প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের ভরাডুবি, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫৫ রানে হার

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের ভরাডুবি, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫৫ রানে হার
সর্বশেষ আপডেট: 5 ঘণ্টা আগে

মঙ্গলবার রাতটি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক প্রমাণিত হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্বাগতিক পাকিস্তানকে ৫৫ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে। 

স্পোর্টস নিউজ: রাওয়ালপিন্ডিতে খেলা প্রথম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা পাকিস্তানকে ৫৫ রানে পরাজিত করে দুর্দান্ত জয় লাভ করেছে। টসে জেতার পর দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান তোলে। দলের মধ্যম সারির ব্যাটসম্যানরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং ফাস্ট বোলারদের সামনে আক্রমণাত্মক ভঙ্গি বজায় রেখেছিলেন।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান দল কখনই ছন্দে ছিল না এবং ১৮.১ ওভারে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন, যার ফলে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা চাপে পড়ে যান।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিস্ফোরক পারফরম্যান্স

রাওয়ালপিন্ডিতে খেলা প্রথম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাকিস্তানের অধিনায়ক আগা সালমান টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা এই সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯৪ রানের শক্তিশালী স্কোর গড়ে তোলে। রেজা হেনড্রিক্স ৪০ বলে ৬০ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, যার মধ্যে ৫টি চার এবং ১টি ছক্কা ছিল। তাঁর সাথে কুইন্টন ডি কক (২৩) এবং টনি ডি জর্জি (৩৩)ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ নওয়াজ সবচেয়ে সফল ছিলেন, যিনি ৩টি উইকেট নেন। স্যাম আইয়ুব ২টি উইকেট পান, অন্যদিকে শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ এবং আবরার আহমেদ ১টি করে উইকেট পান। এত সত্ত্বেও দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ওভারগুলোতে ঝড়ো ব্যাটিং করে ১৯০ রানের মাইলফলক অতিক্রম করে।

বাবর আজমের ম্লান প্রত্যাবর্তন

১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ভালো শুরু পেয়েছিল। সাহেবজাদা ফারহান (২৪) এবং স্যাম আইয়ুব (৩৭) প্রথম উইকেটে ৩১ রান যোগ করেন। কিন্তু লিজাদ উইলিয়ামস ফারহানকে ক্লিন বোল্ড করে জুটি ভাঙেন। এরপর মাঠে আসেন বাবর আজম, যার প্রত্যাবর্তন নিয়ে ভক্তদের মধ্যে প্রচুর উৎসাহ ছিল। তবে এই উৎসাহ মুহূর্তের মধ্যেই নিভে যায়। করবিন বশ-এর বলে রেজা হেনড্রিক্স তাঁর একটি দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন এবং বাবর কোনো রান না করেই শূন্য রানে আউট হন।

এই উইকেটটি পাকিস্তানের জন্য নির্ণায়ক প্রমাণিত হয়। এরপর দল আর কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি এবং নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে। অধিনায়ক আগা সালমান (২), হাসান নওয়াজ (৩) এবং অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা দলকে সংকটে ফেলে দেয়।

লিন্ডে এবং বশ উড়িয়ে দিলেন পাকিস্তানের স্বপ্ন

দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা দুর্দান্ত শৃঙ্খলা প্রদর্শন করেন। করবিন বশ এবং জর্জ লিন্ডে পাকিস্তানি ব্যাটিংয়ের কোমর ভেঙে দেন। দুজন বোলারই ৩টি করে উইকেট নেন, অন্যদিকে লিজাদ উইলিয়ামস ২টি এবং লুঙ্গি এনগিডি ১টি উইকেট পান। পাকিস্তানের হয়ে শুধুমাত্র মোহাম্মদ নওয়াজ (৩৬ রান) কিছুটা সময় টিকে থাকার চেষ্টা করেন, কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে কোনো সমর্থন পাননি। পুরো দল ১৮.১ ওভারে ১৩৯ রানে অলআউট হয়ে যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের নায়করা

  • রেজা হেনড্রিক্স: ৬০ রান (৪০ বল, ৫টি চার, ১টি ছক্কা)
  • করবিন বশ: ৩ উইকেট, যার মধ্যে বাবর আজম এবং অধিনায়ক আগা সালমানের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট ছিল
  • জর্জ লিন্ডে: অলরাউন্ড পারফরম্যান্স – ৩৬ রান এবং ৩ উইকেট

তাদের পারফরম্যান্সের সুবাদে দক্ষিণ আফ্রিকা পাকিস্তানকে তাদের নিজেদের মাঠে হারিয়ে সিরিজে প্রাথমিক লিড নিয়েছে। দুই দলের মধ্যে তিন ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ এখন একটি রোমাঞ্চকর মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচটি শুক্রবার লাহোরে খেলা হবে। পাকিস্তানের জন্য এই ম্যাচটি 'হয় করো না হয় মরো' পরিস্থিতি, কারণ হেরে গেলে সিরিজ হাতছাড়া হয়ে যাবে।

Leave a comment