পাকিস্তানে লাগাতার ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় তাণ্ডব। পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত। গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ জনের বেশি মৃত্যু হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রভাবিত। ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান লাগাতার চলছে।
Pakistan Flood: পাকিস্তানে লাগাতার ভারী বৃষ্টি পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে। পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। বৃষ্টি ও বন্যার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন এবং অনেক এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চলছে।
মৃত ও আহতদের সংখ্যা
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, পাঞ্জাব প্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, অন্যদিকে খাইবার পাখতুনখোয়াতে ৫ জন মারা গেছেন। ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (NDMA)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৬ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পাকিস্তানে মৃতের সংখ্যা ৮৫৪-এ পৌঁছেছে। এছাড়াও, ১,১০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বৃষ্টি ও বন্যা-বিধ্বস্ত অঞ্চলে পরিস্থিতি লাগাতার খারাপ হচ্ছে এবং ত্রাণ কাজে গতি আনা হচ্ছে।
২০ লক্ষের বেশি মানুষ প্রভাবিত
পাঞ্জাবের তথ্য মন্ত্রী আজমা বুখারী জানিয়েছেন যে প্রদেশে ভয়াবহ বন্যায় ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন যে সরকার বন্যায় আটকে পড়া ৭,৬০,০০০ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়াও, ৫,০০,০০০-এর বেশি পশুকেও নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
লাহোর, হাফিজাবাদ ও মুলতানে ভারী বৃষ্টি
পাঞ্জাবের প্রভিন্সিয়াল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (PDMA)-এর তথ্য অনুযায়ী, লাহোর, হাফিজাবাদ ও মুলতান জেলায় রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কমপক্ষে চারটি স্থানে ১২০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এই বন্যা পাঞ্জাবের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যাগুলির মধ্যে একটি বলে মনে করা হচ্ছে।
উদ্ধার অভিযান লাগাতার চলছে
সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল লাগাতার প্রভাবিত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। বন্যা-বিধ্বস্ত মানুষদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া, খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা এবং চিকিৎসার সহায়তা দেওয়ার কাজে গতি আনা হয়েছে। অনেক এলাকায় জলের স্তর এখনও বাড়ছে, যা ত্রাণ কাজে অসুবিধা সৃষ্টি করছে।
বন্যা-বিধ্বস্ত অঞ্চলে সাহায্যের আবেদন
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলি প্রভাবিত মানুষদের সাহায্যের জন্য লাগাতার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে থাকার এবং বন্যা-বিধ্বস্ত অঞ্চলে প্রবেশ এড়িয়ে চলার আবেদন করা হচ্ছে। ত্রাণ কাজে স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল একসাথে কাজ করছে যাতে প্রভাবিত মানুষদের কাছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়।
জল নিষ্কাশন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বন্যা-বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলিতে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা দ্রুত করা হয়েছে। বাঁধ ও নদীর তীরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে যাতে কোনও প্রকার জরুরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়। নিরাপত্তা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রভাবিত এলাকায় মানুষদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন।