মুম্বাইতে 'গুরু মা' আসলে বাংলাদেশি: জাল নথিতে ৩০ বছরে কোটি টাকার সম্পত্তি, পুলিশ গ্রেপ্তার করলো

মুম্বাইতে 'গুরু মা' আসলে বাংলাদেশি: জাল নথিতে ৩০ বছরে কোটি টাকার সম্পত্তি, পুলিশ গ্রেপ্তার করলো

মুম্বাই পুলিশ 'গুরু মা' নামে পরিচিত একজন রূপান্তরকামী জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করেছে। আসলে সে বাংলাদেশের নাগরিক বাবু আয়ান খান, যে গত ৩০ বছরে জাল নথি ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন করেছে।

মুম্বাই: পুলিশ একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। 'জ্যোতি' নামের একজন রূপান্তরকামী, যাকে মুম্বাইতে 'গুরু মা' নামে পরিচিতি ছিল, আসলে সে বাংলাদেশের নাগরিক বাবু আয়ান খান বলে প্রমাণিত হয়েছে। গত ৩০ বছর ধরে সে জাল নথির সাহায্যে ভারতে বসবাস করছিল এবং মুম্বাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় তার ৩০০-এরও বেশি অনুসারী রয়েছে।

পুলিশের তদন্তে জানা গেছে যে জ্যোতি ভারতের জন্ম শংসাপত্র, আধার কার্ড এবং প্যান কার্ডের মতো বেশ কয়েকটি নথি জালিয়াতি করে তৈরি করেছিল। এই তথ্য প্রকাশের পর শিবাজী নগর পুলিশ আয়ান খান ওরফে জ্যোতি ওরফে 'গুরু মা'-কে গ্রেপ্তার করে।

মুম্বাইতে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি

তদন্তে আরও জানা গেছে যে জ্যোতির মুম্বাইতে ২০টিরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রফিক নগর, গোভান্ডি, দেবনার এবং ট্রোম্বে এলাকা। বেশিরভাগ সম্পত্তিতে তার অনুসারীরা বাস করে এবং তাকে 'গুরু মা' হিসেবে বিশ্বাস করে।

পুলিশের মতে, এই সম্পত্তি জাল নথি এবং অনুসারীদের বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে আয়ান খান দীর্ঘকাল ধরে নিজেকে একজন ধর্মীয় ও সামাজিক নেতা হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এতে স্পষ্ট যে মুম্বাইতে বছরের পর বছর ধরে এই জালিয়াতি কোনো তদন্ত ছাড়াই চলছিল।

জ্যোতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ

জ্যোতির বিরুদ্ধে শিবাজী নগর, নারপোলি, দেবনার, ট্রোম্বে এবং কুরলা থানায় ইতিমধ্যেই একাধিক মামলা নথিভুক্ত আছে। এর মধ্যে পাসপোর্ট আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারার অধীনে অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত।

কয়েক মাস আগে মুম্বাইতে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল। সে সময় জ্যোতির কিছু সহযোগী ধরা পড়েছিল। জ্যোতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, কিন্তু তার কাছে থাকা বৈধ মনে হওয়া নথিপত্রের কারণে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। সম্প্রতি হওয়া তদন্তে এই জাল নথিগুলি প্রকাশ্যে এসেছে।

মুম্বাই পুলিশ আয়ান খানকে গ্রেপ্তার করেছে 

মুম্বাই পুলিশ আয়ান খানকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তদন্তে তার জাল নথি, সম্পত্তি এবং অনুসারীদের ভূমিকার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে যে এখন তদন্ত করে দেখা হবে আয়ান খান কিভাবে ৩০ বছর ধরে মুম্বাইতে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন করেছে এবং কিভাবে জালিয়াতি করেছে। এছাড়া, তার অনুসারী এবং জাল নথি তৈরি করা নেটওয়ার্কেরও তদন্ত করা হবে।

Leave a comment