নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান-বিরোধিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ১৯ মৃত্যু, ভারত সতর্ক

নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান-বিরোধিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ১৯ মৃত্যু, ভারত সতর্ক

নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ১৯ জনের মৃত্যু। আহত অনেকে। ভারত নেপালকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং সকল নাগরিককে সাবধানে থাকার আবেদন জানিয়েছে।

Nepal Protests: নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য শহরগুলিতে পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত। সরকারের সিদ্ধান্ত এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এখন হিংসাত্মক রূপ নিয়েছে। গতদিন পার্লামেন্টে যুবকদের হামলায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন। এই বিষয়ে ভারত সরকার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক নেপালকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা (caution) নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং বলেছে যে দিল্লি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ (monitoring) করছে।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বৃদ্ধি

নেপাল সরকার সম্প্রতি Facebook, X এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সরকারের যুক্তি ছিল যে এই প্ল্যাটফর্মগুলি গুজব ছড়ানো এবং ভুল তথ্য শেয়ার করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল। কিন্তু যুবকরা এটিকে তাদের কণ্ঠরোধ করার পদক্ষেপ হিসাবে মনে করেছে এবং প্রতিবাদের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছে।

সোমবার হাজার হাজার যুবক পার্লামেন্ট ভবনে হামলা করতে পৌঁছায়। এই হিংসায় ১৯ জনের মৃত্যু হয় এবং অনেকে আহত হন। এই হিংসা নেপালে গত কয়েক বছরে দেখা সবচেয়ে গুরুতর ঘটনাগুলির মধ্যে একটি বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া

ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে নেপালের প্রতিবেশী এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু (close friend and neighbor) হিসাবে ভারত সেখানকার পরিস্থিতির বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে দিল্লি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সকল নাগরিককে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করছে।

বিদেশ মন্ত্রক বিশেষভাবে বলেছে যে, "আমরা নিহত পরিবারগুলির প্রতি আমাদের সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আমরা আশা করি যে নেপাল শীঘ্রই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে এবং সকল বিবাদ শান্তিপূর্ণ আলোচনার (peaceful dialogue) মাধ্যমে সমাধান করা হবে।"

কারফিউ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু সহ অনেক শহরে কারফিউ (curfew) জারি করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এই পদক্ষেপ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিয়েছে। নেপালে থাকা ভারতীয় নাগরিকদেরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার এবং স্থানীয় নির্দেশিকা অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে দিল্লি ক্রমাগত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

বিক্ষোভকারীরা রাস্তায়

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গতদিন পার্লামেন্টে হামলার পর নেপাল সরকার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান সরিয়ে নিয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা এখনো রাস্তায় জড়ো হচ্ছে। যুবকদের বক্তব্য হল তারা তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার (freedom of expression) জন্য লড়াই করছে।

নেপাল সরকারের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হল তারা কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করবে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান তুলে নেওয়ার পরেও যুবকদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

নেপালে ঘটা হিংসা আন্তর্জাতিক স্তরেও উদ্বেগ তৈরি করেছে। অনেক দেশ এবং মানবাধিকার সংগঠন নেপাল সরকারকে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের সম্মান করার আবেদন করেছে। ভারত নেপালকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী হিসাবে পরিস্থিতি উন্নত করার এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে সকল বিবাদ আলোচনা এবং সম্মতির (consensus) মাধ্যমে সমাধান করাই শ্রেয় হবে।

Leave a comment