্ডিয়ার অংশ না থাকলেও, তিনি তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। শামি মাঠে ফিরেই এমন ধারালো বোলিং করছেন যে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্পোর্টস নিউজ: ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি রঞ্জি ট্রফি ২০২৫-এ তার পারফরম্যান্স ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। টিম ইন্ডিয়া থেকে বাইরে থাকা সত্ত্বেও, শামি ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন পারফরম্যান্স করেছেন যে এখন নির্বাচকদের পক্ষে তাকে উপেক্ষা করা কঠিন হবে।
বাংলার হয়ে খেলতে নেমে শামি দুটি ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে প্রমাণ করেছেন যে তার গতি, সুইং এবং লাইন-লেন্থ এখনও একই ধার বজায় রেখেছে। তার এই পারফরম্যান্স কেবল টিম ইন্ডিয়ার বেঞ্চ স্ট্রেন্থকেই শক্তিশালী করে না, বরং এটিও দেখায় যে বয়স এবং অভিজ্ঞতার সঠিক ব্যবহার কীভাবে করা যায়।
রঞ্জি ট্রফিতে শামির দাপট – দুই ম্যাচে ১৫ উইকেট
রঞ্জি ট্রফিতে তার প্রথম ম্যাচেই মোহাম্মদ শামি প্রতিপক্ষ দলের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। প্রথম ইনিংসে তিনি ৩৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন, আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। এভাবে এক ম্যাচেই তিনি মোট ৭ উইকেট নিজের নামে করেন। দ্বিতীয় ম্যাচেও তার ছন্দ বজায় ছিল। এবার শামি প্রথম ইনিংসে তিন উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে মোট ৮ উইকেট পূর্ণ করেন।
দুটি ম্যাচের চারটি ইনিংসে শামির উইকেট সংখ্যা ছিল ১৫/২৩০ — যা যেকোনো পেস বোলারের জন্য একটি প্রভাবশালী পারফরম্যান্স হিসেবে বিবেচিত হয়। তার বোলিংয়ের সবচেয়ে বড় দিক ছিল যে তিনি নতুন বলে সুইংয়ের পাশাপাশি পুরোনো বলে রিভার্স সুইংয়েরও চমৎকার ব্যবহার করেছেন।

টিম ইন্ডিয়া থেকে বাইরে, কিন্তু ফিটনেস ও ফর্মে অটুট শামি
গত কয়েক মাস ধরে মোহাম্মদ শামি টিম ইন্ডিয়া থেকে বাইরে আছেন। সম্প্রতি যখন ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে টেস্ট সিরিজ খেলা হয়েছিল, তখন আশা করা হয়েছিল যে শামির প্রত্যাবর্তন হবে, কিন্তু নির্বাচকরা তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেননি। অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা ছিল যে শামি পুরোপুরি ফিট নন, কিন্তু রঞ্জি ট্রফিতে তার পারফরম্যান্স এই ধারণাটিকে সম্পূর্ণরূপে উড়িয়ে দেয়।
তিনি নিয়মিত ১৪০ কিমি/ঘণ্টার বেশি গতিতে বোলিং করেছেন এবং বাউন্সার থেকে শুরু করে ইনসুইং ইয়র্কার পর্যন্ত প্রতিটি অস্ত্রের সঠিক ব্যবহার করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, শামি যদি এতই ফিট এবং কার্যকর হন, তাহলে তাকে জাতীয় দলে কেন সুযোগ দেওয়া হয়নি?
নির্বাচকদের উপর চাপ বাড়ল, অজিত আগরকরের জন্য চ্যালেঞ্জ
প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর এবং তার দলের জন্য এখন নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজ হবে না। আগামী মাসে যখন ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলা হবে, তখন দেখা আকর্ষণীয় হবে যে শামি সুযোগ পান কিনা। সিরিজের প্রথম টেস্ট ১৪ নভেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হওয়ার কথা, এবং দল নির্বাচন আগামী সপ্তাহের মধ্যে সম্ভাব্য।
শামির বর্তমান ছন্দ বিবেচনা করে নির্বাচকদের কাছে এখন তাকে উপেক্ষা করার কোনো শক্ত কারণ নেই। ক্রিকেট বিশ্লেষক হার্শা ভোগলে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, শামি যে পারফরম্যান্স করেছেন, তা শুধু পরিসংখ্যানের খেলা নয়। তিনি দেখিয়েছেন যে একজন সিনিয়র বোলার কীভাবে ঘরোয়া পর্যায়ে তার ফিটনেস এবং প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব বজায় রাখতে পারে।













