নেপালে Gen-Z আন্দোলন পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। রাষ্ট্রপতি ভবনে দখল, অগ্নিসংযোগ ও হিংসায় ১৯ জনের মৃত্যু, ৩০০ আহত। সরকার বিমানবন্দর বন্ধ ও মন্ত্রীদের হেলিকপ্টারে সরানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে।
Nepal: নেপালে চলমান Gen-Z আন্দোলন রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। এই আন্দোলন যুবকদের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল, তবে এখন এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। রাজধানী কাঠমান্ডু সহ অনেক এলাকায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়েছে যে মন্ত্রীদের দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।
পাঁচটি হেলিকপ্টারে মন্ত্রীদের সরানোর প্রস্তুতি
সরকারী সূত্র অনুসারে, মন্ত্রীদের নিরাপদে সরানোর জন্য পাঁচটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদের সরকারি বাসভবন থেকে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সহ অনেক শীর্ষ নেতাদেরও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে ৩০০ জনের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি ভবনে দখল
বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌড়েলের ব্যক্তিগত বাসভবন দখল করে নিয়েছে। শুধু দখলই নয়, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও সামনে এসেছে। এই ঘটনা নেপালের রাজনৈতিক সংকটকে আরও গভীর করছে।
বিমানবন্দরে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সরকার কাঠমান্ডু সহ অনেক শহরে কারফিউ জারি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে বিপুল সংখ্যক সেনা বিমানবন্দরে এবং শহরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে মোতায়েন রয়েছে।
হিংসাত্মক সংঘর্ষে ১৯ জনের মৃত্যু
সোমবার কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শনে কমপক্ষে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়েছে।
কলিঙ্গ সাহিত্য উৎসব স্থগিত
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ কলিঙ্গ সাহিত্য উৎসবও বর্তমান পরিস্থিতির কারণে স্থগিত করা হয়েছে। এই উৎসব ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তবে এখন এটিকে ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আয়োজকদের মতে, এতে ৬০ জনের বেশি ভারতীয় এবং ২০০ জন নেপালী লেখক অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের (MEA) প্রতিক্রিয়া
ভারত নেপালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে নেপালে চলমান ঘটনাগুলির উপর আমাদের কড়া নজর রয়েছে। অনেক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে ভারত, একটি ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী হিসেবে আশা করে যে সকল পক্ষ সংযম প্রদর্শন করবে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যাগুলির সমাধান করবে। একই সাথে, ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকতে এবং স্থানীয় প্রশাসনের জারি করা নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কেন Gen-Z আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছে
Gen-Z আন্দোলন যুবকদের অসন্তোষের কণ্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারের কথিত দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে এটি ব্যাপক রূপ ধারণ করে এবং সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিদ্রোহের আকার নেয়।