মঙ্গলবার সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে নিউটাউনের ডাউনটাউন এলাকা কেঁপে উঠল এক ভয়ঙ্কর ঘটনায়। এক চলন্ত বাস হঠাৎ আগুনে গ্রাস হওয়ায় মুহূর্তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বাসটি যখন এলাকা অতিক্রম করছিল, তখন ইঞ্জিনের দিক থেকে ধোঁয়া ও ছোট ছোট শিখা বেরোতে শুরু করে। এক মুহূর্তও দেরি না করে চালক বাস থামিয়ে দেন। আতঙ্কিত যাত্রীরা দ্রুত নেমে পড়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যান।
প্রাণ বাঁচাতে ছুটোছুটিরাস্তার ধারে ভিড়, আতঙ্কে দৌড় পথচারীদেরও
যাত্রীরা বাস থেকে নেমে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়তেই পরিস্থিতি আরও অগোছালো হয়ে ওঠে। অনেকেই দৌড়ে রাস্তার অন্য প্রান্তে চলে যান। পথচারীরাও চিৎকার শুনে প্রথমে হতবাক হয়ে যান, তারপর আগুনের তীব্রতা দেখে দূরে সরে দাঁড়ান। তবে কয়েকজন সাহসী স্থানীয় বাসিন্দা এগিয়ে আসেন সাহায্যের জন্য। কারও হাতে ছিল বোতলভর্তি জল, কেউ আবার বালতি নিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
প্রথম চেষ্টায় সফলতা মেলেনি বালতি-জলও হার মানল আগুনের তীব্রতায়
প্রথমদিকে স্থানীয়রা ভেবেছিলেন, সামান্য ধোঁয়া এবং ছোট শিখা সহজেই নিভিয়ে ফেলা যাবে। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই আগুন তীব্র হয়ে ওঠে। বোতল ও বালতির জল তাতে কার্যকর হয়নি। বরং বাসের সামনের অংশ দ্রুত লেলিহান শিখায় ঢেকে যায়। স্থানীয়রা তখনই বুঝে যান, সাধারণ উপায়ে এই আগুন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশারের উদ্যোগ পেট্রোল পাম্প থেকে আনা সিলিন্ডারেও পুরোপুরি নিভল না আগুন
পরিস্থিতি সামাল দিতে পাশের একটি পেট্রোল পাম্প থেকে গ্যাস সিলিন্ডার-ভিত্তিক ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার আনা হয়। তাতে আগুন অনেকটাই কমলেও, এখনও বাসের ভিতরে ছোট ছোট শিখা জ্বলতে থাকে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগুন পুরোপুরি নেভাতে সময় লেগে যায়, কারণ তাপ ও ধোঁয়ার কারণে ভিতরে প্রবেশ করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
দমকল ও পুলিশের তৎপরতা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শুরু হয় পেশাদারি উদ্ধার অভিযান
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত নিউটাউন থানার পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। তারা আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। দমকলের প্রাথমিক ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ত্রুটি থেকেই আগুন লেগে থাকতে পারে।
যান চলাচলে সাময়িক বিঘ্ন ব্যস্ত সময়ে রাস্তায় জট, অসুবিধায় নিত্যযাত্রীরা
আগুনের কারণে ডাউনটাউন এলাকার ওই রাস্তা কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচলের বাইরে রাখা হয়। ফলে ব্যস্ত সময়ে অফিসফেরত যাত্রী ও গাড়িচালকদের সমস্যা হয়। তবে দমকল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় যানবাহন চলাচল।
বড়সড় বিপদ থেকে রক্ষা কোনও প্রাণহানি হয়নি, স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল শহরবাসী
সবচেয়ে বড় স্বস্তির খবর — এই ঘটনায় কোনও বড়সড় হতাহতের খবর নেই। যাত্রীরা সময়মতো নেমে যেতে পেরেছেন বলেই বড় বিপদ এড়ানো গেছে। কেবল কয়েকজন যাত্রী সামান্য ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্টে ভুগলেও প্রাথমিক চিকিৎসায় তারা সুস্থ হয়ে যান।
নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের দাবি বাসগুলির ফিটনেস পরীক্ষা জরুরি বলছেন স্থানীয়রা
ঘটনার পর স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহরে চলাচলকারী বাসগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও ফিটনেস পরীক্ষা জরুরি। নইলে ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। পরিবহন দপ্তরের তরফেও ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।