মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলায় মঙ্গলবার রাতে বাসাই-বিরারের একটি চারতলা অবৈধ বিল্ডিং ধূলিসাৎ হয়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪-৬ জন আহত হয়েছেন। এনডিআরএফ-এর একটি দল ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধারের জন্য তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
পালঘর: মুম্বাইয়ের সংলগ্ন বাসাই-বিরার অঞ্চলে, রমাবাই অ্যাপার্টমেন্ট নামে একটি চারতলা আবাসিক ভবন মঙ্গলবার গভীর রাতে ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং এনডিআরএফ ও স্থানীয় প্রশাসনের দল ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া অন্যান্যদের উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, ভবনটি একটি সরু গলিতে অবস্থিত ছিল, যার ফলে উদ্ধারকারী যানবাহন এবং অ্যাম্বুলেন্স সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। এই কারণে এনডিআরএফ-কে ম্যানুয়াল সার্চ অপারেশন পরিচালনা করতে হয়েছে, যা অনেক সময় নিয়েছে। দলটির আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও কিছু লোক আটকে থাকতে পারে।
রমাবাই অ্যাপার্টমেন্ট ধসে আটকে পড়া মানুষ
ঘটনা স্থলে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রমাবাই অ্যাপার্টমেন্টের ভেঙে পড়া অংশ পাশের একটি খালি বাড়ির উপর পড়ে। এই ভবনটি অবৈধ ছিল এবং এতে মোট ৫০টি ফ্ল্যাট ছিল, যার মধ্যে ভেঙে পড়া অংশে ১২টি ফ্ল্যাট অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ঘটনার সময় ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ২০-২৫ জন লোক আটকে থাকার আশঙ্কা করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ৬টি মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং বাকি মৃতরা চিকিৎসার সময় মারা যান। পুলিশ এবং প্রশাসন ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ দ্রুতগতিতে শুরু করেছে।
দুর্ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিচয়
পুলিশ এখন পর্যন্ত সাতজন মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করেছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন আরোহী ওমকার জোভিল (২৪) এবং তাঁর এক বছরের কন্যা উৎকর্ষা জোভিল, লক্ষ্মণ কিস্কু সিং (২৬), দীনেশ প্রকাশSapkal (৪৩), সুপ্রিয়া নিভালকার (৩৮), অর্ণব নিভালকার (১১) এবং পার্বতী Sapkal। মৃতদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জেলাশাসক ইন্দু রানী জখড় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন যে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও কিছু লোক চাপা পড়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের চন্দনসর সমাজমন্দিরে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং তাদের খাদ্য, জল, চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে।
পুলিশ বিল্ডারকে গ্রেপ্তার করেছে
বাসাই-বিরার महानगरपालिका (VVMC)-এর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভবনটির বিল্ডারকে গ্রেপ্তার করেছে। কর্মকর্তারা ভবনটিকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছেন এবং আশেপাশের সমস্ত বস্তি খালি করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সতর্ক করেছে যে ভবিষ্যতে এই ধরনের অবৈধ নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা বৃদ্ধি
পালঘর জেলা প্রশাসন এবং এনডিআরএফ-এর দল ধ্বংসস্তূপ সরানো এবং তল্লাশি অভিযানে গতি এনেছে। দুর্ঘটনার কারণে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন আশেপাশের এলাকা খালি করে দিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে মহারাষ্ট্রে বর্ষা ও বৃষ্টির সময় অবৈধ নির্মাণ এবং পুরনো ভবনে বসবাসকারী ব্যক্তিদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।