NCLAT-এর রায়: জেপি ইনফ্রাটেকের ১৫ কোটির সুদের দাবি খারিজ, জেপি অ্যাসোসিয়েটসের বড় স্বস্তি

NCLAT-এর রায়: জেপি ইনফ্রাটেকের ১৫ কোটির সুদের দাবি খারিজ, জেপি অ্যাসোসিয়েটসের বড় স্বস্তি

NCLAT জেপি ইনফ্রাটেকের ১৫ কোটি টাকার সুদ চাওয়ার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে জেপি অ্যাসোসিয়েটসকে বড় ধরনের স্বস্তি মিলেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জমা করা অর্থ নিয়ে বিতর্ক শেষ হওয়ায় বাড়ির ক্রেতাদের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়েছে।

বিজনেস নিউজ: জেপি অ্যাসোসিয়েটস-এর জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর সামনে এসেছে। জেপি ইনফ্রাটেকের পক্ষ থেকে জেপি অ্যাসোসিয়েটসের কাছে ১৫ কোটি টাকা সুদের দাবি করা হয়েছিল। এই দাবিটি সেই অর্থের সুদের জন্য ছিল যা জেপি গ্রুপ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে বাড়ির ক্রেতাদের স্বার্থে জমা করেছিল। কিন্তু এখন ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল (NCLAT) এই দাবিটি খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে জেপি অ্যাসোসিয়েটস সরাসরি উপকৃত হয়েছে।

কী ছিল ঘটনা? 

একসময় জেপি গ্রুপের প্রধান কোম্পানি থাকা Jaypee Infratech Limited (JIL)-কে সুরক্ষা গ্রুপ অধিগ্রহণ করেছিল। এটি সেই কোম্পানি যেটি যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছিল। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার পর এর বিরুদ্ধে দেউলিয়া প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই সময়ে, সুপ্রিম কোর্ট বাড়ির ক্রেতাদের রক্ষা করতে এবং তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মূল কোম্পানি Jaypee Associates Limited (JAL)-কে ₹২,০০০ কোটি টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

জমা করা অর্থ

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে JAL ₹২,০০০ কোটি টাকার মধ্যে ₹৭৫০ কোটি টাকা জমা দেয়। পরে এই অর্থ NCLT-তে স্থানান্তরিত করা হয় যাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ক্রেতাদের স্বস্তি দেওয়া যায়। আদালতগুলিতে পরবর্তী শুনানির পর এটি স্থির হয় যে এই অর্থ থেকে JIL-কে প্রায় ₹৫৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। এই অর্থের উপর সুদ নিয়ে JIL দাবি জানায় এবং JAL-এর কাছে ১৫ কোটি টাকা দাবি করে। JIL বলেছিল যে এই অর্থের উপর তাদের সুদ পাওয়া উচিত।

NCLAT কেন সুদের দাবি খারিজ করল? 

NCLAT স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে Jaypee Infratech সুদ দাবি করার অধিকার রাখে না। ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলেছে যে সুপ্রিম কোর্ট এবং পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রমে পরিষ্কারভাবে বলা হয়নি যে জমা করা অর্থের উপর প্রাপ্ত সুদ JIL-কে দেওয়া হবে। NCLAT আরও বলেছে যে JIL ইতিমধ্যেই ₹৭৫০ কোটি টাকা থেকে তার নির্ধারিত অংশ পেয়েছে এবং এর পরে কোনো অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের প্রয়োজন নেই। তাই জেপি ইনফ্রাটেকের সুদের দাবি খারিজ করা হলো।

কোন বেঞ্চ রায় দিয়েছিল?

এই রায়টি ২০২৫ সালের ৪ নভেম্বর NCLAT-এর প্রিন্সিপাল বেঞ্চ ঘোষণা করে। বেঞ্চের সভাপতিত্ব করছিলেন চেয়ারপার্সন বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং টেকনিক্যাল মেম্বার বরুণ মিত্র এই শুনানির অংশ ছিলেন। বেঞ্চ তার আদেশে বলেছে যে এই মামলাটি বহু বছর ধরে আদালতের স্তরে চলছে এবং আদেশের ক্রম অনুসারে, JIL কোনো প্রকার সুদের দাবির যোগ্য নয়।

দেউলিয়া প্রক্রিয়া কবে শুরু হয়েছিল?

Jaypee Infratech Limited-এর বিরুদ্ধে দেউলিয়া কার্যক্রম ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়েছিল। IDBI ব্যাংক কোম্পানিকে বকেয়া ঋণ পরিশোধ না করার কারণে NCLT-তে মামলা দায়ের করেছিল। এই সময়ে, হাজার হাজার বাড়ির ক্রেতা সমস্যায় পড়েছিলেন। অনেক ক্রেতা বহু বছর ধরে বাড়ি পাননি এবং তাদের টাকা আটকে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্ট JAL-কে অর্থ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

অর্থের ভাগ কীভাবে হয়েছিল?

২০২৩ সালের মার্চ মাসে ইলাহাবাদ-ভিত্তিক NCLT জমা করা অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে রায় দিয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল যে ₹৭৫০ কোটি টাকার মধ্যে JIL-কে ₹২৬৫.২১ কোটি টাকা দেওয়া হোক এবং মোট বরাদ্দের পর JIL-এর কাছে ₹৫৪৬ কোটি টাকা পৌঁছায়। কিন্তু সুদের বিষয়ে JIL-এর দাবি খারিজ করা হয়েছিল। আদালত বলেছে যে জমা করা অর্থ এবং তার উপর জমা সুদ JAL-এর সম্পত্তি এবং এর উপর তার অধিকার থাকবে।

বাড়ির ক্রেতাদের উপর প্রভাব

এই পুরো বিষয়টি মূলত সেই বাড়ির ক্রেতাদের সাথে সম্পর্কিত যাদের প্রকল্পগুলি অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এবং পরবর্তী কার্যধারার মূল উদ্দেশ্য ছিল নিশ্চিত করা যে ক্রেতারা ন্যায়বিচার পান এবং তাদের বিনিয়োগ করা অর্থ হারিয়ে না যায়। NCLAT-এর এই রায়ের ফলে প্রকল্পকে প্রভাবিত করা আর্থিক অনিশ্চয়তাগুলি কমে যায়। এটি প্রকল্পের পুনর্গঠন এবং সম্পন্ন হওয়ার প্রক্রিয়ায় স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।

সুরক্ষা গ্রুপের জন্য পরিস্থিতি স্পষ্ট

যেহেতু Jaypee Infratech এখন সুরক্ষা গ্রুপের অংশ, তাই এই রায় কোম্পানির আর্থিক কাঠামোকে স্পষ্ট করে। এর ফলে কোম্পানি দেউলিয়া প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসতে এবং প্রকল্পগুলি সম্পন্ন করতে স্থিতিশীলতা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সুবিধা পাবে। সুরক্ষা গ্রুপের জন্য এই রায়টি ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনার দিক থেকে স্বস্তিদায়ক বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a comment