কেরলের নার্স, নিমিষা প্রিয়ার ইয়েমেনে ফাঁসির সাজা বাঁচানোর শেষ চেষ্টা চলছে। সুন্নি ও সুফি নেতাদের মধ্যস্থতায় ব্লাড মানি নিয়ে আলোচনার আশা জেগেছে।
Nimisha Priya Case: কেরলের নার্স নিমিষা প্রিয়ার ফাঁসির সাজা ১৬ই জুলাই তারিখে নির্ধারিত হয়েছে। তবে ভারত এবং ইয়েমেনের বহু ধর্মীয় ও সামাজিক নেতাদের প্রচেষ্টায় এখন আশার আলো দেখা যাচ্ছে। এই পুরো ঘটনায় ব্লাড মানি, অর্থাৎ মৃতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়াই নিমিষার জীবন বাঁচানোর শেষ বিকল্প হিসাবে ধরা হচ্ছে।
কে এই নিমিষা প্রিয়া এবং কী এই পুরো ঘটনা?
নিমিষা প্রিয়া কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা একজন নার্স। ২০১৭ সালে ইয়েমেনে কাজ করার সময়, তাঁর বিরুদ্ধে তাঁর ইয়েমেনি ব্যবসার সহযোগী, তালাল আবদো মাহদির হত্যার অভিযোগ আনা হয়। আদালত ২০২০ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০২৩ সালে তাঁর শেষ আবেদনও খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি সানার জেলে বন্দী রয়েছেন এবং ১৬ই জুলাই ২০২৫ তাঁর ফাঁসি হওয়ার কথা রয়েছে।
কান্থাপুরাম ও শেখ হাবিবের উদ্যোগে আশা জেগেছে
ভারতের প্রধান সুন্নি মুসলিম নেতা কান্থাপুরাম এ পি আবু বক্কর মুসলিয়ার এবং ইয়েমেনের বিখ্যাত সুফি আলেম শেখ হাবিব ওমর বিন হাফিজের প্রচেষ্টায় এখন নতুন দিশা দেখা যাচ্ছে। এই দুজনের উদ্যোগে ইয়েমেনের ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় সাফল্য হল, প্রথমবারের মতো, নিহত তালালের পরিবারকে আলোচনার জন্য রাজি করানো গেছে।
মঙ্গলবার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎ, বড় সিদ্ধান্ত আসতে পারে
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ইয়েমেনের ধামার শহরে শেখ হাবিবের প্রতিনিধি এবং তালালের পরিবারের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে মৃতের একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ও উপস্থিত থাকবেন যিনি হুদাইদা রাজ্যের আদালতের প্রধান বিচারপতি এবং ইয়েমেনের শুরা কাউন্সিলের সদস্য। সূত্রানুসারে, এই প্রতিনিধি ইয়েমেনের প্রশাসন ও ধর্মীয় সমাজে গভীর প্রভাব রাখেন এবং তিনি সাজা স্থগিত করার আবেদন করেছেন।
ব্লাড মানি নিয়ে আলোচনা, এটাই শেষ বিকল্প
ইয়েমেনের শরিয়া আইন অনুসারে, যদি কোনও হত্যার ঘটনায় মৃতের পরিবার অভিযুক্তকে ব্লাড মানি নিয়ে ক্ষমা করে দেয়, তবে মৃত্যুদণ্ড রোধ করা যেতে পারে। এই বিকল্পের উপরেই এখন আলোচনা চলছে। আগে মৃতের পরিবার আলোচনার জন্য রাজি ছিল না। কিন্তু কান্থাপুরাম ও শেখ হাবিবের সুপারিশের পরে এখন আলোচনার জন্য সম্মতি পাওয়া গেছে। এটিকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ড. কে এ পল-এর কূটনৈতিক উদ্যোগও কাজে এসেছে
আমেরিকা-ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন GPI (Global Peace Initiative) এবং GUM (Gospel to the Unreached Millions)-এর প্রতিষ্ঠাতা ড. কে এ পলও এই মিশনে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি ইয়েমেনের হুথি নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। তাঁর দাবি, এই চাপ ও সহযোগিতার ফলে মৃতের পরিবার এখন ক্ষমা করার বিষয়ে বিবেচনা করছে। তিনি এটিকে ঐশ্বরিক কারিশমা হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং সকলের কাছে দোয়া করার আবেদন জানিয়েছেন।